রাজশাহী নগরীর নারী পত্রিকা বিক্রেতা দিল আফরোজ খুকি । ১১ বছর আগের ভিডিও ভাইরাল হয়ে আলোচনায় আসেন তিনি। ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে মূলত একজন নারীর সংগ্রামী জীবনের গল্প উঠে এসেছিল। খুকির সেই গল্প নাড়া দিয়েছে নেটিজেনদের। খুকির ইচ্ছাপূরণ করল ছাত্রলীগ ।
সংগ্রামী দিল আফরোজ খুকির ভিডিও চোখ এড়ায়নি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ এর সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যেরও। লেখক কথা বলে জানতে পারেন, খুকির তেমন কোনো চাহিদা নেই। তার বাড়ি আছে। এরপরও লেখক ভট্টাচার্য জানতে চান আর কিছু প্রয়োজন কিনা। খুকি তাকে বলেন, একটি মোবাইল ও একটি টেলিভিশনের কথা।
বায়ার বাংলাদেশঃ স্বপ্নপূরণের নেপথ্য নায়ক
এরপর দিল আফরোজ খুকির ইচ্ছাপূরণের জন্য একটি সনি টেলিভিশন ও একটি মোবাইল সেট রাজশাহী ছাত্রলীগের কাছে পাঠিয়ে দেন লেখক ভট্টাচার্য। ৯ নভেম্বর খুকির শিরোইলের বাড়িতে গিয়ে টেলিভিশন ও মোবাইল সেট তুলে দেয় রাজশাহী ছাত্রলীগ।
রাজশাহী শহরের একমাত্র নারী পত্রিকা বিক্রেতা তিনি। ৪০ বছর ধরে পত্রিকা বেচে জীবিকা নির্বাহ করছেন। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ১১ বছর আগের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। খুকির ভাইরাল ভিডিও দেখে অনেকেই কাঁদেন, ফেসবুকে শেয়ার দেন কিংবা জানতে চান খুকির বর্তমান অবস্থা।
কিশোরী বয়সে ১৯৮০ সালে ৭০ বছরের এক বৃদ্ধের সঙ্গে খুকির বিয়ে হয়েছিল। মাস যেতে না যেতেই মারা যান স্বামী। এরপর নিজ বাড়ি কিংবা স্বজনদের কাছেও ঠাঁই হয়নি খুকির।
ভাইদের আপত্তিতে বাবার বাড়িতে তার জায়গা হয়নি। এরপর থেকেই কিছুটা মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন তিনি।
প্রতিবেশীরা বলেন, খুকি কিছুটা মানসিক ভারসাম্যহীন। বিয়ে হয় কিশোরী বয়সে। এক মাসের মাথায় স্বামী মারা যান। এরপর থেকে তিনি একগুঁয়ে স্বভাবের হয়ে ওঠেন। বাবার কাছ থেকে পাওয়া জমিতে বাড়ি তৈরি করে একাই থাকেন। কারো কাছ থেকে কোনো সহায়তা নেন না। পত্রিকা বিক্রি করেই সংসার চালান।
জানা গেছে, এত দিনে ব্যাংকে জমা হয়েছে ১ লাখ ৫ হাজার টাকা। সেই জমানো অর্থ আর পৈতৃকভাবে পাওয়া কিছু সম্পত্তিই তার জীবনের শেষ সম্বল। যা দিয়ে যেতে চান কোনো স্কুলের নামে। সেই দানের টাকা থেকে গরিব ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের দেয়া হবে বৃত্তি।
১৯৬০ সালে কুষ্টিয়ায় জন্ম নেয়া খুকি পড়াশোনা করেছেন মোহিনী মোহন বিদ্যাপীঠ এবং টাঙ্গাইলের ভারতেশ্বরী হোমসে। মৃত্যুর পরও ঠাঁই পেতে চান জন্মস্থান কুষ্টিয়ায়।