জেলা প্রতিনিধিঃ
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের সাব অ্যাসিসটেন্ট কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার ডা. পলাশের ভাগ্নে তৌফিক আহম্মেদ অভির (২৭) মৃত্যু হয়েছে। গত মঙ্গলবার ঢাকা মেডকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।
নিহত তৌফিক আহম্মেদ অভি চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার ইমারজেন্সি রোডের মৃত দাউদ আলীর ছেলে। গতকাল বুধবার যোহরের নামাজের পর জানাজা শেষে জান্নাতুল মাওলা কবরস্থানে তৌফিক আহম্মেদ অভির লাশের দাফনকার্য সম্পন্ন করা হয়।
এদিকে, তৌফিক আহম্মেদ অভির পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউ-এর কর্তব্যরত চিকিৎসক ও নার্সদের অবহেলায় তাঁর মৃত্যু হয়েছে।জানা যায়, ঢাকা মগবাজারের একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করতেন তৌফিক আহম্মেদ অভি। গত মাসের ৮ তারিখ বিকেল ৪টার দিকে অফিস থেকে মগবাজারের ভাড়া বাড়িতে ফিরছিলেন অভি।
এসময় হঠাৎ করেই অভি রাস্তার ওপর পড়ে যেয়ে মাথায় গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হন। পথচারীরা তাঁকে উদ্ধার করে সেখানের একটি প্রাইভেট হাসপাতালে ভর্তি করে। খবর পেয়ে অভির সহকর্মীরা পরদিন সকালে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। ওইদিনই তৌফিক আহম্মেদ অভির পরিবারের সদস্যরা ঢাকায় পৌঁছায়।
মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকের পরামর্শে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে ৯ ফেব্রুয়ারি রাতেই তাঁর মাথায় অস্ত্রপচার করা হয়। অস্ত্রপচার শেষে তাঁকে মেডিকেল কলেজ হাসাতালের আইসিইউতে ভর্তি রাখা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত মঙ্গলবার বিকেল চারটার দিকে তৌফিক আহম্মেদ অভির মৃত্যু হয়। গতকাল সকাল সাড়ে সাতটার দিকে নিহতের লাশ চুয়াডাঙ্গায় নিয়ে আসে তাঁর পরিবারের সদস্যরা। এসময় নিহতের স্বজনদের আহাজারিতে ইমারজেন্সি রোডের পরিবেশ ভাড়ি হয়ে ওঠে।
নিহত তৌফিক আহম্মেদ অভির খালা চুয়াডাঙ্গা ডায়াবেটিক হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. নাহিদ ফাতেমা রত্না বলেন, ‘আমি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে যেয়ে দেখি চরম অবহেলায় পড়ে আছে তৌফিক আহম্মেদ অভি।
তাঁর অস্ত্রপচারের স্থান দিয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। অনেকবার সেখানে কর্তব্যরত নার্স ও চিকিৎসকদের বলার পরে একজন ওয়ার্ডবয় এসে অস্ত্রপচারের স্থানে ড্রেসিং করে দেয়। আইসিইউতে গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্রপচার করা রোগীর ড্রেসিং করছে অদক্ষ ওয়ার্ডবয়, এটাকে কর্তৃপক্ষ ও কর্তব্য চিকিৎসক ও নার্সদের দায়িত্ব অবহেলা ছাড়া আর কিছুই বলা যায় না।
যদি তৌফিক আহম্মেদ অভিকে আইসিইউতে পরিপূর্ণ চিকিৎসা ও পরিচর্যা করা হতো, তবে এমনটা হত না। আমার ছেলেকে যতটা পেরেছি, আমরা সেবা করেছি। আমাদের চোখের সামনে আইসিইউতে আরও ১১ জনের মৃত্যু হতে দেখেছি।’