করোনা মহামারির কারণে ১৮ মার্চ থেকে দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ছাত্রাবাসগুলোও বন্ধ। এরপরও কিভাবে, বন্ধ ক্যাম্পাসে রাজনীতির নামে ছাত্রাবাস দখলে রাখা হয়েছিলো সেই প্রশ্নই উঠছে ঘুরে ফিরে। এ ঘটনায় কলেজের অধ্যক্ষ স্বীকার করেন তার ব্যর্থতার কথা। সাবেক শিক্ষার্থীরা কলেজ কর্তৃপক্ষের পদত্যাগ দাবি করেছেন।
এদিকে, নির্যাতিতার স্বামী জানিয়েছেন, ৫০ হাজার টাকা দাবি করেছিল অভিযুক্তরা।
নির্যাতিতা নারীর স্বামী বলেন, ৫০ হাজার টাকা চেয়ে বলে না দিলে তোর স্ত্রী ও আর তোর সমস্যা হবে। আমি তখন তাকে ২ হাজার টাকা আছে বলি।
ছাত্রলীগের ক্যাডাররা ৫০ হাজার টাকা না পেয়ে গাড়িতে করে এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে নেয়ার পর স্বামীর সামনেই ৫/৬ জন গণধর্ষণ করে।
করোনাকাল ছাত্রাবাস খোলা থাকলো কি করে এ প্রশ্ন সবার। জানা গেছে, হোস্টেল সুপারের বাসা দখল করেছিলো গণধর্ষণের প্রধান অভিযুক্ত সাইফুর রহমান। কলেজের অধ্যক্ষের কথায় হোস্টেলে ক্যাডার ও সন্ত্রাসীদের অবস্থানে অসহায়ত্ব ফুটে উঠে।
আরো পড়ুনঃ এমসি কলেজে গণধর্ষণ: সিলেট যাচ্ছে মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটি
এমসি কলেজ অধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. সালেহ আহমদ বলেন, হোস্টেল সুপারের বাসা দখল করে থাকত তাদের মধ্যে একজন এই ঘটনায় জড়িত।
এই ঘটনার দায় কলেজ কর্তৃপক্ষকেই নিতে হবে বলে মত বিশিষ্টজনেরা।
সম্মিলিত নাট্য পরিষদ সাধারণ সম্পাদক রজত কান্তি গুপ্ত বলেন, এর আগেও অনেক ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু এমসি কলেজেই কেন এসব ঘটনা ঘটবে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বন্ধের পর ছাত্রাবাসে মূলত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের অবস্থান। শুক্রবারের ঘটনার পর দু’জন নিরাপত্তকর্মীকে বহিষ্কার করেছে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু এই ঘটনায় সবার পদত্যাগ করা উচিৎ বলে মনে করেন প্রাক্তন ছাত্রী।
থিয়েটার মুরারিচাঁদের সাবেক সভাপতি মাহমুদা এলাহি বৃষ্টি, একেবারে নিচু কর্মচারীদের আপনারা ছাঁটাই করছেন, তাদের পেটে লাত্থি মেরেছেন। কিন্তু যারা দোষী তাদের কি করবেন?
শুক্রবার রাতে ছাত্রাবাসে গণধর্ষণের ঘটনার পর শনিবার ছাত্রাবাসটি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে কলেজ কর্তৃপক্ষ।
এদিকে, এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করেছে শিক্ষামন্ত্রণালয়। এই কমিটিকে ৩ দিনের মধ্যে প্রাথমিক রিপোর্ট এবং সাতদিনের মধ্যে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (২৮ সেপ্টেম্বর) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সিলেটের মুরারিচাঁদ কলেজ (এম,সি কলেজ) ক্যাম্পাসে সম্প্রতি সংঘটিত ঘটনায় কলেজ কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনায় কোনোরূপ ঘাটতি ছিলো কিনা তা সরেজমিনে তদন্তপূর্বক ও বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকলের দায়-দায়িত্ব নিরূপণ করে সুপারিশসহ প্রতিবেদন প্রেরণ করার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্মকর্তাদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।