মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে মডার্না-ফাইজারের প্রথম ডোজের করোনা টিকা পাচ্ছেন প্রবাসী কর্মীরাও।
খোদেজা বেগম (ছদ্মনাম) স্বামীকে নিয়ে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের করোনা টিকা কেন্দ্রে এসেছেন হবিগঞ্জ থেকে।
গৃহপরিচারিকার কাজে যাবেন মধ্যপ্রাচের ওমানে। তার আগে দরকার সেদেশের নির্ধারিত (ফাইজার-মডার্না) করোনা টিকা। এলাকায় নিবন্ধন করে টিকার সুরাহা না হওয়ায় এসেছেন ঢাকায়। তবে এখানেও মিলেনি ওই টিকার প্রথম ডোজ।
তিনি জানান, স্থানীয় কেন্দ্রে টিকা না থাকায় সেখানকার স্বাস্থ্য কর্মকর্তার সুপারিশ নিয়ে এখানে (বিএসএমএমইউ) আসার পর জানতে পারি ওই টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া হচ্ছে না। এখন আবার গ্রামে ফিরতে হবে ৫-৬ ঘণ্টার পথ পাড়ি দিয়ে।
তিনি জানান, কেউ বলতেও পারছে না কবে পাওয়া যাবে টিকা।
তারমত সৌদি আরব, ওমানসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে যাওয়ার জন্য প্রথম ডোজের টিকা নিতে এসে এমন বিড়ম্বনায় পড়েন। তারা দাবি করেন, প্রবাসীরা দেশের জন্য রেমিট্যান্স পাঠায়, তাই তাদের জন্য যেন দ্রুত টিকার ব্যবস্থা করা হয়।
প্রবাসীদের অগ্রাধিকার দিয়ে ঢাকার যে ৭ হাসপাতালে ফাইজার, অ্যাসট্রাজেনেকা, মডার্নার টিকা দেওয়া হচ্ছে তার একটি বিএসএমএমইউ। কিন্তু মজুদ শেষ হওয়ায় প্রায় দু’সপ্তাহ আগে এসব টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া বন্ধ করা হয়। এতে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রবাসীরা হতাশ হয়ে ফেরেন কেন্দ্র থেকে।
বিএসএমএমইউ কেন্দ্রে এখন অ্যাস্ট্রাজেনেকা, ফাইজার, মডার্নার দ্বিতীয়, সিনোভ্যাকের দুই ডোজ টিকা দেওয়া অব্যাহত আছে। সুশৃঙ্খলভাবে প্রবেশ এবং খোলামেলা জায়গায় বসে অপেক্ষা করার সুযোগ থাকায় টিকা ব্যবস্থাপনায় সন্তুষ্ট গ্রহীতারা।
একজন বলেন, মাত্র ১০ মিনিটেই টিকা দিতে পেরেছেন। তবে সিনোভ্যাকের প্রথম ডোজের টিকার এসএমএস আসতে তাকে অপেক্ষা করতে হয়েছে।
অন্য আরেকজন বলেন, সিনোভ্যাকের টিকা পেলাম, তবে আশা ছিলো মডার্নার টিকা নেব। এখন জানি না ভবিষ্যতে সৌদি আরবে হজ বা ওমরাহ করতে কোন সমস্যা হবে কিনা।
প্রতিদিন ২ থেকে আড়াই হাজার ডোজ টিকা দেওয়া হচ্ছে এই কেন্দ্রে। বিশেষ বিবেচনায় কিছু প্রবাসীকেও প্রথম ডোজের টিকা দেওয়া হচ্ছে বলে জানান বিএসএমএমইউ’র প্রশাসন বিভাগের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নজরুল ইসলাম খান।
তিনি জানান, যদিও সরকার থেকে বলা হয়েছে নির্দিষ্ট কয়েকটি টিকার প্রথম ডোজ বন্ধ রাখার জন্য তারপরও যাদের ভিসা বা টিকিটের মেয়াদ শেষ হয়ে আসছে তাদের বিশেষ বিবেচনায় মডার্না/ফাইজার বা অ্যাসট্রাজেনেকার টিকা দেওয়া হচ্ছে।
আজও (২৪ আগস্ট) এসএমএস না থাকলেও ২০ জনের মত প্রবাসী কর্মী এমন টিকা পেয়েছেন বলে জানান তিনি। তারমতে, দেশে করোনা টিকা দফায় দফায় আসতে শুরু করেছে। আশা করি টিকার সমস্যা দ্রুত কেটে যাবে। তবে সবাইকে বলবো নির্দিষ্ট কেন্দ্র থেকেই টিকা নিতে।
এদিকে, সৌদি আরবে বাংলাদেশ দূতাবাস জানিয়েছে দেশটির সিভিল এভিয়েশন সিনোফার্মের ২ ডোজ টিকা দেয়া কর্মীদেরও প্রবেশে অনুমোদন দেবে। তবে প্রবাসীদের সে দেশে গিয়ে অ্যাস্ট্রাজেনেকা, ফাইজার, জনসন, মডার্নার বুস্টার ডোজ নিতে হবে।