DoinikAstha Epaper Version
ঢাকাসোমবার ৭ই অক্টোবর ২০২৪
ঢাকাসোমবার ৭ই অক্টোবর ২০২৪

আজকের সর্বশেষ সবখবর

বঙ্গবন্ধুর বাসার গৃহকর্মী থেকে জাতীয় সংসদের হুইপ

News Editor
অক্টোবর ১, ২০২৪ ৬:৪৫ অপরাহ্ণ
Link Copied!

বঙ্গবন্ধুর ৩২ নম্বর বাড়িতে রান্না থেকে শুরু ঘর ধোঁয়া-মোছাসহ বাড়ি দেখাশুনার কাজ করতে মাহবুব আরা বেগম গিনি। বাড়ির কেয়ার টেকার থেকে গাইবান্ধা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জাতীয় সংসদের সাবেক হুইপ বনে যান মাহবুব আরা বেগম গিনি।

তার ভাই টুটুলও ছিলেন সেই ৩২ নম্বর বাড়ির কেয়ার টেকার। এতে তাদের ভাগ্য খুলে যায়, রাতারাতি হয়ে শত কোটি টাকার মালিক। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর বেরিয়ে আসতে শুরু করে চাঞ্চল্যকর এসব তথ্য।

তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, বঙ্গবন্ধুর ৩২ নম্বরের কেয়ারটেকার হওয়ার সুবাদে সান্নিধ্য লাভ করেন আওয়ামী লীগ নেত্রী শেখ হাসিনার। তারপর হঠাৎ করে শেখ হাসিনার স্বামী প্রয়াত ওয়াজেদ মিয়ার আত্মীয়তার পরিচয় দিয়ে মাহবুব আরা বেগম গিনি হয়ে যান শেখ হাসিনার আস্থাভাজন।

তার বাড়িতে রান্না করা, পারিবারিক কাজকর্ম করে দেয়া থেকে শুরু করে পা টিপে দেয়ার কাজ করতেন তিনি। তার বদলে তিনি পেয়েছেন শত শত কোটি টাকার প্রকল্প ও আওয়ামী লীগের নির্বাচনি টিকেট। ভোটে জিতেই হয়েছেন আঙুল ফুলে কলাগাছ। ইতোমধ্যে মাহবুব আরা বেগম গিনি গাইবান্ধার দুটি মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন।

মাহবুব আরা বেগম গিনি আওয়ামী লীগের টিকেটে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেন গাইবান্ধা-২ সদর আসন থেকে। বিপুল পরিমাণ টাকা ছিটিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। তারপর উন্নয়নের নামে অর্থ কামাইয়ের নতুন কৌশল আবিস্কার করেন। নিজেকে সৎ নির্ভিক দেখিয়ে তার ভাতিজা জেলা যুবলীগের সাধারন সম্পাদক আহসান হাবীব রাজিব ও আওয়ামী লীগ নেতা মৃদুল মোস্তাফিজ ঝন্টুকে সাথে নেন। তিনি বেশির ভাগ সময় থাকতেন ঢাকায়। আর তার হয়ে কাজ করতেন ভাতিজা ও ঝন্টু।

মাহবুব আরা গিনি তার ভাতিজা যুবলীগ নেতা আহসান হাবীব রাজিবকে দায়িত্ব দেন বিভিন্ন অফিসের কাজ ভাগাভাগি করার জন্য। তার বদৌলতে বেকার রাজিব বনে যান বড় ব্যবসায়ী ।

আওয়ামী লীগের আমলে বিগত ১৫ বছরে মসজিদ, মন্দির, রাস্তাঘাট, স্কুল-মাদ্রাসার উন্নয়নের সহস্রাধিক প্রকল্প থেকে মৃদুল মোস্তাফিজ ঝন্টুর মাধ্যমে মাহবুব আরা বেগম গিনি নিয়েছেন অন্তত শত কোটি টাকা। এছাড়াও এতিমখানা ও গাইবান্ধা হাসপাতালের রোগীদের খাবার থেকে মাসে ৫০ হাজার টাকা, জেলখানার বন্দিদের খাবারের টাকা থেকে মোটা অংকের টাকা নিতেন এই ঝন্টুর মাধ্যমে। আর এজন্যই পরিদর্শন টীমের সদস্য নির্বাচিত করে দেয়া হয় ঝন্টুকে।

আরো পড়ুন :  রামপাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে  বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা শামীমের মতবিনিময়

অনুসন্ধান বলছে, গাইবান্ধা সদর উপজেলার ২শ ২১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২০১৩ সাল থেকে দপ্তরী কাম নৈশ প্রহরীকে নিয়োগ দেয়া হয়। এসব নিয়োগে এমপিদের বাদ দিয়ে কোনো কিছু হতো না। সে কারনে প্রতিটি পদের বিপরীতে কমপক্ষে ৫ থেকে ১১ লাখ টাকা করে নেয়া হয় প্রার্থীদের কাছে। এতে প্রায় ২২১টি বিদ্যালয়ের নৈশপ্রহরীদের কাছ থেকে ঘুষ নেয়া হয় দেড় কোটি টাকারও বেশি। আর এই টাকা এমপির কাছে যেতো তার ভাতিজা যুবলীগ নেতা রাজিব ও ঝন্টুর হাত দিয়ে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন প্রকৌশলী জানান, ‘এমপি গিনির ভাতিজা রাজিব ১৫ বছরে অন্তত ১শ কোটি টাকার কাজ করেছেন। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কাজ হলো গাইবান্ধা থেকে সুন্দরগঞ্জ পর্যন্ত বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধের কাজ। কাজটি বগুড়ার ঠিকাদারের নামে নিয়ে তাকে ছেড়ে যেতে বাধ্য করা হয়।

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা পালানোর পর বিক্ষুদ্ধ জনতা এমপি গিনি ও তার ভাতিজা রাজিবের রাজ প্রসাদ তুল্যবাড়ি ভাঙ্গচুর করেন। তাদের বিরুদ্ধে বিএনপি অফিস ভাঙ্গচুর ও অগ্নিসংযোগের মামলা করা হয়েছে।

এদিকে, গাইবান্ধা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জাতীয় সংসদের সাবেক হুইপ মাহবুব আরা বেগম গিনিকে সোমবার দিবাগত রাতে রাজধানীর ধানমণ্ডি এলাকার নিজ বাসা থেকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। তার বিরুদ্ধে দুটি মামলা রয়েছে।

মাহবুব আরা বেগম গিনি গ্রেফতার হলেও তার ভাতিজা জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবীব রাজিব ও আওয়ামী লীগ নেতা মৃদুল মোস্তাফিজ ঝন্টু এখনো ধরা-ছোঁয়ার বাইরে রয়েছেন।

ই/অ

বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।
সেহরির শেষ সময় - ভোর ৪:৩৫
ইফতার শুরু - সন্ধ্যা ৫:৪৫
  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৪:৪০
  • ১১:৫০
  • ৪:০৩
  • ৫:৪৫
  • ৬:৫৮
  • ৫:৫১