ইউএনও-ওসির বিরুদ্ধে মামলা পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ। বরিশাল সদর উপজেলা পরিষদ চত্বরে ১৮ আগস্ট রাতের ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুনিবুর রহমান ও কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুল ইসলাম, উপপরিদর্শক (এসআই) শাহ জালাল মল্লিক ও পাঁচ আনসার সদস্যসহ অজ্ঞাতনামা ১০০ জনের নামে করা দুটি নালিশি আবেদন গ্রহণ করে পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
আগামী ২৩ সেপ্টেম্বরের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।রোববার (২২ আগস্ট) বিকেল ৪টার দিকে অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মাসুম বিল্লাহ এ নির্দেশ দেন। অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বেঞ্চ সহকারী (পেশকার) চার্লিস গোমেজ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, বরিশাল সিটি করপোরেশনের (বিসিক) প্যানেল মেয়র ও জেলা আইনজীবী সমিতির সম্পাদক রফিকুল ইসলাম এবং বিসিকের রাজস্ব কর্মকর্তা বাবুল হাওলাদার রোববার বেলা ১১টার দিকে আইনজীবীর মাধ্যমে আদালতে দুটি নালিশি আবেদন দাখিল করেন।
দীর্ঘ শুনানি শেষে বিকেলে পরবর্তী আদেশ দেয়া হবে বলে আদালত জানান। এরপর বিকেল ৪টার দিকে নালিশি আবেদন দুটি গ্রহণ করে পিবিআইকে (পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন) তদন্তের নির্দেশ দেন আদালত। আগামী ২৩ সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। ওই তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর মামলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবেন বিচারক। এজন্য তদন্ত প্রতিবেদন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র ও জেলা আইনজীবী সমিতির সম্পাদক রফিকুল ইসলাম নালিশি আবেদনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুনিবুর রহমান ও কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুল ইসলাম, এসআই শাহ জালাল মল্লিক ও পাঁচ আনসার সদস্যসহ অজ্ঞাতনামা ৪০-৫০ জনকে অভিযুক্ত করেছেন।
আবেদনে বলা হয়েছে, অভিযুক্তরা ঘটনার দিন অর্থাৎ বুধবার (১৮ আগস্ট) রাতে বিসিক কর্মীদের ব্যানার অপসারণ করতে বাধা দেন এবং তাদের সঙ্গে ইউএনও ও তার আনসার বাহিনীর সদস্যরা দুর্ব্যবহার করেন। খবর পেয়ে সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ ঘটনাস্থলে ছুটে গেলে আনসার বাহিনীর সদস্যরা শটগান নিয়ে মেয়রকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি ছোড়েন।
এ সময় নেতাকর্মীরা মেয়রকে রক্ষা করেন। এরপর পুলিশের লাঠিচার্জ এবং গুলিবর্ষণে বহু নেতাকর্মী আহত হন। এক ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতার একটি চোখ মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এদিকে বাসিকের রাজস্ব কর্মকর্তা বাবুল হাওলাদারের নালিশি আবেদনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুনিবুর রহমান ও পাঁচ আনসার সদস্যসহ অজ্ঞাতনামা ৪০-৫০ জনকে অভিযুক্ত করেছেন।
অভিযোগ করে বলেন, ১৮ আগস্ট রাতে অবৈধ ব্যানার-পোস্টার অপসারণ করতে গেলে ইউএনও বাধা দেন। এর এক পর্যায়ে মেয়র সেখানে উপস্থিত হলে ইউএনও তার আনসার সদস্যদের গুলি করার নির্দেশ দেন। ইতোমধ্যে পুলিশও সেখানে হাজির হয়ে গুলিবর্ষণ এবং বেধড়ক লাঠিচার্জ করতে থাকে। এতে বহু লোক আহত হন।
এ সময় পুলিশ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ১০০টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে। পরে সেগুলো জোরপূর্বক গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়। পুলিশের নিয়ে যাওয়া ১০০টি মোটরসাইকেলের বাজারমূল্য এক কোটি টাকা হবে।