রংপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত মাহমুদুল হাসান মুন্না হত্যা মামলায় নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের জেলা নেতা আল-আমিন হোসেনকে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বুধবার (২৯ জানুয়ারি) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (অপরাধ) মোহাম্মদ শিবলী কায়সার। তিনি জানান, মঙ্গলবার রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কোতোয়ালি থানার একটি চৌকস দল নগরীর স্টেশন বাবুপাড়ায় অভিযান চালিয়ে ছাত্রলীগ নেতা আল-আমিন হোসেনকে গ্রেপ্তার করে। তিনি স্টেশন বাবুপাড়ার মৃত দুলাল মিয়ার ছেলে। তার কাছ থেকে একটি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।
মোহাম্মদ শিবলী আরও জানান, আল-আমিন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত মুন্না হত্যা এবং গুলিতে আহত বিএনপি নেতা মামুন হত্যাচেষ্টার এজাহারভুক্ত আসামি। তিনি রংপুর মহানগর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদকের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে পরিচিত। ছাত্র আন্দোলন দমাতে বিভিন্ন আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ছাত্রদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন তিনি।
রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (আরপিএমপি) কমিশনার মো. মজিদ আলী জানান, হত্যা মামলার আসামি এবং অপরাধীরা যেখানেই আছে সেখান থেকেই তাদেরকে গ্রেপ্তারের সর্বোচ্চ চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এ বিষয়ে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে পুলিশ। এদিকে একই মামলায় এর আগে গত ২৭ অক্টোবর সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদের ছোট ভাই শামসুজ্জামান আহমেদ ভুট্টুকে কালীগঞ্জ বাজার থেকে গ্রেপ্তার করেন লালমনিরহাট জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। মুন্না হত্যা মামলা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। নিহত মুন্না ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গত ৪ আগস্ট সংঘর্ষে ছাত্রলীগের কাউনিয়া শাখার সাবেক উপ-পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মাহমুদুল হাসান মুন্নাসহ চারজন আওয়ামী লীগ নেতা নিহত হন। ওই ঘটনায় গত ২৯ আগস্ট রংপুর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কোতোয়ালি আমলি আদালতে ১২৮ জনকে আসামি করে নিহতের বাবা কাউনিয়া উপজেলার বরুয়াহাট এলাকার আব্দুল মজিদ বাদী হয়ে মামলা করেন। পরবর্তীতে বাদী পরে ১২ জন আসামির নাম প্রত্যাহার চেয়ে এফিডেভিটের কাগজ আদালতে দাখিল করেন। তখন বিচারক বাদীর কাছে জানতে চান, তিনি কেন এই আসামিদের নাম প্রত্যাহার করতে চাচ্ছেন। তখন বাদী আদালতকে জানান, তিনি আসামিদের চেনেন না। বিচারকের জিজ্ঞাসাবাদে একপর্যায়ে মামলার বাদী আব্দুল মজিদ জানান, তার কাছে ফাঁকা কাগজে স্বাক্ষর নিয়েছিলেন দুই ব্যক্তি। এরপর আদালত এফিডেভিট গ্রহণ করে মামলার বাদী আব্দুল মজিদকে কাঠগড়ায় আটকে রাখার নির্দেশ দেন। পরবর্তী সময়ে আইনজীবীর মাধ্যমে জামিন আবেদন দিয়ে ৫ ঘণ্টা পর মুক্ত হন তিনি।
এমকে/আস্থা