DoinikAstha Epaper Version
ঢাকাশনিবার ৫ই অক্টোবর ২০২৪
ঢাকাশনিবার ৫ই অক্টোবর ২০২৪

আজকের সর্বশেষ সবখবর

ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার কাগজপত্র দিয়ে ফায়ার ফাইটার

ওমর ফারুক রনি,গাইবান্ধা প্রতিনিধি
অক্টোবর ৩, ২০২৪ ৬:৫০ অপরাহ্ণ
Link Copied!

 ওমর ফারুক রনি,গাইবান্ধা প্রতিনিধিঃ গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কোটার ভুয়া কাগজ পত্র দিয়ে ফায়ার ফাইটার পদে বগুড়ায় চাকরি করছেন রেজা মিয়া (৩৪) নামের এক ব্যক্তি। তিনি উপজেলার উদাখালি ইউনিয়নের দণি কাঠুর গ্রামের আফতাব আলীর ছেলে। রেজা মিয়ার শিক্ষাগত যোগ্যতা ৮ম শ্রেণি পাশ।

তিনি গত ২০১৮ সালে নভেম্বর ১৫ তারিখ ফায়ার সার্ভীস সিভিলডিফেন্স ফায়ার ফাইটার (শ্রেণি ৪র্থ) পদে নিয়োগ পেয়ে ২১ মার্চ ২০১৯ সালে বগুড়া আদমদিঘীতে যোগদান করেন। বর্তমানে বগুড়া আদমদিঘি ফায়ার স্টেশনে চাকুরি করছেন। তবে সাম্প্রতিক সময়ে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার কোটা যাচাই-বাছাই শুরু হলে রেজা মিয়া নামে এক ফায়ার ফাইটারের তথ্য পাওয়া যায় যে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার কোটা দিয়ে দীর্ঘদিন থেকেই সরকারি চাকুরী করে আসছেন। ঘটনার সততা খুঁজতে গত বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) ওই গ্রামে সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ফায়ার ফাইটার রেজা মিয়ার পরিবারের কেউ ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহন করে নাই। কিভাবে মুক্তিযোদ্ধার সার্টিফিকেট দিয়ে বা কোটায় চাকুরি হয়েছে তা অনেকেরই অজানা। তবে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ হওয়ায় পর থেকে জনমনে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে কিভাবে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকুরি হলো তার। আর কোথায় বা পেলো এই সার্টিফিকেট। মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে অনলাইনে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ২৩২ জন। এই তালিকা মতে, আফতাব আলীর ঠিকানা অনুযায়ী কোনো মুক্তিযোদ্ধার নাম পাওয়া যায় নাই। তবে স্থানীয়রা জানান, ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদ প্রদান করে দীর্ঘদিন ধরে চাকরি করে আসছেন রেজা মিয়া। সরকারের দেওয়া বেতন উত্তোলন করছেন। অথচ তার পিতা আফতাব আলী মুক্তিযোদ্ধা নন। জাল মুক্তিযোদ্ধা সার্টিফিকেট ও ঘুষ বাণিজ্যের মাধ্যমে চাকরি নিয়েছেন তিনি। চাকরি দেওয়ার সময় এজন্যই তো যাচাই-বাছাই করেনি কর্মকর্তারা। যেসব কর্মকর্তা দায় সারাভাবে এ রকম কর্মকাণ্ড করেছেন তাদের শাস্তি হওয়া দরকার।

এ বিষয়ে রেজা মিয়ার বড় ভাই খাজা মিয়া জানান, তার পরিবারের কেউই মুক্তিযোদ্ধা কখনই অংশগ্রহণ করেনি। চাকরি নেওয়ার সময় ভুল করে মুক্তিযোদ্ধা কোটা অপশনে টিক প্রদান করা হয়েছিল। এজন্য তার ভাইয়ের মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরি হয়েছে। তবে সংশোধনের জন্য অফিসে তদবির চলছে। এসময় তার পিতা মো. আফতাব আলির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও অসুস্থতার কথা বলে দেখা করতে দেননি খাজা মিয়া। এমনকি রেজা মিয়াও সঙ্গেও মোবাইল ফোনে যোগাযোগের একাধিকবার চেষ্টা করলেও তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। দক্ষিণ কাঠুর গ্রামের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি বলেন, ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদ প্রদান করে চাকরি ও বেতন উত্তোলন করে আসছেন রেজা মিয়া। অথচ মেধাবীরা মেধা যাচাই করেও চাকরি পায় না। তার পিতা আফতাব আলী মুক্তিযোদ্ধা নন অথচ জাল মুক্তিযোদ্ধা সার্টিফিকেট দেওয়া হয়েছে চাকরি নেওয়ার সময়। ফুলছড়ি উপজেলা সাবেক কমান্ডার বীরমুক্তিযোদ্ধা হারিবুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়টিই কলঙ্কিত করেছে ভূয়া মুক্তিযোদ্ধারা। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে আফতাব আলী অংশ না নিয়ে কিভাবে মুক্তিযোদ্ধার সার্টিফিকেট পায় তা আমার বোধগর্ম নয়। ফুলছড়ি উপজেলার মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ২৩২ জন। এই ২৩২ জনের তালিকার মধ্যে তার কোন নাম নেই।

আরো পড়ুন :  কিশোরগঞ্জে দূর্গাপূজা মন্ডপের মূর্তি ভাঙচুর

বগুড়া আদমদিঘী ফায়ার স্টেশন ভারপ্রাপ্ত দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা গোলাম কিবরিয়ার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ২০১৮ সালে চাকুরিতে যোগদান করেন রেজা মিয়া। ভুল করে মুক্তিযোদ্ধা অপশনে টিক মার্ক করার কোন সম্ভাবনা নাই। নিজে ঠিক চিহ্ন দেওয়া হয়। সেই সাথে রেজা মিয়ার শিক্ষাগত যোগ্যতার ৮ম শ্রেণি এবং পিতার মুক্তিযোদ্ধার সনদের সকল কাগজ মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়সহ আটটি দপ্তরে প্রেরণ করা হয় এবং যোগ্যতা ও মুক্তিযোদ্ধা কোটার ভিত্তিতে চাকরি প্রদান করা হয়েছে। তবে ঐ ফায়ার ফাইটারের পিতার ভুয়া সনদ প্রদান করে চাকুরি বিষয়টি তিনি অবগত নন। এ প্রসঙ্গে ফুলছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার জগৎবন্ধু মন্ডল বলেন, মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ভুয়া কাগজ পত্র দিয়ে ফায়ার ফাইটার পদে চাকুরির বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে তদন্ত পূর্বক বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।
সেহরির শেষ সময় - ভোর ৪:৩৫
ইফতার শুরু - সন্ধ্যা ৫:৪৫
  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৪:৪০
  • ১১:৫০
  • ৪:০৩
  • ৫:৪৫
  • ৬:৫৮
  • ৫:৫১