সাতক্ষীরা জেলার সাতক্ষীরায় কেরাম জুয়ার সাম্রাজ্য , জেলা পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপ কামনা
অনুসন্ধানী প্রতিবেদন:: পর্ব : ০১
সাতক্ষীরা জেলার প্রায় সর্বত্র চলছে কেরাম বাের্ড নামক জুয়া। উপজেলার প্রায় প্রতিটি বাজারে সন্ধ্যার পর থেকে শুরু হয় এই জুয়া খেলা। রাত যত গভীর হয় টাকার অংকও বাড়তে থাকে। বাহিরে থেকে দেখলে মনে হয় নিছক কেরাম বোর্ড খেলা কিন্তু এই খেলার আড়ালে চলছে রমরমা জুয়া।
শুধু তাই নয়, এই খেলার বিরতির মধ্যে যে চলে নেশার আসর। কেউ কেরাম খেলে আর তাদের সহযোগীরা চা-বিড়ি-সিগারেট নিয়ে সীমাবদ্ধ থাকে না। ইয়াবা, ফেনসিডিল, গাঁজাসহ সব ধরনের মাদকদ্রব্য এইসব জুয়ার স্পটের পাশে হাতের নাগালে থাকে।
একদিকে জুয়া অন্যদিকে নেশা এই দুইয়ে মিলে মিশে একাকার হয়ে যায়। আর এই জুয়ার টাকা যোগাড় করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে এক শ্রেণীর মায়ে টাড়ানো বাপে খ্যাদানো বখাটে যুবক সম্প্রদায়। শহরে দিনের পর দিন চুরি, ছিনতাই, খুন, ধর্ষণ বেড়েই চলেছে।
সরজমিনে দেখা যায়, সাতক্ষীরা সদর উপজেলার কাশেমপুর বেতলা বাইপাস সংলগ্ন অধিকাংশ চায়ের দোকানে কেরাম বোর্ড খেলা হয়। কিন্তু আসলে কি তাই? একটু খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ৮-১০ জন মিলে ৫০০-১০০০ টাকা করে জমা দিয়ে জুয়ার আসর তৈরি করে। চলতে থাকে খেলা। চ্যাম্পিয়ান ও রানার্স আপ ঐ সব টাকা ভাগ করে নেয়। এই রকম খেলার বিজয়ীদের যখন আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ, তখন পরাজিতরা পূণরায় খেলার জন্য টাকা যোগাড় করতে মরিয়া হয়ে উঠে। এবং জড়িয়ে পড়ে অপরাধের সাথে। কেউ তার পরিবারের সদস্যদের অসুস্থতার কথা বলে টাকা ধার করে আনে আবার কেউ চুরি, ছিনতাই।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বেতলা বাইপাস ছাড়াও আগরদাড়ি’র মাছ বাজারের মধ্যে, রাজনগর, কাশেমপুর, মৈত্রপুর, বাকাল, ঝুটিতলা, সরকারি কলেজ মোড়, আলীপুর চেকপোস্ট, ছয়ঘরিয়া, মাধবকাঠি, ঝাউডাঙা সহ অধিকাংশ চায়ের দোকানে কেরাম বোর্ড খেলা হয়। যেটা নিছক কেরাম বোর্ড খেলা নয়, আড়ালে চলছে জুয়ার আসর।
উপজেলার তালা বাজার, তালা বীজ মােড়, খানপুর হাজরাকাটি, জেঠুয়া, মহান্দী, খলিলনগর, মাগুরা সহ উপজেলার প্রায় সকল বাজারে সন্ধ্যার পর হতে শুরাে হয় কেরাম বাের্ড নামক জুয়ার আসর। আর এই আসরের কারনে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সাধারণ দিন মুজুর,খেটে খাওয়া সাধারণ জনগণ সহ স্কুল পড়য়া ছেলেরা। এরা সারা দিন যে টাকা রােজগার করছে তা সব সন্ধ্যার পরে কেরাম বাের্ড নামক জুয়ার আসরে এসে খরচ করে চলে যাচ্ছে।
এ ছাড়া, এই কেরামবাের্ড নামক জুয়ার কারনে তালায় চুরি, ডাকাতি বেড়ে গেছে। সম্প্রতি তালা সদরে অবস্থিত উপজেলা হাসপাতালের কোয়াটারে চুরি হলেও কোন প্রকার সুরহা করতে পারিনি প্রশাসন। গত কিছুদিন আগে তালার প্রবীন সাংবাদিক ফেসবুকে পােষ্ট দেন এই কেরাম বাের্ড নামক জুয়ার বিষয়ে তা হবুহ তুলে ধরা হলাে তালায় কেরামবাের্ড এর মাধ্যমে চলছে রমরমা জুয়ার আসর। প্রতি রাতে বাের্ড মালিকের আয় হচ্ছে ১০ হাজার টাকা। জুয়াড়ীদের যাচছে হাজার হাজার টাকা। জোয়ার টাকা যেগাড় করতে এলাকায় চুরি ছিনতাই চলমান রয়েছে। প্রত্যেক বাজারে প্রকাশ্যে জুয়ার আসর বসছে জনসম্মুখে। রাজনৈতিক গডফাদারদের ছত্রছায়ায় চলছ রমরসা জুয়ার আসর।
এমনিভাবে সাতক্ষীরা জেলার সকল উপজেলার হাট-বাজারে রমরমা জুয়ার আসর চলমান রয়েছে। এখানে অভিযান কবে হবে? এছাড়াও জুয়ার কারনে পারিবারিকভাবে বহু পরিবারের মাঝে অশান্তি বিরাজ করছে। কেরাম বোর্ডের অন্তরালে জুয়ার আসর বন্ধ করাসহ জেলায় সুন্দর পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জন্য সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান পিপিএম (বার) মহোদয় সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অতিদ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেছে সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দসহ স্থানীয় এলাকাবাসী।
আরো দেখুনঃ
চট্টগ্রামে লালাখানে সংঘর্ষ পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, আহত ২০