ইউএনওর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় সাংবাদিকের স্থায়ী জামিন
স্টাফ রিপোর্টাঃ
চট্টগ্রামের সাইবার ট্রাইব্যুনালে আত্মসমর্পণের পর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ার করা মামলায় স্থায়ী জামিন পেয়েছেন সাংবাদিক মোঃ সাইফুল ইসলাম। আজ সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোঃ জহুরুল কবির তাঁর জামিন মঞ্জুর করেন। সাইফুল সাউথইস্ট এশিয়া জার্নাল নামের একটি ম্যাগাজিন পত্রিকার ঢাকা অফিসে কর্মরত।
চট্টগ্রাম সাইবার ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট মেজবাহ উদ্দিন জামিনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
চলিত বছেরর ৬ মার্চ সাইফুলকে ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন দেন হাইকোর্ট। পরে ১৭ এপ্রিল তিনি খাগড়াছড়ির চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে অস্থায়ী ও ১৩ জুলাই তিনি স্থায়ী জামিন পান।
সাংবাদিক সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে আমি একটি সংবাদ প্রকাশের পর বহুল প্রচারের লক্ষ্যে তা আমার ব্যক্তিগত ফেসবুক ওয়ালে শেয়ার করি। তাতে ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে হয়রানির জন্যই মামলাটি করেন রামগড়ের সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাইকোর্ট ডিভিশন ও চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত আমাকে আগে জামিন দিয়েছেন। আজ বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশনের মহাসচিব অ্যাডভোকেট জিয়া হাবিব আহসানসহ তাঁর আইনজীবী প্যানেলের সহায়তায় সাইবার ট্রাইব্যুনাল থেকে জামিন পেয়েছি।
গত বছরের ১৯ নভেম্বর রামগড় থানায় সাংবাদিক সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৩১ (১) ধারায় মামলাটি করেন রামগড় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা জালাল আহমেদ।
এর আগে ‘উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার রোষানলে দুই মজুর নিরাপত্তাহীনতায়’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করায় সাইফুলের বিরুদ্ধে রামগড় থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কার্যলয়ের উপ-প্রশাসনিক কর্মকর্তা শরীফুল ইসলাম।
গত বছরের ১ আগস্ট রামগড় উপজেলা অফিসসংলগ্ন বিজিবি ক্যাম্পে কাজ করার সময় আবুল কালাম ও রুহুল আমিন নামের দুই দিনমজুরকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে পাঁচ দিনের সাজা দেন রামগড়ের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খোন্দকার ইখতিয়ার উদ্দিন আরাফাত। পরে বিজিবির সঙ্গে ভূমি বিরোধের জেরে সংক্ষুব্ধ হয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করে এ সাজা দিয়েছেন এমন অভিযোগে এনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা বাতিল ও ১০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন দুই দিনমজুর।
এ ঘটনায় রিট তুলে নিতে দুই দিনমজুরকে সন্ত্রাসী দিয়ে তুলে নিয়ে সাদা কাগজে সই নেওয়াসহ হুমকি দেওয়ার অভিযোগ ওঠে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। পরে ভুক্তভোগীদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সংবাদ প্রকাশ করেন সাইফুল ইসলাম। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খোন্দকার ইখতিয়ার উদ্দিন আরাফাত।
এদিকে দুই দিনমজুরের করা রিটে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার ছয় মাসের বিচারিক ক্ষমতা বাতিল ও রিটকারীদের ১০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণের আদেশ দিয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। এর বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা চেম্বার আদালত ও আপিল বিভাগে আপিল করলে হাইকোর্টের রায় বহাল থাকে। বর্তমানে রুলটি হাইকোর্ট বিভাগে নিষ্পত্তির অপেক্ষায় রয়েছে।