কিশোরগঞ্জে পল্লী বিদ্যুতের গাফিলতিতে বিদ্যুৎপৃষ্টে মো. সুমন মিয়া (৪০) নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে।
বুধবার (১৬ জুলাই) সকালে কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার যশোদল গোয়ালাপাড়া গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত সুমন মিয়া উপজেলার গোয়ালাপাড়া গ্রামের মৃত মতিউর রহমানের ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সকালে সুমন মিয়া বাড়ির পাশের খালের পানিতে মাছ ধরতে গেলে সেখানে পল্লী বিদ্যুতের খুঁটি থেকে ছিঁড়ে পড়ে থাকা তারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে সুমন ঘটনাস্থলেই মারা গেছে। তারটি দীর্ঘদিন ধরে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় ছিল বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। সুমন মিয়ার এমন মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বারবার অভিযোগ দেওয়ার পরও যশোদল এলাকায় বৈদ্যুতিক লাইনের ঝুঁকিপূর্ণ তারগুলো ঠিক করেনি পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে একাধিকবার মৌখিক অভিযোগ দেওয়া হলেও কোনো কর্ণপাত করেনি কিশোরগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি।
এ ঘটনার পরপরই উত্তেজিত জনতা গোলাপাড়া এলাকায় বিক্ষোভ করে বলেন- কিশোরগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি কেন নিয়মিত লাইন পরীক্ষা করে না? কেন পুরোনো ও ঝুলন্ত তার সরানো হয় না? কেন কেবল দুর্ঘটনার পর তদন্ত কমিটি গঠন করে দায় ঢাকার চেষ্টা চলায়? পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের কর্মকর্তারা কি শুধু বিল আদায়ের জন্য বসে আছেন? মানুষের জীবনের কোনো মূল্য নেই তাদের কাছে?’ আমরা এই হত্যাকান্ডের বিচার চাই। এসময় তারা কিশোরগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচির ঘোষণা দেন।
নিহত সুমন মিয়ার পরিবার এখন সম্পূর্ণ দিশেহারা। ৮মাসের এক ছেলে ও ১০ বছরের এক মেয়ে দুই সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে তার সংসার চলত। এমন একটি মৃত্যু শুধু পরিবার নয়, পুরো সমাজের জন্যই একটি ভয়ংকর বার্তা এ দেশে গাফিলতির দায় কেউ নেয় না, কিন্তু তার খেসারত দিতে হয় সাধারণ মানুষকে।
কিশোরগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার মো. আতিকুজ্জামান চৌধুরী দোষ স্বীকার করে বলেন, ‘মারা গেছে শুনছি আমি তদন্ত কমিটি গঠন করে দিয়েছি এর বেশি কিছু বলতে পারবো না। মানুষ মরলে আমার কি করার আছে?’
কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। পরিবারের কেউ অভিযোগ করলে আইনি কার্যক্রম শুরু হবে।