গাইবান্ধা সদর থানার ওসি প্রত্যাহার না হলে ১০ জুন হরতাল
আতিকুর রহমান আতিক, মফস্বল ডেস্ক থেকে :
গাইবান্ধার জুতা ব্যবসায়ী হাসান আলী হত্যার প্রতিবাদে গাইবান্ধা সদর থানার ওসি মাহাফুজুর রহমানকে অপসারণ ও বেঁধে দেয়া চার দফা দাবি না মানা হলে ১০ জুন হরতালের ডাক দিয়েছে ‘হাসান হত্যার প্রতিবাদী মঞ্চ’।
৩১ মে সোমবার দুপুরে এ নিয়ে জেলা পুলিশ সুপারের মাধ্যমে আইজিপি বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন মঞ্চের নেতারা।
বিভিন্ন রাজনৈতিক দল,সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের অংশগ্রহণে শহরের ১নং রেল গেট থেকে বিশাল মিছিল নিয়ে পুলিশ সুপার কার্যালয় অভিমুখে যাত্রা করে হাসান হত্যার প্রতিবাদ মঞ্চ।
এ সময় পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের প্রধান গেটের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য দেন- হাসান হত্যার প্রতিবাদ মঞ্চের সমন্বয়ক আমিনুল ইসলাম গোলাপ, সিপিবি জেলা সভাপতি ও কেন্দ্রীয় প্রেসিডিয়াম সদস্য মিহির ঘোষ।
স্মারকলিপি পাঠ করেন জেলা বার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা জাসদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম বাবু।
পরে আমিনুল ইসলাম গোলাপের নেতৃত্বে জেলা জাসদের সভাপতি গোলাম মারুফ মনা, সিপিবির সভাপতি মিহির ঘোষ ও সিরাজুল ইসলাম বাবু গাইবান্ধার পুলিশ সুপার তৌহিদুল ইসলামের সাথে সাক্ষাৎ করে দাবি সংবলিত স্মারকলিপি হাতে তুলে দেন।
উল্লেখ্য, এ বছরের গত ৫ মার্চ জুতা ব্যবসায়ী হাসান আলীকে অপহরণ করে গাইবান্ধা জেলা আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক মাসুদ রানা। এরপর তাকে উদ্ধারের দাবিতে হাসানের স্ত্রী বিথী বেগম থানায় অভিযোগ করলে মাসুদের বাড়ি থেকে উদ্ধারের পর অপহৃত ব্যবসায়ী হাসান আলীকে আবারও অপহরণকারী মাসুদের জিম্মায় দেয় পুলিশ। টানা এক মাস মাসুদের বাড়িতে আটক রাখার পর গত ১০ এপ্রিল মাসুদের বাড়ির টয়লেট থেকে ব্যবসায়ী হাসান আলীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।ওই দিনই মাসুদকে আটক করে পুলিশ। পরদিন দলীয় পদ থেকে মাসুদকে অব্যাহতি দেওয়া হয়
মৃত্যুর আগে মোবাইল থেকে ক্ষুদেবার্তায় হাসান আলী স্বজনদের জানান মাসুদ রানা তাকে আটকে রেখে নির্যাতন করে এবং থানায় পুলিশের উপস্থিতিতে তার কাছ থেকে মিথ্যা অঙ্গীকার নেয়।
।
এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী বিথী বেগম বাদী হয়ে মাসুদ রানা, রুমেন হক ও খলিলুর রহমান বাবুকে আসামি করে সদর থানার দুই পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে দায়িত্বহীনতার অভিযোগ এনে মামলা করেন। ওই মামলায় মাসুদ রানাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে চার দিনের রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানো হয়।
ঘটনার পরপরই হাসান আলী হত্যার বিচার দাবিতে ফুঁসে ওঠে গাইবান্ধার সর্বস্তরের মানুষ। মানববন্ধন, বিক্ষোভ, স্মারকলিপিসহ বিভিন্ন কর্মসূচি অব্যাহত রাখে রাজনীতিক, ব্যবসায়ী ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের কর্মীরা। গঠন করা হয় হাসান হত্যা প্রতিবাদ মঞ্চ। এ মঞ্চের উদ্যোগে ব্যবসায়ী হাসান আলী হত্যার বিচার ও দায়িত্বে অবহেলার জন্য সদর থানার ওসি মাহাফুজুর রহমানকে অপসারণ ও ৪ দফা দাবিতে আন্দোলন চলমান রয়েছে।