ঢাকা ০২:০২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৫, ৩০ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম:
Logo আইনজীবী ও বিএনপি নেতার নাম জড়িয়ে সংবাদ সম্মেলনে স্থানীয়দের ক্ষোভ Logo ইরানকে সহায়তা করায় ভারতীয়সহ ৩২ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা Logo খাগড়াছড়িতে ১৮ বছর পর ধানের শীষের পথ সভায় ওয়াদুদ ভূইয়া Logo নতুন করে পদায়ন করা হলো আরও ৯ ডিসি Logo বাংলাদেশের ১১ জেলাকে সংযুক্ত করে বানাতে চায় ‘গ্রেটার ত্রিপুরা ল্যান্ড’ Logo সীমান্তে সেনা বাড়াচ্ছে ভারত-মিয়ানমার, বাংলাদেশ করছে প্রত্যাহার! Logo আ.লীগের আগ্রাসনের প্রতিবাদে পানছড়িতে যুবদলের বিক্ষোভ মিছিল Logo তাড়াইলে ধলা ইউপি চেয়ারম্যান ঝিনুক গ্রেফতার Logo কিশোরগঞ্জে চবি চাকসুর জিএস সাঈদ বিন হাবিবকে বর্ণাঢ্য সংবর্ধনা Logo কিশোরগঞ্জে জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খানের বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত

আইনজীবী ও বিএনপি নেতার নাম জড়িয়ে সংবাদ সম্মেলনে স্থানীয়দের ক্ষোভ

Doinik Astha
Doinik Astha
  • আপডেট সময় : ০৯:৫৯:৪২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৫
  • / ১১২৮ বার পড়া হয়েছে

কিশোরগঞ্জে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে গ্রামীণ সালিশ বৈঠকে অংশগ্রহণ করাকে কেন্দ্র করে কিশোরগঞ্জ-১ (সদর-হোসেনপুর) আসনের বিএনপি থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী ও ঢাকা বিভাগীয় সাবেক স্পেশাল জজ রেজাউল করিম খান চুন্নুর ছোট ভাই আমেরিকান প্রবাসী শাহীন খান এবং কিশোরগঞ্জ জজ কোর্টের দেওয়ানি আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. মোশারফ হোসেন সবুজের নাম জড়িয়ে সংবাদ সম্মেলন করায় স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।

সোমবার (১৩ নভেম্বর) বিকেলে জেলা শহরের তারাপাশা এলাকায় ভুক্তভোগী মো. রুবেল মিয়া ও তার স্ত্রী মোমেনা সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরেন।

রুবেল মিয়া জানান, ২০১৭ সালের ১৪ জানুয়ারি তার চাচাতো চাচারা মো. আব্দুল কাদির, মো. বাছির উদ্দিন, মো. মিজানুর রহমান বিল্লাল ও মো. আব্দুল মোতালিব নিজেদের মালিকানাধীন ১ একর ২২ শতাংশের একটি পুকুর ৪ লাখ টাকায় মো. জসিম উদ্দিনের নিকট কিশোরগঞ্জে আইনজীবী ও বিএনপি নেতার নাম জড়িয়ে সংবাদ সম্মেলনে স্থানীয়দের ক্ষোভ বন্ধক দেন। চুক্তি অনুযায়ী মেয়াদ শেষে জসিম উদ্দিনকে সাক্ষীদের উপস্থিতিতে রুবেল গিরবীর ৪ লক্ষ টাকা ফেরত দেয়। জসিম উদ্দিনের কথা ছিল টাকা ফেরত দেওয়ার পর পুকুরের দখল রুবেলকে বুঝিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু তিনি তা না করে কিছুদিন পর তার সহোদর ভাই শাহাবুদ্দিন ও তার সহযোগীরা পুকুরটি সরকারি লিজে পেয়েছেন বলে দাবি করে দখলের চেষ্টা চালান। রুবেলের উপর দায়িত্ব থাকায় রুবেল বাধা দিতে গেলে রুবেলকে মারধর করা হয় এবং তিনি গুরুতর জখম হন। পরে তিনি বিষয়টি স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের অবহিত করেন এবং সাহায্যের জন্য বিএনপি নেতা শাহীন খান ও আইনজীবী মোশারফ হোসেন সবুজের শরণাপন্ন হন।

আইনজীবী মোশারফ হোসেন উভয় পক্ষকে দলিলপত্রসহ উপস্থিত হতে বললেও, জসিম উদ্দিন ও তার সহযোগীরা কোনো কাগজপত্র উপস্থাপন না করে বৈঠকের মধ্যেই হামলা চালান বলে অভিযোগ করেন রুবেল। এর পর উল্টো তারা ওই দুই সমাজপ্রভাবশালী ব্যক্তির নাম জড়িয়ে বিভ্রান্তিকর সংবাদ সম্মেলন করেন।

যে পুকুর নিয়ে সমস্যা সেই পুকুর আমার চাচা শ্বশুরা আমার স্বামীকে রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। মেয়াদ শেষ হলে আমরা জসিম উদ্দিনের কাছে ৪ লাখ টাকা দিয়ে আমাদের ফিসারি ফেরত চাইলে তারা পুকুরের মাছ ধরে ফিসারি ফেরত দেওয়ার কথা থাকলেও দেয়নি। বরং আমাদের টাকা নিয়েও ফিসারি দেয়নি। কয়েকবার আমার স্বামীকে মারধর করে মাথা ফাটিয়েছে। কেউ পাশে দাঁড়াতে এলে তাদের বিরুদ্ধেও মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করে। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।

এ বিষয়ে আমেরিকান প্রবাসী শাহীন খান বলেন, আমি প্রায় ৩৪ বছর ধরে আমেরিকায় বসবাস করছি। বড় ভাইয়ের নির্বাচনের কারণে দেশে এসেছি। রুবেল চুন্নু ভাইয়ের কাছে বিষয়টি নিয়ে গেলে তিনি ঢাকায় ছিলেন। রুবেলের অসহায়ত্ব দেখে আমি সহায়তা করতে চাই। যেহেতু দলিলপত্র ভালোভাবে বুঝি না তাই একজন দেওয়ানী আইনজীবীর পরামর্শে একটি সালিশের পরামর্শ দিই। রুবেল তারিখ নির্ধারণ করলে আমি কোর্টে যাই  কিন্তু ওই পক্ষের লোকজন কাগজপত্র না এনে ঝগড়া শুরু করে। আমি তখন উভয় পক্ষকে শান্ত করে চলে আসি। পরে আমার ভাই ও আইনজীবীর নাম জড়িয়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে।

অ্যাডভোকেট মাজহারুল ইসলাম বলেন, রুবেল একজন নিরীহ ও অসহায় মানুষ। প্রতিপক্ষ প্রভাবশালী হওয়ায় তিনি ন্যায়বিচার চেয়ে আইনজীবী ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সহযোগিতা চেয়েছিলেন। কিন্তু সালিশের সময় হামলা চালিয়ে এখন মিথ্যা প্রচার চালানো হচ্ছে যা দুঃখজনক।

এ ঘটনায় এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, যারা সমাজে ন্যায়বিচারের পক্ষে দাঁড়ান তাদের নাম ব্যবহার করে এমন অপপ্রচার কোনোভাবেই কাম্য নয়। তারা প্রশাসনের কাছে ঘটনার সঠিক তদন্ত ও দায়ীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

উল্লেখ্য, এর আগে গত ১২ নভেম্বর কিশোরগঞ্জ শহরের একটি হোটেলে শাহাবুদ্দিনের ছেলে মোশাররফ হোসেন রনি সংবাদ সম্মেলন করে ফিসারি দখলের উদ্দেশ্যে সশস্ত্র হামলা ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগ তুলেছিলেন বিএনপি মনোনয়নপ্রত্যাশী রেজাউল করিম খান চুন্নু তার ভাই শাহীন খান ও আইনজীবী মোশারফ হোসেন সবুজের বিরুদ্ধে।

আইনজীবী ও বিএনপি নেতার নাম জড়িয়ে সংবাদ সম্মেলনে স্থানীয়দের ক্ষোভ

আপডেট সময় : ০৯:৫৯:৪২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৫

কিশোরগঞ্জে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে গ্রামীণ সালিশ বৈঠকে অংশগ্রহণ করাকে কেন্দ্র করে কিশোরগঞ্জ-১ (সদর-হোসেনপুর) আসনের বিএনপি থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী ও ঢাকা বিভাগীয় সাবেক স্পেশাল জজ রেজাউল করিম খান চুন্নুর ছোট ভাই আমেরিকান প্রবাসী শাহীন খান এবং কিশোরগঞ্জ জজ কোর্টের দেওয়ানি আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. মোশারফ হোসেন সবুজের নাম জড়িয়ে সংবাদ সম্মেলন করায় স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।

সোমবার (১৩ নভেম্বর) বিকেলে জেলা শহরের তারাপাশা এলাকায় ভুক্তভোগী মো. রুবেল মিয়া ও তার স্ত্রী মোমেনা সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরেন।

রুবেল মিয়া জানান, ২০১৭ সালের ১৪ জানুয়ারি তার চাচাতো চাচারা মো. আব্দুল কাদির, মো. বাছির উদ্দিন, মো. মিজানুর রহমান বিল্লাল ও মো. আব্দুল মোতালিব নিজেদের মালিকানাধীন ১ একর ২২ শতাংশের একটি পুকুর ৪ লাখ টাকায় মো. জসিম উদ্দিনের নিকট কিশোরগঞ্জে আইনজীবী ও বিএনপি নেতার নাম জড়িয়ে সংবাদ সম্মেলনে স্থানীয়দের ক্ষোভ বন্ধক দেন। চুক্তি অনুযায়ী মেয়াদ শেষে জসিম উদ্দিনকে সাক্ষীদের উপস্থিতিতে রুবেল গিরবীর ৪ লক্ষ টাকা ফেরত দেয়। জসিম উদ্দিনের কথা ছিল টাকা ফেরত দেওয়ার পর পুকুরের দখল রুবেলকে বুঝিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু তিনি তা না করে কিছুদিন পর তার সহোদর ভাই শাহাবুদ্দিন ও তার সহযোগীরা পুকুরটি সরকারি লিজে পেয়েছেন বলে দাবি করে দখলের চেষ্টা চালান। রুবেলের উপর দায়িত্ব থাকায় রুবেল বাধা দিতে গেলে রুবেলকে মারধর করা হয় এবং তিনি গুরুতর জখম হন। পরে তিনি বিষয়টি স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের অবহিত করেন এবং সাহায্যের জন্য বিএনপি নেতা শাহীন খান ও আইনজীবী মোশারফ হোসেন সবুজের শরণাপন্ন হন।

আইনজীবী মোশারফ হোসেন উভয় পক্ষকে দলিলপত্রসহ উপস্থিত হতে বললেও, জসিম উদ্দিন ও তার সহযোগীরা কোনো কাগজপত্র উপস্থাপন না করে বৈঠকের মধ্যেই হামলা চালান বলে অভিযোগ করেন রুবেল। এর পর উল্টো তারা ওই দুই সমাজপ্রভাবশালী ব্যক্তির নাম জড়িয়ে বিভ্রান্তিকর সংবাদ সম্মেলন করেন।

যে পুকুর নিয়ে সমস্যা সেই পুকুর আমার চাচা শ্বশুরা আমার স্বামীকে রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। মেয়াদ শেষ হলে আমরা জসিম উদ্দিনের কাছে ৪ লাখ টাকা দিয়ে আমাদের ফিসারি ফেরত চাইলে তারা পুকুরের মাছ ধরে ফিসারি ফেরত দেওয়ার কথা থাকলেও দেয়নি। বরং আমাদের টাকা নিয়েও ফিসারি দেয়নি। কয়েকবার আমার স্বামীকে মারধর করে মাথা ফাটিয়েছে। কেউ পাশে দাঁড়াতে এলে তাদের বিরুদ্ধেও মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করে। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।

এ বিষয়ে আমেরিকান প্রবাসী শাহীন খান বলেন, আমি প্রায় ৩৪ বছর ধরে আমেরিকায় বসবাস করছি। বড় ভাইয়ের নির্বাচনের কারণে দেশে এসেছি। রুবেল চুন্নু ভাইয়ের কাছে বিষয়টি নিয়ে গেলে তিনি ঢাকায় ছিলেন। রুবেলের অসহায়ত্ব দেখে আমি সহায়তা করতে চাই। যেহেতু দলিলপত্র ভালোভাবে বুঝি না তাই একজন দেওয়ানী আইনজীবীর পরামর্শে একটি সালিশের পরামর্শ দিই। রুবেল তারিখ নির্ধারণ করলে আমি কোর্টে যাই  কিন্তু ওই পক্ষের লোকজন কাগজপত্র না এনে ঝগড়া শুরু করে। আমি তখন উভয় পক্ষকে শান্ত করে চলে আসি। পরে আমার ভাই ও আইনজীবীর নাম জড়িয়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে।

অ্যাডভোকেট মাজহারুল ইসলাম বলেন, রুবেল একজন নিরীহ ও অসহায় মানুষ। প্রতিপক্ষ প্রভাবশালী হওয়ায় তিনি ন্যায়বিচার চেয়ে আইনজীবী ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সহযোগিতা চেয়েছিলেন। কিন্তু সালিশের সময় হামলা চালিয়ে এখন মিথ্যা প্রচার চালানো হচ্ছে যা দুঃখজনক।

এ ঘটনায় এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, যারা সমাজে ন্যায়বিচারের পক্ষে দাঁড়ান তাদের নাম ব্যবহার করে এমন অপপ্রচার কোনোভাবেই কাম্য নয়। তারা প্রশাসনের কাছে ঘটনার সঠিক তদন্ত ও দায়ীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

উল্লেখ্য, এর আগে গত ১২ নভেম্বর কিশোরগঞ্জ শহরের একটি হোটেলে শাহাবুদ্দিনের ছেলে মোশাররফ হোসেন রনি সংবাদ সম্মেলন করে ফিসারি দখলের উদ্দেশ্যে সশস্ত্র হামলা ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগ তুলেছিলেন বিএনপি মনোনয়নপ্রত্যাশী রেজাউল করিম খান চুন্নু তার ভাই শাহীন খান ও আইনজীবী মোশারফ হোসেন সবুজের বিরুদ্ধে।