সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুরে যৌতুকের দাবিতে মায়া খাতুন নামে এক গৃহবধূকে হত্যার পর মুখে কীটনাশক ঢেলে আত্মহত্যা বলে প্রচার করার অভিযোগ উঠেছে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে। গত রোববার রাতে শাহজাদপুর পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাড়াবিল উত্তরপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
এত বড় ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবদুর রউফ এবং ৭, ৮ ও ৯ নম্বর মহিলা ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর জ্যোৎস্না খাতুনের উপস্থিতিতে গ্রামপ্রধানদের সালিশ-বৈঠকে ৩ লাখ টাকায় আপস-মীমাংসা করা হয়। নিহত মায়া ওই গ্রামের নির্মাণশ্রমিক সাদ্দাম হোসেনের স্ত্রী।
গৃহবধূ মায়ার চাচা শফিকুল ইসলাম, খালু সেলিম মোল্লা ও দাদি আমেনা বেগম বলেন, প্রেম করে ১০ মাস আগে বাড়াবিল উত্তরপাড়া গ্রামের রোস্তাম প্রামাণিকের ছেলে নির্মাণশ্রমিক সাদ্দাম পাশের নরিনা ইউপির কাংলাকান্দি গ্রামের সৌদি প্রবাসী রফিকুল ইসলামের মেয়ে মায়ার খাতুনকে বিয়ে করেন।
ওটি বয় থেকে ডাক্তার, অভিনব প্রতারণার ফাঁদ
বিয়ের সময় ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা যৌতুক দিতে সম্মত হয় মায়ার পরিবার। নগদ ৩০ হাজার টাকা ও ৬০ হাজার টাকার স্বর্ণালংকার দেয়া হয়। কাবিন করা হয় ৫ লাখ টাকার। পরে মায়ার মা ১ লক্ষ্য ১০ হাজার টাকার ফার্নিচার, সাদ্দামের বাড়িতে একটি টিউবওয়েল ও টয়লেট নির্মাণ করে দেন।
বাকি যে টাকা টাকা ছিল সে গরু বিক্রি করে দেবে বলে জানায়। তারপরও তারা মায়াকে নির্যাতন করে হত্যা করে। তারা আরো বলেন, সংজ্ঞাহীন অবস্থায় মায়াকে সিরাজগঞ্জ বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
সাদ্দামের চাচি রেহানা বেগমের দাবি, মায়া তার শাশুড়ি ও স্বামীর ওপর অভিমান করে কীটনাশক পান করে আত্মহত্যা করেছে।
উক্ত ঘটনার আপসের বিষয়ে শাহজাদপুর পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবদুর রউফ ও ৩ নম্বর মহিলা ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর জ্যোৎস্না খাতুন বলেন, আমরা সালিশ বৈঠকে উপস্থিত ছিলাম ঠিকই কিন্তু মীমাংসার জন্য কাউকে চাপ প্রয়োগ করিনি। দুপক্ষের সম্মতিতে গ্রামপ্রধানরা আপস করেছেন।
ঘটনার খবর পেয়ে সিরাজগঞ্জ সদর থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সিরাজগঞ্জ বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।
সিরাজগঞ্জ সদর থানার ওসি বাহাউদ্দিন ফারুকী বলেন, আমরা শুধু লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন ও ময়নাতদন্তের ব্যবস্থা করেছি। মামলা করতে চাইলে শাহজাদপুর থানায় করতে হবে। শাহজাদপুর থানার ওসি শাহিদ মাহমুদ খান জানান, এ ঘটনায় এখনো কেউ মামলা করেনি। মীমাংসার বিষয়ে আমরা অবগত নই।