১১ দিনের নবজাতক নিয়ে কারাগারে মা
- আপডেট সময় : ০৮:৫৬:১৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
- / ১০৬৯ বার পড়া হয়েছে
১১ দিনের নবজাতক নিয়ে কারাগারে মা
স্টাফ রিপোর্টারঃ
শারীরিক অবস্থার উন্নতি হওয়ায় আটক শাহজাদীকে হাসপাতাল থেকে আদালতের মাধ্যমে আজ রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে খুলনার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালত। আদালতে তাঁর পক্ষে কেউ জামিনের আবেদন না করায় তার ১১ দিন বয়সী কন্যাশিশুকেসহ কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়।
তার পক্ষে কোনো আইনজীবী না থাকায় শুনানিও হয়নি। ফলে ১১ দিন বয়সী কন্যাশিশুকে দেখাশোনা করার কেউ না থাকায় শাহজাদীর সঙ্গে তাঁকেও খুলনা জেলা কারাগারে নিয়ে যায় পুলিশ। মায়ের সঙ্গে শিশুকে কারাগারে যেতে দেখে আদালতে উপস্থিত অনেককেই চোখ মুছতে দেখা যায়।
ঘটনার বিবরণে জানাযায়, বাগেরহাটের রামপালের বাসিন্দা সিরাজুল ইসলাম ও ফকিরহাটের মেয়ে শাহজাদীর সংসারে চার কন্যাশিশু রয়েছে। আবারও অন্তঃসত্ত্বা হন শাহজাদী। অনাগত সন্তান যেন ছেলে হয়–স্বামী ও তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে প্রত্যাশার চাপ ছিল। কন্যা হলে বিবাহ বিচ্ছেদের হুমকি দিয়েছিলেন স্বামী। এমন অবস্থায় গত ১১ সেপ্টেম্বর রাতে সিজারিয়ানের মাধ্যমে ফুটফুটে কন্যাসন্তান জন্ম দেন শাহজাদী। সংবাদ শুনেই হাসপাতাল ত্যাগ করেন সিরাজুল। পরের দিনগুলোতে তিনি আর হাসপাতালে আসেননি, পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগও রাখেননি।
নানামুখী চাপে দিশেহারা শাহজাদী ১৫ সেপ্টেম্বর দুপুরে একই হাসপাতালে জন্ম নেওয়া আরেক নারীর ছেলেসন্তান চুরি করেন। সিসি ক্যামেরা ফুটেজ ও পুলিশের তৎপরতায় ওইদিন সন্ধ্যায় ছেলে নবজাতক উদ্ধার করা হয়। আটক করা হয় শাহজাদীর মা নার্গিস বেগমকে। এ ঘটনায় শাহজাদী ও তাঁর মাকে আসামি করে মানবপাচার আইনে মামলা করেন চুরি যাওয়া শিশুর বাবা মির্জা সুমন। ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে নার্গিস বেগমকে কারাগারে পাঠানো হয়। গত ছয় দিন ধরে তিনি কারাগারে। আর শাহজাদী হাসপাতালের একটি কক্ষে পুলিশ প্রহরায় চিকিৎসাধীন ছিলেন।
হাসপাতালের ব্যবস্থাপক এনামুল হক জানান, রোববার ছাড়পত্রের দিনও শিশুর বাবা ও মামা হাসপাতালে আসেননি। দুসম্পর্কের এক ভাই শাহজাদীর বিল পরিশোধ করেছেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সদর থানা পুলিশের এসআই শাহীন কবির জানান, আসামি সুস্থ হওয়ায় আইন মেনে তাঁকে আদালতে তোলা হয়।
খুলনা মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে কর্মরত প্রসিকিউশন বিভাগের এসআই বোধন চন্দ্র বিশ্বাস (জিআরও-সদর) জানান, আদালতে শাহজাদীর পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না। কেউ জামিন আবেদনও করেননি। আদালত আসামিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। নবজাতকের বিষয়টি পৃথকভাবে কেউ আদালতকে উত্থাপন করেনি। প্রথা অনুযায়ী মায়ের সঙ্গেই তাকে থাকতে দেওয়া হয়েছে।