প্রাণঘাতী সংঘর্ষের পর চীন ঘোষণা দিয়েছে যে তারা ভারতের সঙ্গে আরও কোনো সংঘাতে যেতে চায় না। সেইসঙ্গে বিরোধ থামাতে উভয় দেশই আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।
আলজাজিরা জানায়, সোমবার লাদাখ সীমান্তে মুখোমুখি চীন ও ভারত সেনারা প্রাণঘাতী সংঘর্ষে জড়ায়। অমীমাংসিত সীমান্ত নিয়ে দেড় মাস ধরে ওই এলাকায় উত্তেজনা চলছিল দুই দেশের মধ্যে।
সংঘর্ষে নিজেদের এক কর্নেলসহ ২০ সেনা নিহতের কথা স্বীকার করে ভারত জানিয়েছে, চীনের সেনারাও হতাহত হয়েছে। কিন্তু চীন সেটি জানায়নি।
তবে মার্কিন গোয়েন্দা সূত্রে ভারতীয় বার্তা সংস্থা পিটিআই জানায়, গালওয়ান উপত্যকায় সংঘর্ষে অন্তত ৩৫ জন চীনা সেনা হতাহত হয়েছে।
এদিকে সংঘর্ষের জন্য চীন-ভারত পরস্পরকে দুষলেও বেইজিং জানিয়েছে, এই উত্তেজনার নিরসন চায় তারা।
চীনা কর্তৃপক্ষ জানায়, সীমান্তে ভারতের সঙ্গে চীন আর কোনো সংঘর্ষ দেখতে চায় না। দুই দেশই আলোচনার মাধ্যমে বিরোধ মেটানোর চেষ্টা চলছে।
এই সংঘর্ষের জন্য চীন দোষী নয় বলে পুনর্ব্যক্ত করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঝাও লিজিয়ান জানান, সীমান্ত পরিস্থিতি এখন স্থিতিশীল এবং নিয়ন্ত্রণে আছে।
এদিকে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এক বিবৃতিতে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় শান্তি ফেরানোর জন্য সেনা এবং কূটনৈতিক স্তরে আলোচনা চালাচ্ছে ভারত-চীন।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘দুদেশের মধ্যে উচ্চ-পর্যায়ের বৈঠকে যে সমঝোতা হয়েছে তা যদি চীন মেনে চলত তা হলে সোমবার রাতে গালওয়ান উপত্যকায় যে রক্তক্ষয়ী ঘটনা ঘটেছে তা এড়ানো সম্ভব হত। ভারত প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার মধ্যেই তাদের যাবতীয় কর্মকাণ্ড সীমাবদ্ধ রেখেছে। আশা করছি চীনও তাদের দিক থেকে এই নিয়ম মেনে চলবে।’ ভারত-চীনের লাদাখ সীমান্তের ‘নো ল্যান্ডস ম্যান’ অঞ্চলে নতুন একটি পোস্ট বসানোর জায়গা ঠিক করা নিয়ে দুপক্ষ সংঘাতে জড়ায় বলে জানিয়েছে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।
ভারতের দাবি, সোমবার সেনারা নিয়ন্ত্রণ রেখায় দায়িত্ব পালন করা অবস্থায় গুরুতর আহত হয়। ওদিকে চীনের দাবি, ভারত আগে তাদের সেনাদের আক্রমণ করেছে।
লাদাখে দুই দেশ এভাবে সবশেষ সংঘাতে জড়ায় সেই ১৯৭৫ সালে।
নতুন পরিস্থিতিতে তাদের সম্পর্ক কোথায় গিয়ে দাঁড়ায় সেটি এখন দেখার বিষয়। যেসব সীমান্ত এলাকায় দুই দেশের সশস্ত্র বাহিনী সামনাসামনি মোতায়েন আছে, সেখানে উত্তেজনা ক্রমশ বাড়ছে। তবে দেশ দুটি বারবার বলছে, তারা কিছুতেই যুদ্ধে জড়াতে চায় না।
দৈনিক আস্তা/জাদ