দিনে কয়েকবার কফি খাওয়ার অভ্যাস অনেকেরই আছে। অনেকেই আবার ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে কফি খেয়ে থাকেন। কারণ কফি খেলে খিদে কম লাগে। আর অনেক্ষণ পেট ভরা থাকে। তাইতো আমাদের মধ্যে অনেকেই ওজন কমাতে বার বার কফি খান। অনেক সময় দেখা যায় এভাবে কাপের পর কাপ কফি খাওয়ার পরও অনেকের ওজন ও ভুঁড়ি কিছুতেই কমছে না!
পুষ্টিবিদদের মতে, দুধ-চিনি মেশানো কফি বা ক্রিম মেশানো রাজকীয় কফি -খেলে ফল হবে হিতে বিপরীত। এতে একদিকে যেমন পুষ্টিকর খাবারের অভাবে অপুষ্টি হবে, অন্যদিকে চিনি-ক্রিমের দৌলতে কফির ক্যালোরি বেড়ে ওজনও থেকে যাবে যথাস্থানে।
বরং কফির উপকার পুরোদস্তুর পেতে গেলে আপনাকে খেতে হবে চিনি ছাড়া কালো বা ব্ল্যাক কফি। কফিতে উপস্থিত ক্যাফিন শরীরে ক্যালোরি খরচের হার বাড়াবে। শুয়ে-বসে থাকার সময় কফি খেলে ক্যালোরি খরচ প্রায় ৩-১১ শতাংশ বেড়ে যাবে। আবার কফিপান দ্বিগুণ করে দিলে, ওজন ও চর্বি ঝড়ার হার প্রায় ১৭-২৮ শতাংশ বাড়ে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
ব্যায়ামের আগে কফি খেলে এর ক্যাফিনের কারণেই ব্যায়াম করার ক্ষমতা প্রায় ১০ থেকে ১২ শতাংশ বেড়ে যায়। ব্যায়ামের পরে খেলে ক্লান্ত শরীর চট করে চাঙ্গা হয়। কফি খেলে খিদে ও খাওয়ার ইচ্ছে কমে। এ ব্যাপারে প্রধান ভূমিকা ক্লোরোজিনিক অ্যাসিড নামের ফাইটোকেমিক্যালে। আবার খাবার খাওয়ার পর কফি খেলে ক্লোরোজিনিক অ্যাসিডের দৌলতেই শরীরে গ্লুকোজ তৈরির হার কমে যায়। তার হাত ধরে কমে চর্বি জমার প্রবণতা।
‘হার্ভার্ড স্কুল অফ পাবলিক হেলথ’-এর বিজ্ঞানীদের মতে, কম ক্যালোরির সুষম খাবার ও পরিমিত ব্যায়ামের সঙ্গে দিনে কম করে ৩-৪ কাপ বা ৭২০-৯০০ মিলির মতো কফি খেলে সব দিক বজায় থাকে। পেশিবহুল সুঠাম শরীর চাইলে আরও বেশি খেতে পারেন।
চলুন এবার জেনে নেয়া যাক বাড়তি মেদ ঝরাতে কি নিয়ম মেনে কফি খাবেন-
>> কফি খাবেন ব্যায়ামের আগে। এছাড়া মধ্যপথে ও শেষেও খেতে পারেন।
>> খাবার খাওয়ার পর কফি খান। এর কারণে শরীরে চর্বি কম জমবে।
>> সকাল-দুপুর ও রাতে খাবার খাওয়ার কিছুক্ষণ আগে কফি খান। তাতে কম খাবারে পেট ভরবে।
>> ক্লান্ত লাগলে কফি খান। কাজ করতে পারবেন দ্বিগুণ উৎসাহে। বাড়বে ক্যালোরি খরচও।
তবে বাড়াবাড়ি পর্যায়ে কফি পান করবেন না। কারণ তাতে নানা বিপদের শঙ্কা রয়েছে। অতিরিক্ত ক্যাফিনের প্রভাবে খিটখিটে মেজাজ, উদ্বেগ, বুক ধড়ফড় করতে পারে। বাড়তে পারে গ্যাস-অম্বলও। ঘুম কমে যেতে পারে, দেখা দিতে পারে অনিদ্রা। কাজেই নিয়ম মেনে কফি খান। এর ফলে শরীরের কোনো ক্ষতি ছাড়াই মেদ কমবে তরতরিয়ে।