হাতীবান্ধা উপজেলা প্রতিনিধি, হাবিবুর রহমান (হানিফ): লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় ৮ম শ্রেনীতে পড়ুয়া সমাপ্তি খাতুন (১৪) নামে এক শিক্ষার্থীকে জোর পূর্বক তুলে নিয়ে গিয়ে মৌলভী দিয়ে বিয়ে করার অভিযোগ পাওয়া গেছে বখাটে আশিকের বিরুদ্ধে।এ ঘটনায় গত ০৩ সেপ্টেম্বর অশিকসহ ৬জনের নাম উল্লেখ করে হাতীবান্ধা একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন ওই শিক্ষার্থীর বাবা আশরাফ আলী।
অভিযুক্তরা হলেন, উপজেলার বড়খাতা দোলাপাড়া গ্রামের মৃত সাইবুদ্দি কবিরাজের ছেলে হানিফা, হানিফার ছেলে মাসুদ রানা ও আশিক, হানিফার স্ত্রী লাকি বেগম, উমর আলীর স্ত্রী জোসনা বেগম, ও রেজাউল করিমের স্ত্রী আলিমা বেগম। সমাপ্তি খাতুন উপজেলার বড়খাতা পূর্ব সাড়ডুবি পাইকারটারী গ্রামের আশরাফ আলীর মেয়ে। সে স্থানীয় বিদ্যালয়ে ৮ম শ্রেনীতে পড়েন। জানাগেছে, আশরাফ আলীর বড় কন্যার সাথে অভিযুক্ত মাসুদ রানার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে বিভিন্নভাবে শ্বশুড়কে হয়রানী করে আসছেন জামাই মাসুদ রানা।
এমন অবস্থায় ১৯ আগস্ট নাবালিকা ৮ম শ্রেনীতে পড়ুয়া সমাপ্তি খাতুনকে অভিযুক্তরা নিজ বাড়ি থেকে জোর পূর্বক তুলে নিয়ে যায়। এরপর অভিযুক্তরা মৌলভী দিয়ে আশিকের সাথে সমাপ্তির বিয়ে দেয়। বিয়ের পর থেকেই সমাপ্তির উপর চলে নির্যাতন। এমতাবস্থায় আবারো গত ২৮আগস্ট সমাপ্তিকে নির্যাতন শুরু করে আশিক ও তার পরিবারের লোকজন। পরে সমাপ্তির পরিবারের লোকজন খবর পেয়ে থানা পুলিশের সহযোগীতায় সমাপ্তিকে উদ্ধার করে হাতীবান্ধা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে তিনদিন চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতে যায় সমাপ্তি।
এ বিষয়ে ভ‚ক্তভোগী সমাপ্তি বলেন, আমি যদি আশিককে বিয়ে না করি, তাহলে আমার দুলাভাই মাসুদ রানা আমার বোনকে তালাক দিবে। তাই আমি বাধ্য হয়ে বিয়ে করি। আমাকে নানা রকম অত্যাচার করা হয়। এ বিষয়ে সমাপ্তির বাবা আশরাফ আলী বলেন, জামাই মাসুদ জোর পূর্বক আমার নাবালিকা মেয়ের সাথে তার ভাইয়ের বিয়ে দিয়েছেন। শুধু তাই নয় বিয়ের পর আমার দুই মেয়েকে নির্মমভাবে মারধর করা হয়। থানায় অভিযোগ করেছি। আমি এর সঠিক বিচার চাই। এ বিষয়ে অভিযুক্ত মাসুদ রানা বলেন, সমাপ্তিকে অপহরণ করা হয় নি। তারা আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করছে। এ বিষয়ে হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্ত নাঈম হাসান নয়ন বলেন, আহত সমাপ্তিকে চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়েছে। এছাড়া সে সুস্থ্য হয়ে বাড়িতে চলে গেছে।
এ বিষয়ে হাতীবান্ধা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এরশাদুল আলম বলেন, অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।