ভোলায় ধর্ষণের হাত থেকে নিজেকে বাঁচাতে ধর্ষণ চেষ্টাকারীর পুরুষাঙ্গ কেটে দিয়েছেন এক নারী। ধর্ষণের চেষ্টাকারী মো. নাঈমকে (৩৫) গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে চরফ্যাশন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে বরিশাল হাসপাতালে পাঠানো হয়।
রোববার (২৭ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ১২টার দিকে চরফ্যাশন উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ভাষানচর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নাঈম রসুলপুর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ভাষানচর গ্রামের আজম আলী সরদারের ছেলে। তিনি ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালান।
২০২০ সালে ধর্ষণের শিকার ৮৮৯ জন নারী, ধর্ষণের পর হত্যা ৪১ জনের
ভুক্তভোগী নারী (২৬) জানান, তিনি দুই সন্তানের জননী। তার স্বামী নদীতে মাছ শিকার করেন। স্বামীর পেশার পাশাপাশি নকশিকাঁথা তৈরি করে বিক্রি করেন গৃহবধূ। নাঈম তার স্বামীর বন্ধু। সেই সুবাদে তাদের বাড়ি যাওয়া-আসা করতেন। তিন মাস ধরে গৃহবধূকে কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন নাঈম। বিষয়টি নিয়ে নাঈমকে বারবার সতর্ক করেছিলেন ওই নারী।
তিনি বলেন, রোববার রাত ১২টার দিকে ঘর থেকে বের হয়ে বাথরুমে যাই। আমার স্বামী নদীতে মাছ শিকারে যাওয়ায় বাড়ি ফাঁকা ছিল। এ সুযোগে ঘরে ঢুকে খাটের নিচে লুকিয়ে থাকে নাঈম। বাথরুম থেকে এসে ঘরের দরজা বন্ধ করে ঘুমিয়ে পড়ি। হঠাৎ মুখ চেপে ধরে আমার জামা-কাপড় ছিঁড়ে ফেলে ধর্ষণের চেষ্টা চালায় নাঈম। একপর্যায়ে তার সঙ্গে ধস্তাধস্তি লেগে যায় আমার।
উপায় না পেয়ে ধর্ষণ থেকে বাঁচতে খাটের পাশে থাকা সুঁই-সুতার বক্স থেকে ব্লেড নিয়ে নাঈমের পুরুষাঙ্গ কেটে দেই। তখন নাঈম চিৎকার দিলে স্থানীয়রা ছুটে আসে। পরে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায় স্থানীয়রা।
গৃহবধূ আরও বলেন, এ ঘটনার পর থেকে নাঈমের পরিবার ও স্থানীয় কয়েকজন মাদকসেবী বিভিন্নভাবে আমাকে ভয় দেখাচ্ছেন। এতে আমি ও আমার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি।
চরফ্যাশন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা শোভন কুমার বশাক বলেন, রোববার রাত পৌনে ৩টার দিকে নাঈমকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বরিশাল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
রসুলপুর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য (মেম্বার) এমদাদুল হক মিঠু বলেন, নাঈম এর আগেও এলাকার কয়েকজন নারীর শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেছিল। ওসব ঘটনায় কয়েকবার তাকে জরিমানা করা হয়। নাঈম এলাকার চিহ্নিত লম্পট। ওই নারীর ঘরে ঢুকে ধর্ষণের চেষ্টা করায় তার পুরুষাঙ্গ কেটে দেয়া হয়েছে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে শশীভূষণ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি নিয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন গৃহবধূ। ঘটনার তদন্ত চলছে। পরে বিস্তারিত জানানো হবে।