ষ্টাফ রিপোর্টারঃ দুর্নীতির আখড়া ভালুকা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরিদর্শন করেছেন স্বাস্থ্য সচিব। দুর্নীতির আখড়া ভালুকা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ সোহেলী শারমিনের দুর্নীতি, অনিয়মসহ অসংখ্য অভিযোগে বিভিন্ন গণমাধ্যমে একের পর এক সংবাদ প্রকাশিত হয়। কিন্তু ময়মনসিংহের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় টনক নড়েনি স্বাস্থ্য কর্মকর্তার। ফলে শুরু হয় নিন্দার ঝড়।
অবশেষে ময়মনসিংহে ঝটিকা সফরে দুর্নীতির আখড়া এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরিদর্শন করেছেন স্বাস্থ্য সচিব মোঃ আব্দুল মান্নান। বুধবার (৪ নবেম্বর) সকাল ১১ টার দিকে পরিদর্শন করেন তিনি। এর আগে উপজেলার হবিরবাড়ী ইউনিয়নের করোনা সেচ্ছাসেবকদের আয়োজিত এক আলোচনা সভায় অংশগ্রহণ করেন। পরে ময়মনসিংহের বিভাগীয় স্বাস্থ্য সমাবেশে যোগ দেন স্বাস্থ্য সচিব।
কারাগারে বসেই ইনকাম ৮০ লাখ টাকা
এদিকে মঙ্গলবার (৩ নবেম্বর) থেকেই সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের মাঝে বহু প্রত্যাশা শুরু হয়। স্বাস্থ্য সচিবের পরিদর্শনকে ঘিরে উপজেলায় সচেতন মহলসহ, দোকানপাট, চা স্টলেও চলে আলোচনা। এবার হয়তো সকলের চেনা দুর্নীতিবাজ স্বাস্থ্য কর্মকর্তার কিছু হবে।
তবে কথায় আছে ‘ঘরে চুরি করার আগে শরীরে খাটি সরিষার তৈল মাখতে হয়’। স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ঠিক এমন কাজই করেছেন। শরীরে তৈল না মেখে কৌশলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সাজিয়েছেন বর্ণিল সাজে। এছাড়া ৫০ শয্যার এই হাসপাতালে তখন মাত্র কয়েকজন রোগী ভর্তি থাকলেও কৌশলে তিনি আগের দিনই সকল বেড পরিপূর্ণ করেছেন। আর ফ্লোরগুলো করা হয়েছে চকচকে-তকতকে। স্বাস্থ্য সচিব যেনো দেখলেই বুঝতে পারেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ সোহেলী শারমিন রোগীদের সর্বোচ্চ সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু বাস্তবে সবাই জানেন এই স্বাস্থ্য কর্মকর্তার ‘উপরে ঠিকঠাক, ভিতরে সদরঘাট’। কিন্তু উপরে ফিটফাটের বিষয়টি ময়মনসিংহের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানলেও সদরঘাটের বিষয়টি রহস্যজনক কারনে আজো জানেননা।
স্বাস্থ্য সচিব মোঃ আব্দুল মান্নান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরিদর্শনের বিষয়টি ডাঃ সোহেলী শারমিন গণমাধ্যম কর্মীদের জানানোর কথা থাকলেও রহস্যজনক কারনে তিনি কাউকে জানায়নি। তখন গণমাধ্যম কর্মীরা থাকলে হয়তো তার দুর্নীতির বিষয়টি বার বার আলোচনায় চলে আসতে পারে। আর তাই ভয়ে ‘শাক দিয়ে মাছ ডাকার চেষ্টা করেছেন ডাঃ সোহেলী’
উল্লেখ্য, উপজেলা স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা কমিটি তার বিরুদ্ধে সরকারি বরাদ্দের দেড় কোটি টাকা অনিয়ম করার অভিযোগ তুলেছেন। এই অনিয়ম খতিয়ে দেখতে গত জুলাই মাসে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কিন্তু আজো তদন্ত কমিটি তার কাছ থেকে দেড় কোটি টাকার হিসাব নিতে পারেনি। তার খুটিঁর জোড় নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
এছাড়া স্বাস্থ্য কর্মকর্তা নিজের পছন্দের ঠিকাদার নিয়োগ করে নিম্নমানের খাবার সরবরাহ করে কমিশন খায়, হাসপাতালের বাবুর্চিকে নিজের বাসায় নিজের বিভিন্ন কাজে ব্যবহারও করেন ডা. সোহেলী। এদিকে স্থানীয় প্রশাসন তার নানা অনিয়মের অভিযোগ খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিলেও জেলা সিভিল সার্জন এখনো রহস্যজনক কারণে চুপ রয়েছেন।দুর্নীতির আখড়া ভালুকা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরিদর্শন করেছেন স্বাস্থ্য সচিব।
তবে স্বাস্থ্য সচিব মোঃ আব্দুল মান্নান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরিদর্শনের মাধ্যমে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ সোহেলী শারমিনের সকল অনিয়ম, দুর্নীতি তদন্ত করে শাস্তি নিশ্চিত করাসহ প্রত্যাহার করা হবে এমনটাই প্রত্যাশা সকলের।