DoinikAstha Epaper Version
ঢাকাবুধবার ২৭শে নভেম্বর ২০২৪
ঢাকাবুধবার ২৭শে নভেম্বর ২০২৪

আজকের সর্বশেষ সবখবর

সংলাপের উদ্যােগ নিতে পারে বাংলাদেশের উন্নয়ন অংশীদাররা

Astha Desk
অক্টোবর ২৭, ২০২৩ ১১:০৫ অপরাহ্ণ
Link Copied!

সংলাপের উদ্যােগ নিতে পারে বাংলাদেশের উন্নয়ন অংশীদাররা

আস্থা ডেস্কঃ

দলীয় সরকারের অধীন নির্বাচন বর্জনসহ এক দফা আন্দোলনের বিষয়ে কঠোর অবস্থানে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)সহ সমমাননা দলগুলো।

অপর দিকে ক্ষমতাসীন দল আওযামীলীগ বিএনপিসহ সমমাননা দলগুলোর আন্দোলন প্রতিরোধ করতে সর্বাত্মকভাবে প্রস্তুতিসহ যেকোনো মূল্যে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্পন্ন করতে নানামুখী প্রস্তুত।

এমতাবস্থায় নির্বাচনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে, রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে অনিশ্চয়তা, উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠা ততই বাড়ছে। এরই মধ্যে আগামীকাল শনিবার ২৮ অক্টোবর ঘিরে একটা উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

অবশ্য সর্বশেষ যে পরিস্থিতি, তাতে প্রধান দুই দল ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সূত্রগুলো ২৮ অক্টোবর বড় কোনো অঘটনের আশঙ্কা দেখছে না। কারণ, দুই দলের কেউই সংঘাতের সূত্রপাতকারী হিসেবে চিহ্নিত হতে চায় না।

এটাকে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতির প্রভাব হিসেবে দেখছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা। যদিও এই কর্মসূচি সামনে রেখে বিরোধীদলীয় নেতা-কর্মীদের আটক ও মামলা অব্যাহত রয়েছে। ক্ষমতাসীন দলের নেতারা কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে বক্তৃতা দিয়ে আসছেন।

নির্দলীয় সরকারের অধীন নির্বাচনের দাবিতে গত বছরের মাঝামাঝি মাঠে নামার পর এ পর্যন্ত অহিংস মনোভাব নিয়ে আন্দোলন করছে বিএনপি। তাই ২৮ অক্টোবরও তাঁরা অহিংস থাকবেন। তবে সরকার বা ক্ষমতাসীন দলের দিক থেকে আঘাত এলে সংঘাত সৃষ্টি হতে পারে, সেটার দায় তাঁরা নেবেন না বলে একাধিক সভা সমাবেশে জানিয়েছে।

অপরদিকে আওয়ামী লীগের আশঙ্কা, বিএনপি বিপুল লোকজন জমায়েত করে সরকার পতনের দাবিতে রাজপথে বসে পড়তে পারে। এই আশঙ্কা থেকে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিকভাবে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়ে দুই দিন আগে থেকেই তাঁরা তৎপর হয়েছেন। বিএনপির জমায়েত যাতে বড় না হয়, সে জন্য আটক, তল্লাশি, ভয়ভীতি প্রদর্শনসহ বিভিন্ন তৎপরতা চলছে।

এমতাবস্থায় ২৮ অক্টোবর ঘিরে সারা দেশে উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা যেমন তৈরি হয়েছে। একই সঙ্গে এরপর কী হবে, কী হতে যাচ্ছে, সেটাও সর্বত্র আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ইতিমধ্যে ঘোষণা দিয়েছেন, ২৮ অক্টোবর তাঁরা বসে পড়বেন না।

তবে দলীয় সূত্রগুলো বলছে, বিএনপি এক-দুই দিন বিরতি দিয়ে নতুন কর্মসূচি দিতে পারে। সম্ভাব্য কর্মসূচির মধ্যে সচিবালয় অভিমুখে পদযাত্রা বা ঘেরাওয়ের মতো কর্মসূচি নিয়েও দলটিতে আলোচনা আছে। তবে মহাসমাবেশ ঘিরে সংঘাত বা বড় হামলা হলে তাৎক্ষণিক কর্মসূচি দেওয়ার পরিকল্পনাও নিয়ে রেখেছে সংগঠনটি।

বিএনপির এই আন্দোলন কোথায় গিয়ে পৌঁছাবে, সেটা নিয়ে নানা জল্পনাকল্পনা থাকলেও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগে নির্বাচনের পুরোদমে প্রস্তুতি চলছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেবে না ধরে নিয়েই আওয়ামী লীগ নির্বাচনী ছক কষছে। এরই মধ্যে বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা ছোট কয়েকটি দলের সঙ্গে সরকারের দিক থেকে যোগাযোগ চলছে। ভোটে এলে এসব দল আর্থিকভাবেও সহায়তা পেতে পারে বলে আলোচনা আছে।

সংলাপ বা আলোচনার ক্ষেত্রে প্রধান দুই দলের কেউই নিজ নিজ দাবি বা শর্ত থেকে সরতে রাজি নয়। এ ক্ষেত্রে ধর্মভিত্তিক আরেকটি আলোচিত দলের ব্যাপারে সরকারি মহল আশাবাদী।

সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র বলছে, বিএনপি থেকেও ৩০-৩৫ জন নেতাকে নির্বাচনে আনার লক্ষ্য নিয়ে তৎপরতা চলছে। এর মধ্যে বিএনপির প্রভাব আছে, এমন এলাকার নেতাদের ব্যাপারে সরকারের আগ্রহ বেশি বলে জানা গেছে।

সরকার ও আওয়ামী লীগ-সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, বিরোধী দলকে মোকাবিলা এবং পরিকল্পনা মতো নির্বাচন সম্পন্ন করতে এখন পর্যন্ত প্রস্তুতি ঠিকঠাকভাবে এগোলেও সরকারের নীতিনির্ধারকেরা পুরোপুরি শঙ্কামুক্ত নন।

আরো পড়ুন :  আজ সেনাকুঞ্জে যাচ্ছেন খালেদা জিয়া

তাঁরা মনে করছেন, দ্রব্যমূল্য ও অন্যান্য কিছু বিষয় নিয়ে মানুষের মধ্যে অসন্তোষ আছে। এর মধ্যে হঠাৎ কোনো ঘটনায় নতুন পরিস্থিতি তৈরি হলে সরকারের নির্বাচনী ছক ভেঙে পড়তেও পারে। এর বাইরে সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতির পরবর্তী নতুন কোনো পদক্ষেপ আসে কি না, সেই শঙ্কাও রয়েছে।

বিএনপিকে বাদ দিয়ে একটা ভোট করে ফেলার পরবর্তী রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক পরিস্থিতি নিয়েও প্রশাসনের উচ্চপর্যায়ের অনেকের মধ্যে উৎকণ্ঠা রয়েছে।

বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র কী পদক্ষেপ নেয়, সে দিকেও রাজনৈতিক মহলের দৃষ্টি রয়েছে। চলতি মাসের শুরুতে ঢাকা সফরে আসা যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীন প্রাক্-নির্বাচন পর্যবেক্ষক দলটি রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে অর্থবহ সংলাপসহ পাঁচ দফা সুপারিশ করে।

১৬ অক্টোবর ঢাকায় আসেন যুক্তরাষ্ট্রের উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী আফরিন আক্তার পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে সাক্ষাতে বলেছেন, বাংলাদেশে বিশ্বাসযোগ্য, অংশগ্রহণমূলক ও সহিংসতামুক্ত নির্বাচন নিশ্চিত করতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্‌-নির্বাচন পর্যবেক্ষক দল যেসব সুপারিশ করেছে, তা যুক্তরাষ্ট্র সরকার জোরালোভাবে সমর্থন করে।

আওয়ামী লীগ বলছে, বিএনপি সংবিধান অনুযায়ী বর্তমান সরকারের অধীন নির্বাচনে আসতে রাজি হলে তবে সংলাপ হতে পারে।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, আওয়ামী লীগ বরাবরই বলে আসছে সংবিধানের বাইরে যেতে পারব না। বিএনপি সংবিধান মানতে চায় না। তাহলে আলোচনা কীভাবে হবে?

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, দেশে-বিদেশে সবাই বুঝতে পেরেছে, এই সরকারের অধীন স্বচ্ছ নির্বাচন হবে না। তাই একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য নিরপেক্ষ সরকারের রূপরেখা কী হবে, সেটা নিয়ে আলোচনা হতে পারে।

ভোটের আগে রাজনৈতিক সংকট নিয়ে লোক দেখানোর মতো হলেও আলোচনার একটি উদ্যোগ আসতে পারে বলে রাজনৈতিক মহলের কেউ কেউ মনে করেন। আবার আলোচনার জন্য দেশের ভেতর ও বাইরে থেকে চাপ তৈরি হচ্ছে।

অন্যদিকে ১৬-১৭ অক্টোবর আফরিন আক্তারের ঢাকা সফরের পর থেকে সরকার বা আওয়ামী লীগের উচ্চপর্যায়ের কোনো নেতাকে যুক্তরাষ্ট্রের বিষয়ে নেতিবাচক বক্তব্য দিতে দেখা যায়নি। যুক্তরাষ্ট্রের দিক থেকেও শক্ত কোনো বক্তব্য দেখা যাচ্ছে না। ভিসা নীতি নিয়েও নতুন কোনো পদক্ষেপের কথা শোনা যায়নি।

এটা বড় ধরনের ঝড়ের আগে হঠাৎ সবকিছু থমকে যাওয়া নাকি কোনো ধরনের সমঝোতার আভাস!? এ নিয়েও রাজনৈতিক মহলে আলোচনা আছে। অবশ্য পর্যবেক্ষকদের কেউ কেউ মনে করেন, এমন পরিস্থিতিতে আলোচনার জন্য কোনো পক্ষ উদ্যোগী হয় কি না!? সেটাও দেখা হয়।

বাংলাদেশের রাজনীতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করেন যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির রাজনীতি ও সরকার বিভাগের অধ্যাপক আলী রীয়াজ এর মতে, আলোচনার জন্য প্রথমত একটা আলোচ্যসূচি লাগবে। সেটা প্রকৃতপক্ষে তৈরি আছে, সেটা হচ্ছে সবার অংশগ্রহণে একটা গ্রহণযোগ্য নির্বাচন।

দ্বিতীয়ত, উদ্যোগটা কে নেবে? এটা বাইরে থেকে, অর্থাৎ বাংলাদেশের উন্নয়ন অংশীদারেরাও নিতে পারে। অতীতেও দেখা গেছে, রাজনৈতিক অচলাবস্থার সমাধানের ক্ষেত্রে বাইরের দেশের কূটনীতিকদের একধরনের ভূমিকা থাকে। কিন্তু এখন পর্যন্ত সে ধরনের কিছু দেখা যাচ্ছে না।

আলী রীয়াজ বলেন, ২৮ অক্টোবরের কর্মসূচির পরবর্তী সময়ে লক্ষ রাখা দরকার, দুই পক্ষ পারস্পরিকভাবে সহনশীলতার মধ্য দিয়ে আলোচনার একটা ক্ষেত্র তৈরি করছে কি না। কারণ, রাজপথে সংকটের সমাধান করতে গেলে নাগরিকদের ও সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোকে যে ক্ষতি বইতে হবে, সেটা কারও জন্য সন্তুষজনক নয়।

বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।
সেহরির শেষ সময় - ভোর ৫:০০
ইফতার শুরু - সন্ধ্যা ৫:১৪
  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৫:০৫
  • ১১:৪৯
  • ৩:৩৫
  • ৫:১৪
  • ৬:৩১
  • ৬:২০