রাষ্ট্রের স্বার্থেই সাংবাদিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা জরুরি ও উচিত বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান আহমেদ আবু জাফর। তিনি বলেন, রাষ্ট্রযন্ত্রের ভেতরে একটি গোষ্ঠী সক্রিয়ভাবে সাংবাদিকদের নিরাপত্তাহীন রাখতে চায়, যাতে তারা স্বাধীনভাবে কাজ করতে না পারেন।
শনিবার বিকেলে রাজধানীর চিড়িয়াখানা রোডে মিরপুর প্রেস ক্লাবের ৩০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান বক্তার বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
আহমেদ আবু জাফর বলেন, “গত ৫৪ বছরে বহু সরকার ক্ষমতায় এসেছে, তারা হাজারো আইন করেছে, কিন্তু সাংবাদিকদের সুরক্ষার জন্য একটি কার্যকর বিধিমালাও তৈরি হয়নি। সব সরকারই সাংবাদিকদের নিরাপত্তা উপেক্ষা করেছে। সাংবাদিকদের অনিরাপদ রেখে তারা লুটপাট চালিয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “গণমাধ্যম রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ। সংকটময় মুহূর্তে সাংবাদিকদের নিরপেক্ষ থেকে রাষ্ট্রের স্বার্থে কাজ করা উচিত, কোনো রাজনৈতিক পক্ষের হয়ে নয়।”
অনুষ্ঠানের আলোচনা সভার বিষয় ছিল—”আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে সাংবাদিকদের ভূমিকা”। এতে সভাপতিত্ব করেন সাবেক তথ্য সচিব সৈয়দ মার্গুব মোর্শেদ। তিনি বলেন, “সাংবাদিকদের নিরপেক্ষ অবস্থান বজায় রেখে সমাজের অসঙ্গতি তুলে ধরা প্রয়োজন। তাদের ন্যায্য দাবি রাষ্ট্রকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা উচিত।”
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও সাবেক রাষ্ট্রদূত অধ্যাপক ড. আনোয়ার উল্লাহ। তিনি বলেন, “চাটুকার সাংবাদিকরা রাজনৈতিক গোষ্ঠীর হয়ে কাজ করে, যা গণমানুষের স্বার্থের পরিপন্থী। একটি গণতান্ত্রিক, মানবিক সমাজ গঠনের জন্য সাংবাদিকদের মূল্যায়ন ও মর্যাদা নিশ্চিত করতে হবে।”
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমিনুল হক, দি ইউনিভার্সিটি অব কুমিল্লার ডিন প্রফেসর ড. হানিফ খান, বিএমএসএফ-এর যুগ্ম সম্পাদক ড. তাওহীদ হাসান, বাংলা একাডেমির উপ-পরিচালক ড. সাহেদ মন্তাজ, নায়ক যুবরাজ খান, মিরপুর প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এস. এম. জাকারিয়া, সহ-সভাপতি মীর আক্তারুজ্জামান তারেক, মিরপুর রিপোর্টার্স ক্লাবের সভাপতি ড. আব্দুল্লাহ আল মামুন, মিরপুর সম্মিলিত সাংবাদিক জোটের সাধারণ সম্পাদক এস. এম. জহিরুল ইসলাম, ক্ষিলখেত প্রেস ক্লাবের সভাপতি স্বাধীন, সাভার প্রেস ক্লাবের সভাপতি নাজমুল ইসলাম এবং কোনাবাড়ি থানা প্রেস ক্লাবের প্রতিনিধি সালাউদ্দিন প্রমুখ।
আলোচনা শেষে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা এবং নৈশভোজের আয়োজন করা হয়, যেখানে ঢাকা ও বাইরের বিভিন্ন প্রেস ক্লাব ও সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।