ওয়াহাব রিয়াজের করা ফুললেন্থের ডেলিভারিতে জিম্বাবুয়ের শেষ ব্যাটসম্যান ব্লেসিং মুজরাবানি সরাসরি বোল্ড হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নিশ্চিতভাবেই স্বস্তির একটা বাতাস বয়ে গেছে পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর আজমের শরীরে। কেননা ব্রেন্ডন টেলর ও ওয়েসলে মাধভেরের ব্যাটিংয়ে পাকিস্তানকে ভয়ই পাইয়ে দিয়েছিল জিম্বাবুয়ে।
বিশ্বের তৃতীয় দেশ হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ফিরিয়ে প্রথম ম্যাচটিতেই হারতে বসেছিল পাকিস্তান। টেলর ও মাধভেরের জুটিতে মনে হচ্ছিল ২৮২ রানের লক্ষ্য তাড়া করে ফেলবে জিম্বাবুয়ে। কিন্তু দলীয় ২৩৪ রানে মাধভের আউট হলে মাত্র ২১ রানের মধ্যে শেষের ছয় উইকেট হারিয়ে ফেলে সফরকারীরা। যার ফলে পাকিস্তান পায় ২৬ রানের জয়।
পাকিস্তানিদের মনে ভয় জাগানোর কাজটা যদি করে থাকেন টেলর ও মাধভের, তাহলে প্রশান্তি এনে দেয়ার কাজটা করেছেন দলের দুই পেসার শাহিন শাহ আফ্রিদি ও ওয়াহাব রিয়াজ। ক্যারিয়ারে দ্বিতীয়বারের মতো নিয়েছেন ৫ উইকেট নিয়েছেন আফ্রিদি, ওয়াহাবের শিকার ৪টি। শেষের পাঁচ ওভারে এ দুজনই নিয়েছেন জিম্বাবুয়ে ৬টি উইকেট।
শাহিন-ওয়াহাবের তোপে বৃথাই গেছে টেলরের ক্যারিয়ারের ১১তম সেঞ্চুরি। মাধভেরের সঙ্গে পঞ্চম উইকেটে ১১৯ রানের জুটি গড়ার মাধ্যমে ম্যাচটি প্রায় কাছাকাছি নিয়ে যান টেলর। কিন্তু শেষ পাঁচ ওভারে যখন ৪৮ রানের প্রয়োজন, তখন সাজঘরে ফিরে যান ৭ চারের মারে ৬১ বলে ৫৫ রান করা মাধভের।
পরের ওভারেই আফ্রিদির বলে বড় শট খেলতে গিয়ে ওয়াহাবের হাতে ক্যাচ দেন সেঞ্চুরিয়ান টেলর। আউট হওয়ার আগে ১১৬ বলের ইনিংসে ১১ চার ও ৩ ছয়ের ১১২ রান করেন জিম্বাবুয়ের অভিজ্ঞতম এ ক্রিকেটার। তার বিদায়ের পর আর ঘুরে দাড়াতে পারেনি জিম্বাবুয়ে, অলআউট হয়ে গেছে ২৫৫ রানে, ম্যাচ হেরেছে ২৬ রানে।
শুরুর দিকের ব্যাটসম্যানরা নিজেদের নামের প্রতি সুবিচার করতে ব্যর্থ হলেও, শেষদিকের ঝড়ে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ২৮১ রান করে ফেলে পাকিস্তান। ফিফটি করেছেন বাঁহাতি ওপেনার ইমাম উল হক ও বাঁহাতি স্পিনিং অলরাউন্ডার হারিস সোহেল।
টস হেরে ব্যাট করতে নেমে উদ্বোধনী জুটিতে ৪৭ রান যোগ করেন আবিদ আলি ও ইমাম উল হক। আবিদ সাজঘরে ফেরেন ৩০ বলে ২১ রান করে। পরে উইকেটে থিতু হয়েও ইনিংস বড় করতে পারার অপরাধে দোষী হন অধিনায়ক বাবর আজম (১৮ বলে ১৯) ও উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ রিজওয়ান (২৯ বলে ১৪)।
এরই মাঝে ব্যক্তিগত অর্ধশত হাঁকিয়ে ৬ চারের মারে ৭৫ বলে ৫৮ রান করে হাস্যকর এক রানআউটের শিকার হন ইমাম। দলীয় ২০০ রান পূরণ করে সাজঘরের পথ ধরেন ইনিংসের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হারিস সোহেলও। তার ব্যাট থেকে আসে ৬ চার ও ২ ছয়ে ৮২ বলে ৭১ রান।
শেষদিকে পাকিস্তানকে ২৮১ রান পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার কৃতিত্ব ইমাদ ওয়াসিমের। অপরাজিত ইনিংসে তিনি করেন ২৬ বলে ৩৪ রান, যেখানে ছিল এক চার ও দুই ছয়ের মার। এছাড়া ফাহিম আশরাফ করেন ১৬ বলে ২৩ রান। জিম্বাবুয়ের সামনে জয়ের জন্য লক্ষ্য দাঁড়ায় ২৮২ রান।
জিম্বাবুয়ের পক্ষে বল হাতে ২টি করে উইকেট নেন টেন্ডাই চিসোরো এবং ব্লেসিং মুজরাবানি।