যশোরে এক তরুণীকে বাসের মধ্যে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয়েছে। মামলায় ওই তরুণী একজনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও ছয়জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ চেষ্টা ও মারধরের অভিযোগ করেন। অভিযুক্তরা সবাই বাস শ্রমিক।
তার অভিযোগ, রাতে আশ্রয় দেওয়ার কথা বলে বাসের মধ্যে নিয়ে ধর্ষণ করেছে তার পূর্বপরিচিত এক বাসের হেলপার। ধর্ষণ চেষ্টা ও মারপিট করেছে আরো ছয় বাস শ্রমিক।
ধর্ষিতার ডায়েরির ‘পাতায় পাতায়’ প্রতারণার গল্প
যশোর কোতয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শেখ তাসনীম আলম জানান, ঘটনার সূত্রপাত বৃহস্পতিবার রাত ১টার দিকে যশোর শহরের মণিহার বাসস্ট্যান্ড এলাকায়। স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ একটি বাসের মধ্যে থেকে এক তরুণীকে উদ্ধার ও সাত পরিবহন শ্রমিককে আটক করে।
এ সময় ওই তরুণী পুলিশকে জানান, তিনি বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে রাজশাহী থেকে যশোর শহরে আসেন বাসে করে। রাতে বাড়ি যাওয়ার কোনো উপায় না পেয়ে তিনি তার পূর্বপরিচিত বাস হেলপার মনির হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। মনির কৌশলে তাকে শহরের বকচর এলাকার কোল্ডস্টোরের কাছে রাখা একটি পরিবহনের বাসের মধ্যে নিয়ে যায়। এরপর কোমল পানীয় খাইয়ে বাসের মধ্যেই তাকে ধর্ষণ করে। এ সময় আরো ছয় বাস শ্রমিক সেখানে উপস্থিত হয়। তাদের মধ্যে তিনজন তাকে ধর্ষণ চেষ্টা করে এবং অপর চারজন মারধর করে।
তরুণী জানান তার বাড়ি মাগুরায়।
পরিদর্শক তাসনীম আরো জানান, তবে স্থানীয়রা ভিন্ন অভিযোগ করেছেন। তারা বলছেন ওই বাসটি রাখা ছিল শহরের মণিহার বাসস্ট্যান্ডের কাছে বারান্দিপাড়ায় ঢাকা রোডের পাশে। গভীর রাতে হেলপার মনির এক নারীকে নিয়ে বাসে ওঠে এবং সেটি চালিয়ে বকচর কোল্ড স্টোরেজ এলাকায় নিয়ে যায়। সেখানে বাসটি রেখে রিকশায় ওই নারীকে নিয়ে মণিহার সিনেমা হল এলাকায় হোটেলে খায়। এরপর আবার বাসে গিয়ে ওঠে। এ সময় আরও ছয় বাস শ্রমিক তাদের অনুসরণ করে ওই বাসে গিয়ে ওঠে। এসময় হৈ চৈ হলে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়।
শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টার পর ওই তরুণী বাদী হয়ে যশোর কোতয়ালি থানায় সাতজনকে অভিযুক্ত করে একটি মামলা করেন। মামলার অভিযোগে মনির হোসেনকে ধর্ষক ও অন্য ছয়জনকে ধর্ষণের চেষ্টা ও মারপিটে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
মনির ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার বাসিন্দা ও যশোর সদর উপজেলার রামনগর গ্রামের শহিদুল ইসলামের বাড়ির ভাড়াটিয়া।
অভিযুক্ত অন্য ছয়জন হলেন যশোর শহরের মোল্লাপাড়ার শাহিন ওরফে জনি, সিটি কলেজ পাড়ার কৃষ্ণ বিশ্বাস, সুভাষ সিংহ, বারান্দিপাড়া বৌবাজার এলাকার রাকিবুল, বারান্দিপাড়ার কাজী মুকুল ও বেজপাড়া কবরস্থান পাড়ার মাহিদুল।
এর আগে সকালে পুলিশ তরুণীকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে পাঠায় তার মেডিকেল পরীক্ষার জন্য।
হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার আরিফ আহমেদ জানান, তরুণীর শারীরিক অবস্থা ভালো আছে। আলামত পরীক্ষার জন্য দায়িত্বরত গাইনি চিকিৎসককে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ধর্ষণ হয়েছে কি না জানা যাবে।