গাজায় যুদ্ধবিরতি না হলে বন্দীদের মুক্তি দেওয়া হবে না-হামাস
আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
ইসরায়েল যুদ্ধবিরতিতে রাজি না হলে বন্দীদের মুক্তি দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছে হামাস। রাশিয়ার সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে জানান হয়েছে এ খবর।
আজ শুক্রবার (২৭ অক্টোবর) আবু হামিদ নামে হামাসের এক নেতাকে উদ্ধৃত প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের নেতৃত্বাধীন হামলার সময় বিভিন্ন ফিলিস্তিনি দল, যাদেরকে গাজায় বন্দী করে নিয়ে গিয়েছিল তাদের সবাইকে খুঁজে বের করার জন্যও গোষ্ঠীটির কিছুটা সময় প্রয়োজন।
ইসরায়েলের সঙ্গে চলমান সংঘাতের মধ্যেই রাশিয়া গেছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের একটি প্রতিনিধি দল। গাজায় বন্দী রুশ নাগরিকসহ বিদেশি জিম্মিদের মুক্তির বিষয়ে আলোচনা করতেই বৃহস্পতিবার মস্কোতে হামাসের প্রতিনিধি দলটি পা রাখে বলে জানায় আরব নিউজ। এই প্রতিনিধি দলের সদস্য আবু হামিদ বলেছেন, যুদ্ধের প্রথম দিন থেকেই বেসামরিক বন্দীদের মুক্তি দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে হামাস।
তিনি বলেন, শত শত নাগরিক এবং ফিলিস্তিনের বিভিন্ন উপদলের কয়েক ডজন যোদ্ধা ১৯৪৮ সালে দখল করা অঞ্চলগুলোতে প্রবেশ করে কয়েক ডজন লোককে বন্দী করেছিল। তাদের বেশির ভাগই বেসামরিক। গাজা উপত্যকায় তাদের খুঁজে বের করার জন্য আমাদের সময় দরকার। তারপর তাদের ছেড়ে দেওয়া হবে।
আবু হামিদ আরও জানান, গাজায় ইসরায়েলের বিমান হামলায় বন্দীদের মধ্যে ৫০ জন নিহত হয়েছে।
মস্কোর সাংবাদিক ইউলিয়া শাপোভালোভা বলেন, হামাস প্রতিনিধিদলের এই সফরকে মূলত রাশিয়ার পক্ষ থেকে একটি বার্তা প্রচারের প্রচেষ্টা হিসেবে দেখা হচ্ছে যে, রাশিয়া এই ঘটনার বাইরে নেই। মস্কো দেখাতে চায় যে, একটি গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক শক্তি হিসেবে এখানেও রাশিয়া আছে, যারা হামাসের প্রতিনিধিদের সঙ্গে দেখা করার মাধ্যমে সংঘাতের মধ্যস্থতার চেষ্টা করে।
তিনি আরও বলেন, রাশিয়ান, ইরানি এবং হামাস কর্মকর্তাদের মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠক হামাসের হাতে বন্দী তিন রুশ পাসপোর্টধারীকে মুক্তি দেওয়ার পথ সুগম করবে বলে আশা করা যাচ্ছে। তবে, বন্দীদের মুক্ত করার সম্ভাবনা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে হামাস কোনো জবাব দেয়নি বলে জানিয়েছেন শাপোভালোভা।
এদিকে, হামাসের সামরিক শাখা আল-কাসাম ব্রিগেড দাবি করেছে, তাঁদের কাছে বন্দী থাকা অন্তত ৫০ জন ইসরায়েলি নিজ দেশেরই বোমা হামলায় মারা গেছে। গত বৃহস্পতিবার রাতে একটি টেলিগ্রাম চ্যানেলে পোস্ট করা বিবৃতিতে আল-কাসাম ব্রিগেড বলে, ধারণা করা হচ্ছে, ইহুদিবাদী হামলা ও গণহত্যার ফলে গাজা উপত্যকায় নিহত ইহুদি বন্দীর সংখ্যা প্রায় ৫০ ছুঁয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে প্রবেশ করে ১ হাজার ৪শ জনকে হত্যার পাশাপাশি দুই শতাধিক মানুষকে বন্দী করে। এর পর থেকেই ধারাবাহিকভাবে গাজা শহরের বোমাবর্ষণ করছে ইসরায়েল। এই হামলায় ৭ হাজারের বেশি সাধারণ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। নিহত এসব ফিলিস্তিনির বেশির ভাগই নারী ও শিশু।