ন্যাশনাল হিউম্যান রাইট ক্রাইম রিপোর্টার ফাউন্ডেশনের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে দীর্ঘদিনের জমি দখল, পরিকল্পিত হামলা ও হয়রানির প্রমাণ
গরমছড়িতে জমি দখল নিয়ে তাণ্ডব, ফটিকছড়িতে বসতবাড়িতে হামলা!
- আপডেট সময় : ০২:২৬:০৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫
- / ২৫০০৫ বার পড়া হয়েছে
নিজস্ব প্রতিবেদক │ দৈনিক আস্থা
চট্টগ্রামের মানিকছড়ি উপজেলার গরমছড়ি এলাকার একটি ৩ একর জমি দখল নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলা বিরোধের জেরে ফটিকছড়ি উপজেলার দক্ষিণ পাইন্দং ৭ নম্বর ওয়ার্ডে নুর হোসেন হাবিলদার বাড়ির ভুক্তভোগী মোঃ দিদারুলের পরিবারের বসতবাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটেছে।
ভুক্তভোগীদের দাবি— আদালতের রায় ও জমির দলিলপত্র নিজেদের পক্ষে থাকা সত্ত্বেও স্থানীয় একটি সন্ত্রাসী চক্র দখল ছাড়ছে না, বরং উল্টো সোমবার রাত ৭টার দিকে পুরা পরিবার কে হত্যার উদ্দেশ্যে সশস্ত্র হামলা চালিয়েছে তাদের ঘরবাড়ি ভাঙচুর পরিবার লোকজন কে আহত করেছে,,
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ: আদালতের রায়ও অকার্যকর
ভুক্তভোগী তার পিতা মো. দিদারুল আলম ও তার পরিবার জানান, গরমছড়ি এলাকায় অবস্থিত তাঁদের পৈতৃক সম্পত্তি নিয়ে প্রতিপক্ষ,,আইয়ুব,তৈয়ব,,কালাইয়ে পুতল্লে কাদের, রায়হান, , আমির আজম, হেলাল ও ঝিলু আকতারদের সঙ্গে দীর্ঘদিনের বিরোধ চলছিল। বহু বছর আইনি লড়াই শেষে আদালত তাঁদের পক্ষে রায় দিলেও প্রতিপক্ষরা তা মানছে না। বরং জমি দখল অব্যাহত রেখেছে এবং দখল পোক্ত করতে সোমবার রাতে তাঁদের বসতবাড়িতে অতর্কিতে হামলা চালায়।
ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করে বলেন—
> “সোমবার রাতে সন্ত্রাসীরা লোহার পাইপ, কিরিচ ও লাঠিসোটা নিয়ে আমাদের ঘরে ঢুকে ভাঙচুর চালায়। আমাদের বাড়ি ঘর, জানালা ও দরজা ভেঙে ফেলে। ঘরে থাকা নগদ টাকা ও মোবাইল ফোন লুট করে নিয়ে যায়।”
> “আমাদের হাতে কাগজপত্র, আদালতের রায় সবই আছে। কিন্তু সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আইনকানুন তোয়াক্কা না করে হামলা চালিয়ে আমাদের এলাকা ছাড়ার হুমকি দিচ্ছে। এখন আমরা গভীর নিরাপত্তাহীনতায় আছি।
এদিকে এই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন ভুক্তভোগীরা৷ এর পর পাল্টা আরেকটি সংবাদ সম্মেলন করেন অভিযুক্তরা।
এই ঘটনায়, অভিযুক্তদের পাল্টা সংবাদ সম্মেলনকে ‘প্রতারণামূলক ও বিভ্রান্তিকর’ বলে তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ন্যাশনাল হিউম্যান রাইট ক্রাইম রিপোর্টার ফাউন্ডেশন। সংগঠনটি বলছে, পাল্টা সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে প্রকৃত অপরাধীদের আড়াল করে ভুক্তভোগী পরিবারকে ভয় দেখানো ও হয়রানির চেষ্টা করা হচ্ছে — যা আমরা দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করছি।
ফাউন্ডেশনের মাঠপর্যায়ের প্রমাণ
হামলার দিন ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা গুরুতরভাবে আহত হন, ঘরবাড়ি ভাঙচুর করা হয় এবং মূল্যবান জিনিসপত্র লুট হয়। মাঠপর্যায়ের প্রতিনিধি ও মানবাধিকারকর্মীরা সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এসব তথ্য যাচাই করেছেন। সংগঠন ইতোমধ্যে প্রমাণভিত্তিক রিপোর্ট তৈরি করছে এবং প্রয়োজনীয় আইনি সহায়তা প্রদানের উদ্যোগ নিয়েছে।
ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষে মিনহাজ রহমান মিজানের বক্তব্য
“আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। আমি অভিযুক্ত নই—বরঞ্চ সেই পরিবারের সদস্য, যাদের উপর একের পর এক হামলা হয়েছে। অভিযুক্তরা উল্টো মিথ্যা গল্প বানিয়ে আমাদের অপরাধী বানাতে চাইছে। ঘটনার আগের দিনই আমরা একসঙ্গে বাজারে গিয়েছিলাম—সিসিটিভি ফুটেজ আছে; অথচ এখন তারা কল্পিত কাহিনি বলছে।”
তিনি আরও বলেন, তাদের পরিবারের বহু বছর ধরে দক্ষিণ পাইন্দং এলাকার জমি দখলের চেষ্টার শিকার হতে হয়েছে এবং ভূমিদস্যু চক্র সক্রিয় রয়েছে।
অভিযোগভুক্ত সন্ত্রাসীদের পরিচয় ও কায়দা
ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেছেন যে, জমি দখলের জন্য পরিকল্পিতভাবে তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমেও হামলা ও দখলের চেষ্টা চালানো হয়েছে।
প্রধান অভিযুক্তরা: ১ আইয়ুব, ২ তৈয়ব, ৩ পুতল ৩ কালাইয়ে ৪ জুন্নে আর সবার পিতা মৃত সিরাজুল হক ও তাদের পরিবার সহ
রায়হান
কাদের
আইয়ুব
তৈয়ব
পুতল
নুরুল ইসলাম
কালু
ভুক্তভোগীরা জানাচ্ছেন, এই ব্যক্তিদের মাধ্যমে তাদের জমি দখলের প্রয়াস বাস্তবায়ন করার জন্য হামলা, লুটপাট ও মানসিক হয়রানি চালানো হয়েছে।
সংগঠনের অবস্থান — সতর্কবার্তা ও আইনি উদ্যোগ
ন্যাশনাল হিউম্যান রাইট ক্রাইম রিপোর্টার ফাউন্ডেশন [NHCRF] জানিয়েছে—
“আমরা ঘটনাটিকে মানবাধিকার লঙ্ঘনের জঘন্য উদাহরণ হিসেবে দেখছি। ভুক্তভোগী পরিবারের ওপর মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন চালানো এবং মিথ্যা অভিযোগে জড়ানো হলে, তা মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী। দেশের মানবাধিকার সংগঠনগুলো কার্যত সক্রিয় রয়েছে এবং আমরা ভুক্তভোগীদের পাশে দাঁড়াব। যারা দখল, হামলা ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রশাসনকে আমরা দৃশ্যমান ও দ্রুত হস্তক্ষেপের আহ্বান জানাচ্ছি।”
বিশ্লেষণ: জমি দখল ও প্রশাসনের দায়বদ্ধতা
ফটিকছড়ি (বিশেষত মানিকছড়ি এলাকায়) জমি দখল, সন্ত্রাসী কায়দা ও লুটপাট বারবার ঘটেছে।
বর্ধিত তদন্ত: ঘটনা সম্পর্কিত ভিডিও, সিসিটিভি, মেডিক্যাল রিপোর্ট, প্রত্যক্ষদলিল ও মাঠপ্রমাণ একত্র করে দ্রুত স্বাধীন তদন্ত করা প্রয়োজন।
অভিযুক্তদের উত্স নির্ণয়: ভাড়া করা তৃতীয় পক্ষ ও তাদের অর্থায়ন/প্ররোচনার উৎস চিহ্নিত করতে হবে।
প্রশাসনের তৎপরতা: প্রশাসন যদি দ্রুত ও স্বচ্ছ হস্তক্ষেপ না করে, পরবর্তী সময়ে সংঘাত জটিল ও রক্তক্ষয়ী হতে পারে।
দীর্ঘমেয়াদী প্রতিকার: ভূমি রেকর্ড আপডেট, দ্রুত ভূমি-বিচার ব্যবস্থা কার্যকর করা এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের জন্য নিরাপত্তা ও আর্থিক সহায়তা নিশ্চিত করা জরুরি।
চূড়ান্ত দাবি ও আহ্বান
ভুক্তভোগী পরিবার এখন গভীর নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে। তারা প্রশাসন ও মানবাধিকার সংস্থার কাছে বলেছেন—
> “আমরা অপরাধী নই; আমরা ন্যায়ের পাশে দাঁড়াই। প্রকৃত অপরাধীদের দ্রুত বিচারের মুখে নিয়ে আসা হোক।”
NHCRF স্পষ্ট করে জানাচ্ছে—আমরা (দেশের মানবাধিকার সংস্থাগুলো) ঘটনার সঙ্গে জড়িত সকল দিক যাচাই করে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করছি। জনসাধারণ ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ—প্রমাণ সংরক্ষণ করুন, প্রভাব খাটানো থেকে বিরত থাকুন এবং স্বচ্ছ তদন্তে সহযোগিতা করুন।
এমএইচ/মমিতা/আস্থা










