জেলা প্রতিনিধি:ঝিনাইদহের শৈলকুপা পৌরসভা নির্বাচন ঘিরে দুই মেয়র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন। আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আশরাফুল আজম ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী (স্বতন্ত্র) মেয়র প্রাথী তৈয়বুর রহমান খানের সমর্থকদের মধ্যে পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের খুললে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের পেছনে আজ শনিবার সকাল ১০টার পর এ সংঘর্ষ ঘটে।
এদিকে সংঘর্ষের খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে ছুটে যান র্যাব, পুলিশ ও বিজিবির সদস্যরা। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গ্রাম্য অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে উভয়পক্ষ সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। ভোটকেন্দ্রে আসতে বাধা দেওয়ার কারণে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি করছেন অনেকে।
ঝিনাইদহ সদর সার্কেলের পুলিশ পরিদর্শক ইসমাইল হোসেন জানান, দুই মেয়র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
তবে এই সংঘর্ষের কারণে ভোটগ্রহণে কোনো প্রভাব পড়েনি। দুপুর ১২টার দিকে বিভিন্ন কেন্দ্র ঘুরে দেখা যায় ভোটারদের লম্বা লাইন। ভোটকেন্দ্রের আশপাশের এলাকায় উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। কয়েকটি কেন্দ্রের আশপাশের এলাকায় কিছুটা উত্তেজনা লক্ষ্য করা গেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তৎপর থাকায় বড় ধরনের সংঘাতের কোনো ঘটনা এখন পর্যন্ত ঘটেনি।
এর আগে গত বুধবার শৈলকুপা পৌর নির্বাচন ঘিরে সহিংসতায় দুজন নিহত হয়েছেন। প্রথমে রাত ৮টার দিকে দুই কাউন্সিলর পদপ্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে এক প্রার্থীর ভাই আওয়ামী লীগনেতা লিয়াকত হোসেন বল্টু নিহত হন। এর পাঁচ ঘণ্টা পর দিবাগত রাত ১টার দিকে প্রতিপক্ষ কাউন্সিলর পদপ্রার্থী মো. আলমগীর খাঁন বাবুর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
শৈলকুপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর আলম জানিয়েছিলেন, বুধবার রাত ৮টার দিকে প্রচারকালে পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কবিরপুর এলাকায় কাউন্সিলর পদপ্রার্থী শওকত হোসেন ও আলমগীর খাঁন বাবুর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ সময় শওকত আলীর ছোট ভাই লিয়াকত আলী বল্টুসহ ছয়জন আহত হন। আহতদের মধ্যে লিয়াকত আলী বল্টুকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়। শৈলকুপা উপজেলার উমেদপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ছিলেন তিনি।
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. তাপস কুমার সরকার জানান, হাসপাতালে আনার আগেই লিয়াকত আলী বল্টুর মৃত্যু হয়েছে। তাঁকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন তিনি।এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার করে শাস্তির দাবি জানান নিহতের স্বজনেরা।
হত্যার ঘটনার পাঁচ ঘণ্টা পর পাশের কুমার নদ থেকে একই ওয়ার্ডের প্রতিপক্ষ কাউন্সিলর পদপ্রার্থী আলমগীর হোসেন খান বাবুর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তাঁর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। তবে কী কারণে এ প্রার্থীর মৃত্যু হয়েছে তা জানাতে পারেনি পুলিশ।
দিকে শৈলকুপা পৌরসভা নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন অফিসার রোকনুজ্জামান এনটিভি অনলাইনকে বলেছিলেন, ‘এ ধরনের ঘটনা ভোটে প্রভাব ফেলতে পারবে না। পৌরসভার ১৫টি ভোটকেন্দ্রে ১৫ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হয়েছে। আশা করছি, শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ শেষ হবে। আর কাউন্সিলর পদপ্রার্থী মারা যাওয়ায় পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ভোট স্থগিত করা হয়েছে।’