দীর্ঘদিনের খরায় চৌচির হওয়া গোকুল ব্রিজের দুপাশে বিল বৃষ্টির পানি আর উপর থেকে নেমে আসা স্রোতের ঢলে সয়লাব হয়েছে। ব্রিজ থেকে তাকালে চারিদিকে শুধু পানি আর পানি। জলরাশিতে পরিপূর্ণ বিল তার অপরূপ সৌন্দর্য বিছিয়ে পর্যটকদের যেন হাতছানি দিয়ে ডাকছে।
পানির উচ্চতা খুব বেশি না হলেও চারিদিকের থৈ থৈ পানি দৃশ্য দেখতে অগণিত দর্শনার্থীগণ ভিড় জমিয়ে চলেছেন। ধামইরহাটে জাতীয় উদ্যান আলতাদিঘী ব্যতীত তেমন কোনো দর্শনীয় স্থান না থাকায় আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা সকল শ্রেণির মানুষ এই বিলের সৌন্দর্য উপভোগ করছেন। আর যেখানেই লোক সমাগম সেখানেই ব্যবসা। চানাচুর, বারোভাজা, ফুচকা, আচার, চা-বিস্কুট ইত্যাদি ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীগণও সেখানেই ভিড় জমিয়েছেন দুটো পয়সা রোজগারের জন্য। সব মিলিয়ে মুখরিত গোকুল ব্রিজ এবং আশপাশের এলাকা। এদিকে পর্যটকদের শৃঙ্খলা রক্ষায় পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নিয়েছেন আড়ানগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোসাদ্দেকুর রহমান। তিনি জানান, “গোকুল বিল ও ব্রিজকে কেন্দ্র করে আগত দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় গ্রাম পুলিশ নিযুক্ত করা হয়েছে। এতে দর্শনার্থীদের প্রতিক্রিয়া অত্যন্ত উৎসাহব্যঞ্জক।” বিলের চারিপাশে গ্রামের বৃক্ষরাজি দিয়ে ঘেরা মনোমুগ্ধকর এই পরিবেশ দেখতে আসা রাজু কুমার শীল নামের এক পর্যটক বলেন, “গোকুল বিলের এই প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আমাকে মুগ্ধ করেছে। বৃষ্টির পানিতে ডুবে থাকা বিলের দৃশ্য দেখতে অসাধারণ।
বন্ধুদেরকে নিয়ে এখানে অপরূপ দৃশ্য উপভোগ করার মজাই আলাদা। আর ভরপুর বন্যায় যদি কখনো রাস্তার কয়েক ইঞ্চি উপর দিয়ে স্রোত প্রবাহিত হয় সেই ঠাণ্ডা-গরম পানিতে পা ভিজিয়ে হাসিখুশি চলাচলের উপলব্ধি শৈশবের স্মৃতিতে হারিয়ে যাওয়ার মতো।” অসংখ্য পর্যটকের আনাগোনা স্থানীয় অধিবাসীদের মনেও আনন্দের দোলা দিয়েছে বলে স্থানীয়রা জানান।
গোকুল গ্রামের অধিবাসী গোলজার হোসেন জানান, “আড়ানগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোসাদ্দেকুর রহমান পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন।” পর্যটকদের আনাগোনায় ক্ষুদ্র ভ্রাম্যমাণ দোকানীদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাও হয়েছে। জনস্বার্থে বিলের বুক চিরে নির্মিত রাস্তা এবং ব্রিজ পুরো বর্ষাকাল তার নিজস্ব সৌন্দর্যে শোভা বিলিয়ে যাবে বলে স্থানীয়রা জানান।