প্রায় দুইশ বছর আগে কিশোগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার মঙ্গলবাড়িয়া গ্রামের এক ব্যক্তি চীন থেকে একটি লিচু গাছের চারা এনে নিজ বাড়িতে রোপণ করেন। ছোট বিচির সেই লিচুর ফলন বেশি হওয়ায় নজর কাড়ে এলাকার আশপাশের মানুষের। ধীরে ধীরে সুস্বাদু, রসালো সেই লিচুর প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়ে ওঠে এলাকাবাসী। কিছুদিনের মধ্যে এ জাতের লিচুর কলম চারা ছড়িয়ে পড়ে গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে। সে থেকেই সবাই মঙ্গলবাড়িয়াকে লিচুর গ্রাম বলে ডাকতে শুরু করে।
বর্তমানে এ লিচু দেশের গণ্ডি পেরিয়ে এখন বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে। আর সেই রপ্তানির লোভে মঙ্গলবাড়িয়ার লিচু চাষিরা চড়া দামে বিক্রি করছে লিচু। সাধ্যের বাইরে হওয়ায় ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা লিচুপ্রেমীরা পছন্দের ফল না কিনেই ফিরতে হচ্ছে নিজ গন্তব্যে।
এদিকে জেলা শহরের বাজারগুলো ঘুরে কোনো ফলের দোকানে মঙ্গলবাড়িয়ার লিচু পাওয়া যায়নি।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলছেন, মৌসুমের শুরুতে অপরিপক্ক কিছু লিচু বাজারে আসলেও চড়া দামের কারণে কিনতে পারছেন না সাধারণ ক্রেতারা। আর এখন রপ্তানি লোভে মঙ্গলবাড়িয়ার লিচু পাওয়া যায়না। লিচু কিনতে গেলে বাগান মালিকরা লিচু বাহিরে রপ্তানি করবে বলে মজুদ করে রাখে।
লিচু ব্যবসায়ী আক্কাস মিয়া জানান, এ বছর তীব্র গরম ও সময়মতো বৃষ্টি না হওয়ায় ফলন অনেকটা কম হয়েছে। এছাড়া শিলাবৃষ্টির কারণে মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে।
উপজেলার কৃষি অফিস সূত্রে জানাযায়, মঙ্গলবাড়িয়া গ্রামে প্রায় ৫ হাজারের বেশি লিচুগাছ রয়েছে। সাধারণত গাছে যে পরিমাণ মুকুল আসে সে পরিমাণ ফলন হয় না। প্রাকৃতিক নিয়মে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ ফল উৎপাদন হয়। গত বছর এ এলাকা থেকে প্রায় ৭ কোটি টাকার লিচু বিক্রি হলেও এবার তীব্র তাপপ্রবাহে ফলন বিপর্যয় হয়েছে।