স্টাফ রিপোর্টারঃ
ময়মনসিংহের আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের চিত্র অনেকটাই পাল্টেছে। আগে দালাল ছাড়া পাসপোর্ট করতে গিয়ে পদে পদে ভোগান্তির সৃষ্টি হতো। ফলে বিড়ম্বনা এড়াতে বাধ্য হয়ে দালালদের শরণাপন্ন হতেন সেবাগ্রহীতারা। তবে বর্তমানে পাসপোর্ট করতে আসা লোকজন অনলাইনে আবেদন করে সরাসরি পাসপোর্ট অফিসে জমা দিতে পারছেন। এতে ঘুষ বাণিজ্যের সিন্ডিকেট ভেঙেছে।
পাসপোর্ট করতে আসা কয়েকজন জানান, আগে পাসপোর্ট করতে আসলে অফিসের মূল ফটকের সামনেই দালালচক্র ওতপেতে থাকতো। তাদের মাধ্যম ছাড়া অফিসে কাগজ জমা দিতে গেলে আবেদন ফর্মে বিভিন্ন ভূল ধরা হতো। এরপর সরকার নির্ধারিত টাকার অতিরিক্ত দালালের কাছে জমা দিয়ে আবেদন শেষে অফিসে জমা দিলে সব ভূলও ঠিক হয়ে যেতো। তবে বর্তমান উপপরিচালক যোগদানের পর থেকে দালাল ছাড়াই সেবা পাচ্ছেন সবাই।
আনিসুর রহমান নামে একজন সেবাগ্রহীতা বলেন, আগে উপপরিচালকের কক্ষে গিয়ে সমস্যার কথা বলা যেতোনা। তবে বর্তমানে পাসপোর্টজনিত যেকোনো সমস্যার কথা সরাসরি ২০৬ নম্বর কক্ষে উপপরিচালকের সাথে সরাসরি সাক্ষাৎ করে বলা যায়। ফলে তিনি নিজে অন্য কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দিয়ে কাজে স্বচ্ছতা আনেন।
আরাফাত রহমান নামে আরেকজন বলেন, আমার ভাতিজা মালশিয়া যাওয়ার জন্য পাসপোর্ট করতে আবেদন করেছিল। কয়েকজন দালাল ১০ হাজার চেয়েছিল। কিন্তু আমরা দালালের সাহায্য না নিয়ে প্রায় অর্ধেক সরকারি খরচ দিয়ে অনলাইনে আবেদন করে অফিসে জমা দেই। মাত্র এক মাসের মধ্যে পাসপোর্ট হাতে পেয়েছি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০২১ সালের অক্টোবর থেকে বদলাতে শুরু করেছে পাসপোর্ট অফিসের চির চেনা সেই চিত্র। বাড়ানো হয়েছে সেবা ডেক্স, বিদেশগামী অসুস্থ রোগীদের জন্য চালু করা হয়েছে বিশেষ সেবা ‘মোবাইল এনরোলমেন্ট ইউনিট। ’ ফলে এ বিশেষ ইউনিটের মাধ্যমে কোনো ধরনের বিড়ম্বনা ছাড়াই রোগীদের পাসপোর্ট মিলছে অতি অল্প সময়ে। তবে পাসপোর্ট অফিসে জনবল বাড়ানো হলে সেবার মানে আরও বাড়বে।
প্রতিষ্ঠানের উপ-পরিচালক মো. হাফিজুর রহমান বলেন, আমি যোগদানের পর প্রতিটি কাজে জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে কাজ করছি। সেই সঙ্গে চেষ্টা করছি, সেবা নিতে আসা জনগণের মুখে হাসি ফোটাতে।
তিনি বলেন, কিছু দালাল কার্যালয়ের বাহিরে থাকতে পারে। তাদের সাথে আমাদের কোনো কর্মকর্তার সংশ্লিষ্টতা নেই। আমি যোগদানের পর দালালদের সিন্ডিকেট ভেঙে দিয়েছি। ফলে সেবাগ্রহীতারা সরাসরি আমার সাথে যোগাযোগ করেন। আমিও চেষ্টা করছি তাদেরকে সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার জন্য।