সিলেটের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে তিন ঘণ্টা ১০ মিনিট ৪০ সেকেন্ড অবস্থানকালেই পুলিশি নির্যাতনে মৃত্যু হয় রায়হান উদ্দিন আহমদের। এসএমপি গঠিত তদন্ত কমিটির প্রাথমিক তদন্তে এমন তথ্য বেরিয়ে এসেছে বলে জানিয়েছেন তদন্ত কমিটির প্রধান উপকমিশনার আজবাহার আলী শেখ।
পুলিশ ফাঁড়ির পাশে এসপির কার্যালয়ের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে বাধ্য হয়েই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেন ছয় পুলিশ। এছাড়াও তাদের বর্ণনার সঙ্গে প্রত্যক্ষদর্শীদের তথ্য মিলে যাওয়ায় প্রাথমিকভাবে নির্যাতনের বিষয়ে নিশ্চিত হয় তদন্ত কমিটি।
আজবাহার আলী শেখ বলেন, সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, শনিবার রাত ৩টা ৯ মিনিট ২০ সেকেন্ডে দুটি সিএনজি এসে থামে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির সামনে। পরে ওই সিএনজি থেকে তিনজন পুলিশের সঙ্গে হাতকড়া পরা অবস্থায় নামেন রায়হান। এসময় স্বাভাবিকভাবেই হেঁটে ফাঁড়ির ভেতরে নেয়া হয় রায়হানকে। পরদিন রোববার ভোর ৬টা ২০ মিনিটে দুই পুলিশের ঘাড়ে ভর দিয়ে রায়হানকে মুমূর্ষু অবস্থায় একটি সিএনজিতে তোলা হয়। এরপরই সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মরদেহের সন্ধান পায় পরিবার।
শনিবার রাত ২টা ৩৮ মিনিটে কাষ্টঘর এলাকা থেকে রায়হানকে আটক করা হয় বলে জানান উপকমিশনার আজবাহার আলী শেখ।তিনি জানান, ওই এলাকারও সিসিটিভি ফুটেজ মিলেছে। সেখানে রায়হানকে গণপিটুনি দেয়ার কোনো আলামত পাওয়া যায়নি। সিসিটিভির ফুটেজ, পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষী এবং পারিপার্শ্বিক অবস্থা পর্যবেক্ষণে এটা প্রাথমিকভাবে প্রমাণ হয়েছে যে, বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে জখম হয়েছেন রায়হান। পরে তাকে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
স্বজনদের অভিযোগ, ১০ হাজার টাকা না পেয়ে রায়হানকে পুলিশি হেফাজতে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। আর পুলিশ দাবি করেছে, নগরীর ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাষ্টঘর এলাকায় ছিনতাইয়ের সময় গণপিটুনিতে নিহত হয়েছেন রায়হান। স্থানীয় কাউন্সিলর বলছেন, যে এলাকায় গণপিটুনির কথা বলা হচ্ছে সেখানকার সিসিটিভি ফুটেজে এ ধরনের কোনোকিছু দেখা যায়নি।
এ ঘটনায় রোববার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে রায়হানের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার তান্নী বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় কোনো আসামির নাম উল্লেখ না করে অজ্ঞাত রাখা হয়েছে।