কিশোরগঞ্জে শ্রীশ্রী জিউর আখড়ায় শারদীয় দুর্গাপূজা মন্ডপের মূর্তি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। তবে মন্দির পাহারায় থাকা পাঁচ যুবকের কেউ বলতে পারছে না কে এই ঘটনা ঘটিয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) ভোর রাতে বত্রিশ মনিপুরঘাট এলাকায় এ ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় স্থানীয় মুসলিমরা নিন্দা জানিয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে এই প্রথম শ্রী শ্রী গোপীনাথ জিউর আখড়ায় দূর্গা প্রতিমা বানানোর কাজ চলছিল। গত ভোর রাতে নিরাপত্তার কারণে পাহারায় ছিলেন স্থানীয় গোপীনাথ সংঘের পাঁচ যুবক। রাত চারটা পর্যন্ত সংগঠনের পাঁচ সদস্য জেগে ছিলেন। এরপর থেকে ভোর পাঁচটার মধ্যে দুর্বৃত্তরা প্রতিমা ভাঙচুর করে। নিরাপত্তার স্বার্থে পূজা উপলক্ষে মন্দিরে সিসি ক্যামেরা গতকাল বুধবার লাগানোর কথা থাকলেও বৃষ্টির জন্য তা লাগানো হয়নি।
গোপীনাথ সংঘের সহসভাপতি সুমন চন্দ্র সরকার বলেন, প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় আমরা মর্মাহত। আমাদের এলাকায় এই ঘটনা কখনো ঘটেনি। পূজা করতে দূরে যেতে হয় বলে এলাকায় প্রথমবারের মতো আয়োজন করা হয়েছে। সবার আনন্দ মাটি হয়ে গেছে এ ঘটনায়। প্রশাসনের কাছে বিচার দাবি করছি।
বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ ডা. মাওলানা রাকিবুল ইসলাম ফারুকী বলেন, ইসলাম সকল ধর্মের মানুষের সাথে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের কথা বলে। রাসুল সা.যখন মদীনা মুনাওয়ারায় হিজরত করেন, সেখানে সব ধর্মের অনুসারীদের নিয়ে এক উম্মাহ ও জাতি গঠন করেছিলেন। মূর্তিপূজক মূর্তিপূজা করতে পারবে এবং তার ধর্ম অনুসারে চলতে পারবে। এমনকি রাসুল সা. এর কাছে অন্য ধর্মের কেউ বিচারের জন্য আসলে তাকে ইসলামি আইন অনুসারে বিচার করেননি বরং তাদের ধর্মের বিধান অনুসারে বিচার করতে বলেছেন।
আমাদের মসজিদে হামলা হলে যেমন আমাদের মনে আঘাত লাগে,হিন্দু সম্প্রদায়ের মন্দিরে হামলা হলে একইভাবে তাদের মনে আঘাত হানে। অন্যায়ভাবে তাদের মূর্তি ভাঙা এক বড় জুলুম। আল্লাহ জুলুম পছন্দ করেন না। আল্লাহ সবসময় মাজলুমের পক্ষে।মজলুম হিন্দু হলেও আল্লাহ হিন্দুর পক্ষ নেন। আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা আমাদের সবাইকে সুবোধ নসিব করুন। আমিন।
ঘটনার খবর পেয়ে সকালে জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারের দাবীতে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা বিক্ষোভ মিছিল করেছে।