সাতকানিয়া প্রতিনিধি-শহিদুল ইসলাম কায়েস: . মৃত্যুদণ্ডের আদেশ এখনও চূড়ান্ত হয়নি, এখনও বিচারাধীন বন্দিদের রাখা হচ্ছে কারাগারের নির্জন কনডেম সেলে। এমন কাণ্ডের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে চট্টগ্রাম কারাগারে থাকা সাতকানিয়ার এক বন্দিসহ তিনজন রিট আবেদন করেছেন হাইকোর্টে। রোববার (৫ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চে আবেদনটির ওপর শুনানি হতে পারে। বৃহস্পতিবার (২ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের কনডেম সেলে থাকা মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বন্দি সাতকানিয়ার জিল্লুর রহমান, সিলেট কারাগারে থাকা সুনামগঞ্জের আব্দুল বশির এবং কুমিল্লা কারাগারে থাকা খাগড়াছড়ির শাহ আলমের পক্ষে আবেদনটি করা হয়েছে।
এই তিনজনের ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের আবেদন) ও আপিল হাইকোর্টে বিচারাধীন রয়েছে বলে জানান রিট আবেদনকারীদের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। আইনজীবী শিশির মনির বলেন, বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণার পর মৃত্যুদণ্ডাদেশ কার্যকর করতে বেশকিছু আইনগত ধাপ অতিক্রম করতে হয়। ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৭৪ ধারামতে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে হাইকোর্ট বিভাগের অনুমোদন নিতে হবে। এছাড়া ফৌজদারি কার্যবিধির ৪১০ ধারা অনুযায়ী হাইকোর্ট বিভাগে আপিল দায়েরের বিধান রয়েছে। হাইকোর্ট বিভাগ মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখলে সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তি সাংবিধানিক অধিকারবলে আপিল বিভাগে সরাসরি আপিল দায়ের করতে পারেন। পাশাপাশি সংবিধানের ১০৫ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আপিলের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ (রায় পুনর্বিবেচনা) আবেদনের আইনগত সুযোগ রয়েছে।
তিনি বলেন, সর্বোপরি মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাইতে পারেন। রাষ্ট্রপতি ক্ষমার আবেদন না মঞ্জুর করলে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরে আইনগত বৈধতা লাভ করে। কিন্তু দেশে বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণার পরই সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে নির্জন কনডেম সেলে বন্দি হিসেবে রাখা হয়। গণমাধ্যমের বরাতে তিনি বলেন, দেশের কারাগারগুলোতে ২ হাজার ৫ জন ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি কনডেম সেলে বন্দি রয়েছেন। হাইকোর্ট বিভাগে চলতি বছরে ২০১৫ ও ২০১৬ সালে বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের ডেথ রেফারেন্স ও আপিল শুনানি চলছে।
সে হিসেবে চলতি বছর বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের শুনানি হবে ২০২৬ সালে। এই আইনজীবী বলেন, ২০২০ সালের হিসাব অনুযায়ী হাইকোর্টে বিচারাধীন ডেথ রেফারেন্সের সংখ্যা ৭৭৫টি। এই সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। বর্তমানে হাইকোর্ট বিভাগের ৩টি বেঞ্চ ডেথ রেফারেন্স মামলার শুনানি করছে।