শনিবার (১৫ জুলাই) গুলশানে বাংলাদেশে সফররত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকে বসছে জামায়াতে ইসলামী। বৈঠকে বেশ কয়েকটি বিষয় তুলে ধরা হবে জামায়াতের পক্ষ থেকে।
বৈঠকে জামায়াতের প্রধান এজেন্ডা থাকবে দলীয় সরকার নয় নির্বাচনকালীন কেয়ারটেকার সরকার ব্যবস্থার যৌক্তিকতা, মামলা, নির্যাতন-নিপীড়ন ও হত্যার কাগুজে তথ্য-প্রমাণ, নিবন্ধন বাতিলের পায়তারাসহ নির্বাচনবিমুখ করতে রাজনৈতিক অধিকার সংকুচিত করার বিষয়টি তুলে ধরবে রাজনৈতিক এ দলটি।
জামায়াতে ইসলামীর দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ইইউ প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকে অংশ নিচ্ছেন জামায়াতের চার সদস্যের প্রতিনিধি দল। তারা হলেন- জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর ও সাবেক সংসদ সদস্য ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মাসুম ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. আব্দুর রব এবং জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও প্রচার বিভাগের সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ।
বৈঠক সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম বলেন, বৈঠকের বিষয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিদলের জ্যেষ্ঠ সচিব চেরি মিরিলিন ডিও জামায়াতে ইসলামীর কাছে চিঠি পাঠিয়েছিলেন। সেটিতে সাড়া দিয়ে আজ দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে এ বৈঠকে বসছি।
তিনি বলেন, বৈঠক ঘিরে জামায়াতের প্রস্তুতি রয়েছে। প্রথমত- আমরা এ সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাব না, এটা স্পষ্ট করে জানানো হবে। দ্বিতীয়ত- কেয়ারটেকার ব্যবস্থায় নির্বাচন। জামায়াতের সাবেক আমীর অধ্যাপক গোলাম আজম কর্তৃক উত্থাপিত কেয়ারটেকার সরকার ব্যবস্থার অধীনে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে কিন্তু আওয়ামী লীগ ও বিএনপি উভয় দলই ক্ষমতায় এসেছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ ক্ষমতার অপব্যবহার করে দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থাকার নীল নকশা হিসেবে কেয়ারটেকার ব্যবস্থা বাতিল করেছে, সেটিও আমরা যৌক্তিকভাবে তুলে ধরব।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের ছয় সদস্যের একটি অনুসন্ধানী অগ্রগামী দল গত শনিবার ১৬ দিনের সফরে ঢাকায় এসেছে। তারা বাংলাদেশের নির্বাচনী পরিবেশ ও নির্বাচনপূর্ব রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে পর্যালোচনা করছেন।
প্রতিনিধি দলটি মূলত আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের উপযোগিতা এবং সম্ভাব্যতা মূল্যায়ন করবে। এ লক্ষ্যে এখানকার রাজনৈতিক পরিবেশ, নির্বাচনী কাঠামোর মূল্যায়ন, ঘনিষ্ঠ অংশীদার সরকারি কর্তৃপক্ষ, রাজনৈতিক দল, নাগরিক সমাজ, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বসহ বিভিন্ন পর্যায়ের প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠক করছে।
ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি, এবি পার্টিসহ নিবন্ধিত–অনিবন্ধিত ১৪–১৫টি দলকে বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। গুলশানে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কার্যালয়ে শনিবার ১৫ জুলাই দিনের বিভিন্ন সময়ে দলগুলোর সঙ্গে এ বৈঠক হবে। এছাড়া আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে সোমবার সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছে ইইউ প্রতিনিধি দল।
গত মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমীর মুজিবুর রহমান বলেন, জামায়াত সূচনা থেকেই বলে আসছে দেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য কেয়ারটেকার সরকার প্রতিষ্ঠার কোনো বিকল্প নেই।