ঢাকা ০৬:৫৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫, ৮ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম:
Logo মানবতার ডাক’-এর মহতী উদ্যোগ: মরণ ফাঁদ রাস্তায় ফেরালো জীবনের চলাচল Logo গাজায় মানবিক সহায়তা বাড়াতে ইসরাইলকে নির্দেশ জাতিসংঘ আদালতের Logo মাটিরাঙ্গায় গনধর্ষণের শিকার কিশোরী: আটক-২ Logo শান্তি ও সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠায় পাহাড়ে কাজ করছে বিজিবি Logo ন্যায্য দাবি আদায়ে দীঘিনালায় এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচি Logo শিক্ষকদের বাড়িভাড়া ভাতা হবে মোট ১৫ শতাংশ, দুই ধাপে দেওয়া হবে Logo দশমিনায় জেলেদের জিম্মি করে ছাত্রদল নেতার চাঁদাবাজি Logo বেনাপোলে কোটি টাকার বকেয়া আদায়ের দাবিতে আমদানিকারকের সংবাদ সম্মেলন Logo মানবতার আলোর পথে: লালন দর্শনের নতুন পাঠ Logo পরিমাপের ক্ষেত্রে মানসম্মত পরিসংখ্যানের গুরুত্ব অপরিসীম : ড. ইউনূস

ধামইরহাটে মেয়েকে বাল্যবিয়ে দেওয়ায় মায়ের কারাদণ্ড

Astha DESK
  • আপডেট সময় : ০৫:০০:০০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ জানুয়ারী ২০২৫
  • / ১০৭৩ বার পড়া হয়েছে

মোঃ এ কে নোমান, ধামইরহাট (নওগাঁ) প্রতিনিধি: নওগাঁর ধামইরহাট উপজেলায় বাল্যবিবাহের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করায় মেয়ের মাকে কারাদণ্ড প্রদান করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। উপজেলার উমার ইউনিয়নের বাখরপুর আদিবাসী পাড়ায় ১১ জানুয়ারি রাতে এ ঘটনা ঘটে।

সূত্র জানায়, বাখরপুর গ্রামের মোজাফফর রহমান তার নাবালিকা মেয়ে ছুম্মার বিয়ে পৌর সদরের আমাইতাড়া গ্রামের আবু বক্করের নাবালক ছেলে হৃদয় বাবুর সঙ্গে আয়োজন করেন। স্থানীয়রা তাদের একত্রে পেয়ে আটক করে এবং বিয়ের আয়োজনের বিষয়টি প্রকাশ পায়। ছেলে ও মেয়ে উভয়ে অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনের নজরে আসে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মোস্তাফিজুর রহমান এ ঘটনায় সরাসরি হস্তক্ষেপ করেন। তিনি বিয়ের আয়োজন না করতে মেয়ের বাবাকে একাধিকবার নিষেধ করেন এবং অভিযোগ থাকলে লিখিত আকারে জমা দিতে বলেন। তবে মেয়ের পরিবার প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বিয়ের আয়োজন সম্পন্ন করে।

এদিকে, ছেলের বাবা আবু বক্কর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে তিনি দাবি করেন, তার ছেলেকে কৌশলে ডেকে এনে জোর করে বাল্যবিবাহ দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে।

খবর পেয়ে উপজেলা প্রশাসন এবং থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে বিয়ে আয়োজনের খবর টের পেয়ে বর-কনে ও মেয়ের বাবা পালিয়ে যান। তবে মেয়ের মা মোসা. মোহসেনা খাতুন পুলিশের হাতে ধরা পড়েন।

স্থানীয়দের উপস্থিতিতে মোসা. মোহসেনা খাতুন স্বীকারোক্তি দেন যে তিনি বাল্যবিবাহের আয়োজন সম্পন্ন করেছেন। ভ্রাম্যমাণ আদালতের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মোস্তাফিজুর রহমান বাল্যবিবাহ নিরোধক আইন, ২০১৭-এর ৮ ধারা লঙ্ঘনের দায়ে তাকে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন। ১২ জানুয়ারি, মোসা. মোহসেনা খাতুনকে কোর্ট হাজতে প্রেরণ করা হয়।

কারাদণ্ড প্রদান এবং ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান সরদার, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল দপ্তরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মিলন কুমার এবং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা। এছাড়া গণমাধ্যমকর্মীরাও এ সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মোস্তাফিজুর রহমান এ বিষয়ে বলেন, “বাল্যবিবাহ একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ এবং এটি প্রতিরোধে আমাদের আইনগত পদক্ষেপ অব্যাহত থাকবে। এই ধরনের অপরাধ দমনে স্থানীয় প্রশাসন কঠোর অবস্থানে রয়েছে।”

এ ঘটনাটি স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে এবং বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে প্রশাসনের সক্রিয় পদক্ষেপের প্রশংসা করেছেন সচেতন মহল।

এমকে/আস্থা

ট্যাগস :

ধামইরহাটে মেয়েকে বাল্যবিয়ে দেওয়ায় মায়ের কারাদণ্ড

আপডেট সময় : ০৫:০০:০০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ জানুয়ারী ২০২৫

মোঃ এ কে নোমান, ধামইরহাট (নওগাঁ) প্রতিনিধি: নওগাঁর ধামইরহাট উপজেলায় বাল্যবিবাহের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করায় মেয়ের মাকে কারাদণ্ড প্রদান করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। উপজেলার উমার ইউনিয়নের বাখরপুর আদিবাসী পাড়ায় ১১ জানুয়ারি রাতে এ ঘটনা ঘটে।

সূত্র জানায়, বাখরপুর গ্রামের মোজাফফর রহমান তার নাবালিকা মেয়ে ছুম্মার বিয়ে পৌর সদরের আমাইতাড়া গ্রামের আবু বক্করের নাবালক ছেলে হৃদয় বাবুর সঙ্গে আয়োজন করেন। স্থানীয়রা তাদের একত্রে পেয়ে আটক করে এবং বিয়ের আয়োজনের বিষয়টি প্রকাশ পায়। ছেলে ও মেয়ে উভয়ে অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনের নজরে আসে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মোস্তাফিজুর রহমান এ ঘটনায় সরাসরি হস্তক্ষেপ করেন। তিনি বিয়ের আয়োজন না করতে মেয়ের বাবাকে একাধিকবার নিষেধ করেন এবং অভিযোগ থাকলে লিখিত আকারে জমা দিতে বলেন। তবে মেয়ের পরিবার প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বিয়ের আয়োজন সম্পন্ন করে।

এদিকে, ছেলের বাবা আবু বক্কর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে তিনি দাবি করেন, তার ছেলেকে কৌশলে ডেকে এনে জোর করে বাল্যবিবাহ দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে।

খবর পেয়ে উপজেলা প্রশাসন এবং থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে বিয়ে আয়োজনের খবর টের পেয়ে বর-কনে ও মেয়ের বাবা পালিয়ে যান। তবে মেয়ের মা মোসা. মোহসেনা খাতুন পুলিশের হাতে ধরা পড়েন।

স্থানীয়দের উপস্থিতিতে মোসা. মোহসেনা খাতুন স্বীকারোক্তি দেন যে তিনি বাল্যবিবাহের আয়োজন সম্পন্ন করেছেন। ভ্রাম্যমাণ আদালতের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মোস্তাফিজুর রহমান বাল্যবিবাহ নিরোধক আইন, ২০১৭-এর ৮ ধারা লঙ্ঘনের দায়ে তাকে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন। ১২ জানুয়ারি, মোসা. মোহসেনা খাতুনকে কোর্ট হাজতে প্রেরণ করা হয়।

কারাদণ্ড প্রদান এবং ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান সরদার, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল দপ্তরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মিলন কুমার এবং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা। এছাড়া গণমাধ্যমকর্মীরাও এ সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মোস্তাফিজুর রহমান এ বিষয়ে বলেন, “বাল্যবিবাহ একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ এবং এটি প্রতিরোধে আমাদের আইনগত পদক্ষেপ অব্যাহত থাকবে। এই ধরনের অপরাধ দমনে স্থানীয় প্রশাসন কঠোর অবস্থানে রয়েছে।”

এ ঘটনাটি স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে এবং বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে প্রশাসনের সক্রিয় পদক্ষেপের প্রশংসা করেছেন সচেতন মহল।

এমকে/আস্থা