রাঙামাটিতে পঞ্চম দিনে গড়ালো ভারি বর্ষণ, বাড়ছে হ্রদের পানি/ ৪২ স্পটে পাহাড় ধস, ৩৩ কেবি বৈদ্যুতিক সঞ্চালন লাইনে উপড়ে পড়েছে গাছ, আঁধারে ডুবেছে রাঙামাটি।
স্টাফ রিপোর্টারঃ
রাঙামাটিতে টানা পাঁচ দিন ধরে মুষলধারে বৃষ্টির হচ্ছে। ভারি বর্ষণে সৃষ্ট পাহাড়ি ঢলে হু হু করে বাড়ছে কাপ্তাই হ্রদের পানি। সোমবার পর্যন্ত জেলার ৪২ টি স্পষ্টে পাহাড় ধ্বসের ঘটনা ঘটেছে।
বৃহস্পতিবার থেকে সোমবার পর্যন্ত এই পাঁচ দিন ধরে রাঙামাটিতে ভারি বর্ষণ হচ্ছে। কাপ্তাই হ্রদের উজান থেকে নামছে ভারতীয় পানি। একই সাথে পাহাড়ি ঢলও নামছে। ফলে হ্রদে হু হু করে পানি বাড়ছে। তীব্র হচ্ছে স্রোতের চাপ। প্রবল বর্ষণের কারণে জেলা সদরসহ রাজস্থলী, বিলাইছড়ি, বাঘাইছড়ি, নানিয়ারচর ও কাউখালী উপজেলার ৪২ টি স্পটে পাহাড় ধ্বসের ঘটনা ঘটেছে। শহরের পাহাড় ধ্বসে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকাগুলো হলো, ওমদামিয়া পাহাড় বিজিবি রোড সংলগ্ন পাড়া, স্বর্ণটিলা স্কুল সংলগ্ন পাড়া, রাঙাপানি রোডসহ বেশ কয়েকটি এলাকা। জানমালের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসকর্মীরা মাঠে তৎপর রয়েছে।
রাঙামাটি-চট্টগ্রাম, রাঙাপানি-ভেদভেদি, বাঘাইছড়ি- দিঘীনালা সড়কের একাধিক জায়গায় ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। বৃষ্টিপাত না থামায়, আরও পাহাড় ধ্বসের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে পাহাড় ধ্বসের কারণ গুলোর মধ্যে পাহাড় কেটে ঘরবাড়ি নির্মাণ, মিশ্র ফলজ-বনজ বাগান সৃজনের পরিবর্তে পাহাড় পুড়িয়ে বাগান বৃহৎ পত্রের গাছ রোপন, ঝুম চাষ, ঘনঘন বজ্রপাত ও ভারি বর্ষণ অন্যতম।
শহরের তবলছড়ি বিজিবি রোড এলাকায় একটি কাচা সড়ক ধ্বসে বীর মুক্তিযুদ্ধা আজাহার হবিলদার পরিবারসহ ৩২ টি পরিবার গৃহবন্দী হয়ে পড়েছে। রাঙামাটি পৌরসভা এই সড়কটি পাকা করণসহ রক্ষণা-বেক্ষণে আগ্রহী হলেও প্রভাবশালীর বাঁধার মুখে নির্মাণ করতে পারেনি। অথচ এই রোডটি ধরে এলাকার ৩২ টি পরিবার বসবাস করে। কোমলমতি শিশু-কিশোররা ও মুমূর্ষ রোগী নিয়ে চরম বিড়ম্বনায় পড়তে হয়।
এমনকি একটা মৃতদেহ বেড় করতে হলেও স্থানীয়দের দূর্ভোগে পড়তে হয়। পাহাড় ধ্বসের কারণে বর্তমানে প্রভাসী সওকত আকবরের বসতঘর ও একটি বৈদ্যুতিক ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে। ৩২ টি পরিবারের যাতায়াতের একমাত্র পথটি ধ্বেসে যওয়ায় এলাকাবাসী ঘরবন্দী হয়ে পড়েছে। এ ব্যাপারে স্থানীয় বাসিন্দা আবুল কালাম আজাদ বলেন, রোডটি তৈরিতে পৌর মেয়রক আগ্রহ প্রকাশ করেছে। কিন্তু রহস্যজনক কারণে রাঙামাটি শহর সৃষ্টির পর থেকে এই সড়কটি অবহেলিত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। এ যেন আলোর নিচে অন্ধকার।
শহরের অদূরের মানিকছড়িতে ২ টি স্পটে বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের ৩৩ কেবি বৈদ্যুতিক তারের ওপর গাছ উপড়ে পড়ে দুপুর থেকে রাঙামাটি বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। সন্ধ্যা নামতেই পুরো শহর ভূতুড়ে নগরীতে পরিনত হয়ে গেছে। দোকানীরা মোমবাতির দাম বাড়িয়ে দিয়েছে।
রাঙামাটি বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ সাইফুর রহমান বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া বিষয়ে এ প্রতিনিধিকে বলেন, রাত কয়টা নাগাদ বিদ্যুৎ সঞ্চালন স্বাভাবিক করা সম্ভব বলা যাচ্ছে না। আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করছি।