ঢাকা ১১:৪৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৫, ১৪ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম:
Logo খাগড়াছড়িতে নাশকতার পরিকল্পনা করছে ইউপিডিএফ Logo সামনে ঘোর অন্ধকার-আমরা ঘুমাচ্ছি Logo খাগড়াছড়িতে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে যুবদলের প্রতিষ্ঠা বাষিকী পালিত Logo কিশোরগঞ্জে ৫ দফা দাবিতে জামায়াতের বিক্ষোভ মিছিল Logo হোসেনপুরে পুলিশের হাত থেকে আওয়ামী লীগ নেতাকে ছিনিয়ে নিল বিএনপি নেতারা Logo কিশোরগঞ্জ শহরে অটোরিকশার যানজট ও ফুটপাত দখল ভাঙতে মাঠে নামলেন ডিসি ফৌজিয়া খান Logo রাজাপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নাসিম আকনের মৃত্যুতে মহাসচিব মির্জা ফখরুলের শোক Logo রাজাপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নাসিম আকনের মৃত্যুতে প্রবাস থেকে শোক প্রকাশ করলেন সেলিম রেজা Logo নলছিটিতে বিএনপির পক্ষে জনসংযোগ ও পথসভা করলেন এ্যাড. শাহাদাৎ হোসেন Logo কাঁঠালিয়ায় গণঅধিকার পরিষদের মনোনয়ন প্রত্যাশির লিফলেট বিতরণ

পদত্যাগের পর নেপালেই আছেন কেপি শর্মা ওলি

Astha DESK
  • আপডেট সময় : ০৪:০৫:৩১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • / ৯০৪৮ বার পড়া হয়েছে

পদত্যাগের পর নেপালেই আছেন কেপি শর্মা ওলি

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ

বিক্ষোভ ও সহিংসতার মুখে পদত্যাগের পর নেপালের সাবেক প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি। কোশি প্রদেশের ওখলঢুঙ্গা জেলার সামরিক বাহিনীর সুরক্ষায় শিবপুরী এলাকায় আছেন। সেখান থেকে জেন জি বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে বার্তাও দিয়েছেন। বুধবার নেপালি সংবাদমাধ্যম ‘খবরহাব’-র প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

হিমালয় এয়ারলাইন্সের একটি বিমান প্রস্তুত রাখা হয়েছিলো যা প্রচার করা হচ্ছে ওলিকে চিকিৎসার জন্য দুবাই নেওয়া হবে।

বিক্ষোভের সময় অন্তত ১৯ জন নিহত হয় এবং সংসদ ভবনে আগুন লাগানোসহ সরকারি ভবন ও রাজনীতিবিদদের বাসভবনে হামলা চালানো হয়েছে। বর্তমানে কাঠমান্ডুতে সেনাবাহিনী দায়িত্বে আছে। সেনাবাহিনী দায়িত্বে নেওয়ার পর শান্ত হয়ে এসেছে নেপালের ৭৭ জেলা।

পদত্যাগের পর মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) নেপাল সেনাবাহিনীর একটি হেলিকপ্টারে চড়ে রাজধানী কাঠমান্ডু ছেড়ে যান নেপালের সাবেক প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলি। পরে তার সরকারি বাসভবন আগুনে জ্বালিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা।

এর আগে নেপালের একটি এনজিওর মাধ্যমে
দুর্নীতি ও কর্তৃত্ববাদী শাসনের বিরুদ্ধে শুরু হয়।
এই আন্দোলন দমাতে নিষিদ্ধ করা হয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। নিষিদ্ধের এই সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করেই শুরু হয় সরকার পতনের আন্দোলন।

পরে অবশ্য নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হলেও পরিস্থিতি শান্ত হয়নি, বরং জনগণের ক্ষোভ আরও বেড়ে যায়। টানা সংঘর্ষ ও দমনপীড়নে প্রাণ গেছে অন্তত ১৯ জনের, আহত হয়েছেন চার শতাধিক। পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্যর্থ হয়ে শেষ পর্যন্ত অলি পদত্যাগ করতে বাধ্য হন।

প্রসঙ্গত, অপতথ্য, মিথ্যা তথ্য ও ঘৃণা ছড়ানোসহ নানা অভিযোগে গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে নেপালে ২৬টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও বার্তা আদান–প্রদানের অ্যাপ নিষিদ্ধ করা হয়। এর আগে কোম্পানিগুলোকে নেপালের আইন মেনে নিবন্ধন করার জন্য এক সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়েছিল।

কিন্তু টিকটক, ভাইবারসহ আরও পাঁচটি অ্যাপ নিবন্ধন করায় সেগুলো ছাড়া বাকি সব বন্ধ করে দেওয়া হয়। এতে ফেসবুক, এক্স, ইনস্টাগ্রাম, ইউটিউব বা লিংকডইনের মতো অ্যাপ ও প্ল্যাটফর্মগুলোয় প্রবেশ বন্ধ হয়ে যায়।

সরকারের এই সিদ্ধান্ত নেপালি তরুণদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করে। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও অন্যান্য প্ল্যাটফর্ম বন্ধের কয়েক সপ্তাহ আগে থেকে দেশটিতে ‘নেপো কিডস’ ও ‘নেপো বেবিস’ হ্যাশট্যাগ জনপ্রিয় হয়েছিল।

পিকে শর্মা অলি ২২ ফেব্রুয়ারী ১৯৫২ সালে ইওয়া নেপাল রাজ্যের মোহন প্রসাদ অলি ও মধুমায়া অলি দম্পতির ঘরে জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি একজন নেপালি রাজনীতিবিদ। যিনি ২০১৫ থেকে ২০১৬, ২০১৮ থেকে ২০২১ এবং ২০২৪ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত নেপালের ৩৮তম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে জানিয়েছে, পদত্যাগের আগে সেনাপ্রধান জেনারেল সিগডেলের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন অলি। বৈঠকে তিনি সেনাবাহিনীকে দায়িত্ব নেওয়ার আহ্বান জানান। তবে সেনাপ্রধান সাফ জানিয়ে দেন, অলি পদ না ছাড়লে তারা হস্তক্ষেপ করবে না। সেনা সূত্র গুলোর দাবি, অলির পদত্যাগের পর থেকেই সেনাবাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় হয়েছে।

তার এই আকস্মিক প্রস্থান নেপালের রাজনৈতিক অনিশ্চয়তাকে আরও গভীর করেছে। কারণ বিক্ষোভকারীরা কেবল প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগে থেমে নেই, তারা পুরো রাজনৈতিক ব্যবস্থার সংস্কার দাবি করছে। অন্যদিকে সেনাবাহিনীর সক্রিয় ভূমিকা দেশটির গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন প্রশ্ন তুলেছে।

ট্যাগস :

পদত্যাগের পর নেপালেই আছেন কেপি শর্মা ওলি

আপডেট সময় : ০৪:০৫:৩১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

পদত্যাগের পর নেপালেই আছেন কেপি শর্মা ওলি

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ

বিক্ষোভ ও সহিংসতার মুখে পদত্যাগের পর নেপালের সাবেক প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি। কোশি প্রদেশের ওখলঢুঙ্গা জেলার সামরিক বাহিনীর সুরক্ষায় শিবপুরী এলাকায় আছেন। সেখান থেকে জেন জি বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে বার্তাও দিয়েছেন। বুধবার নেপালি সংবাদমাধ্যম ‘খবরহাব’-র প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

হিমালয় এয়ারলাইন্সের একটি বিমান প্রস্তুত রাখা হয়েছিলো যা প্রচার করা হচ্ছে ওলিকে চিকিৎসার জন্য দুবাই নেওয়া হবে।

বিক্ষোভের সময় অন্তত ১৯ জন নিহত হয় এবং সংসদ ভবনে আগুন লাগানোসহ সরকারি ভবন ও রাজনীতিবিদদের বাসভবনে হামলা চালানো হয়েছে। বর্তমানে কাঠমান্ডুতে সেনাবাহিনী দায়িত্বে আছে। সেনাবাহিনী দায়িত্বে নেওয়ার পর শান্ত হয়ে এসেছে নেপালের ৭৭ জেলা।

পদত্যাগের পর মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) নেপাল সেনাবাহিনীর একটি হেলিকপ্টারে চড়ে রাজধানী কাঠমান্ডু ছেড়ে যান নেপালের সাবেক প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলি। পরে তার সরকারি বাসভবন আগুনে জ্বালিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা।

এর আগে নেপালের একটি এনজিওর মাধ্যমে
দুর্নীতি ও কর্তৃত্ববাদী শাসনের বিরুদ্ধে শুরু হয়।
এই আন্দোলন দমাতে নিষিদ্ধ করা হয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। নিষিদ্ধের এই সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করেই শুরু হয় সরকার পতনের আন্দোলন।

পরে অবশ্য নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হলেও পরিস্থিতি শান্ত হয়নি, বরং জনগণের ক্ষোভ আরও বেড়ে যায়। টানা সংঘর্ষ ও দমনপীড়নে প্রাণ গেছে অন্তত ১৯ জনের, আহত হয়েছেন চার শতাধিক। পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্যর্থ হয়ে শেষ পর্যন্ত অলি পদত্যাগ করতে বাধ্য হন।

প্রসঙ্গত, অপতথ্য, মিথ্যা তথ্য ও ঘৃণা ছড়ানোসহ নানা অভিযোগে গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে নেপালে ২৬টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও বার্তা আদান–প্রদানের অ্যাপ নিষিদ্ধ করা হয়। এর আগে কোম্পানিগুলোকে নেপালের আইন মেনে নিবন্ধন করার জন্য এক সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়েছিল।

কিন্তু টিকটক, ভাইবারসহ আরও পাঁচটি অ্যাপ নিবন্ধন করায় সেগুলো ছাড়া বাকি সব বন্ধ করে দেওয়া হয়। এতে ফেসবুক, এক্স, ইনস্টাগ্রাম, ইউটিউব বা লিংকডইনের মতো অ্যাপ ও প্ল্যাটফর্মগুলোয় প্রবেশ বন্ধ হয়ে যায়।

সরকারের এই সিদ্ধান্ত নেপালি তরুণদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করে। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও অন্যান্য প্ল্যাটফর্ম বন্ধের কয়েক সপ্তাহ আগে থেকে দেশটিতে ‘নেপো কিডস’ ও ‘নেপো বেবিস’ হ্যাশট্যাগ জনপ্রিয় হয়েছিল।

পিকে শর্মা অলি ২২ ফেব্রুয়ারী ১৯৫২ সালে ইওয়া নেপাল রাজ্যের মোহন প্রসাদ অলি ও মধুমায়া অলি দম্পতির ঘরে জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি একজন নেপালি রাজনীতিবিদ। যিনি ২০১৫ থেকে ২০১৬, ২০১৮ থেকে ২০২১ এবং ২০২৪ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত নেপালের ৩৮তম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে জানিয়েছে, পদত্যাগের আগে সেনাপ্রধান জেনারেল সিগডেলের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন অলি। বৈঠকে তিনি সেনাবাহিনীকে দায়িত্ব নেওয়ার আহ্বান জানান। তবে সেনাপ্রধান সাফ জানিয়ে দেন, অলি পদ না ছাড়লে তারা হস্তক্ষেপ করবে না। সেনা সূত্র গুলোর দাবি, অলির পদত্যাগের পর থেকেই সেনাবাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় হয়েছে।

তার এই আকস্মিক প্রস্থান নেপালের রাজনৈতিক অনিশ্চয়তাকে আরও গভীর করেছে। কারণ বিক্ষোভকারীরা কেবল প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগে থেমে নেই, তারা পুরো রাজনৈতিক ব্যবস্থার সংস্কার দাবি করছে। অন্যদিকে সেনাবাহিনীর সক্রিয় ভূমিকা দেশটির গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন প্রশ্ন তুলেছে।