ঢাকা ০৪:৩৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম:
Logo চাঁদা না দেওয়ায় বাড়ি নির্মাণে বাধা, ভূমি দখলচেষ্টা ও হত্যার হুমকির Logo ইকরা গার্মেন্টসের উদ্যোগে শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ Logo আবার মাইনাস তৎপরতায় ডিপ স্টেট: মাসুদ কামাল Logo বেগম খালেদা জিয়া, তারেক রহমান ও বিএনপি নিয়ে নতুন ষড়যন্ত্র Logo পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি বাস্তবায়নের দাবিতে খাগড়াছড়িতে সংবাদ সম্মেলন Logo পানছড়িতে অবৈধ কাঠ আটক করেছে বিজিবি Logo পানছড়িতে সেনাবাহিনীর মতবিনিময়, উপহার ও চিকিৎসা সেবা প্রদান Logo কিশোরগঞ্জে রওজা মনি হত্যার বিচার দাবিতে গ্রামবাসীর মানববন্ধন Logo ধানের শীষ প্রতীকের পক্ষে রেজাউল করিম খান চুন্নুর সমর্থকদের গণমিছিল Logo পানছড়িতে শিক্ষার্থীর হাতে ওয়াদুদ ভূঁইয়া ফাউন্ডেশনের অনুদান তুলে দিলো স্বেচ্ছা সেবক দল

জঙ্গি দমনের নামে কি বাংলাদেশকেও টার্গেট করছে ভারত?

Astha DESK
  • আপডেট সময় : ০৫:৪৬:৩৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ মে ২০২৫
  • / ১১০০ বার পড়া হয়েছে

সাম্প্রতিক সময়ে ছয়টি বাংলাদেশি টিভি চ্যানেল ভারতে বন্ধ, বাড়ছে মিডিয়া নিয়ন্ত্রণ ও রাজনৈতিক বার্তা

ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কে অনেক উত্তেজনার কথা আমরা জানি, তবে একটি বিষয় খেয়াল করার মতো—ভারত কখনোই সরাসরি পাকিস্তান রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধের ঘোষণা দেয়নি। বরং প্রতিবারই তাদের বক্তব্য থাকে, তারা যুদ্ধ করছে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে। এই “জঙ্গি নির্মূল” কৌশলটাই ভারত আন্তর্জাতিকভাবে বৈধতা দিয়ে উপস্থাপন করে থাকে।

এই কৌশলের ধারাবাহিকতায় এখন অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন—ভারত কি বাংলাদেশেও সেই একই ছক প্রয়োগ করতে চাইছে?

এই প্রশ্ন একেবারেই অমূলক নয়। ভারতের পক্ষ থেকে সম্প্রতি বাংলাদেশের ছয়টি জনপ্রিয় টেলিভিশন চ্যানেলের ইউটিউব সম্প্রচার তাদের দেশে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ইউটিউব জানিয়েছে, এটি করা হয়েছে ভারত সরকারের অনুরোধে, “জাতীয় নিরাপত্তা ও জনশৃঙ্খলা” রক্ষার অজুহাতে।

ব্লক হওয়া চ্যানেলগুলোর তালিকা:

1. যমুনা টিভি – ২৫.৭ মিলিয়ন সাবস্ক্রাইবার

2. সময় টিভি – ২৫ মিলিয়নেরও বেশি

3. একাত্তর টিভি – ১৪ মিলিয়ন+

4. ডিবিসি নিউজ – ৭.৩২ মিলিয়ন+

5. বাংলাভিশন নিউজ – ৭.৯ মিলিয়ন+

6. মোহনা টিভি

এগুলো কেবল ইউটিউব চ্যানেল নয়, বাংলাদেশের জনপ্রিয় গণমাধ্যমের কণ্ঠস্বর। এই চ্যানেলগুলোর সম্প্রচার বন্ধ করাকে শুধুমাত্র প্রযুক্তিগত কোনো সিদ্ধান্ত বলে মনে করার সুযোগ নেই। বরং এটি একটি কৌশলগত ও রাজনৈতিক বার্তা, যা ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কে উত্তেজনার ইঙ্গিত বহন করে।

ভারতের কিছু সংবাদমাধ্যম দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশকে ‘জঙ্গি কার্যকলাপ’, ‘অনুপ্রবেশ’, কিংবা ‘র‍্যাডিক্যাল’ প্রবণতার দেশ হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করছে। এই ধরনের ন্যারেটিভ কোনো কাকতাল নয়, বরং ভবিষ্যতের বড় ধরনের পদক্ষেপের ‘মনস্তাত্ত্বিক প্রস্তুতি’ হিসেবেও কাজ করতে পারে।

বাংলাদেশ একটি ধর্মনিরপেক্ষ, সংবিধানসম্মত রাষ্ট্র এবং জঙ্গিবাদ দমনেই বরাবর কঠোর অবস্থান নিয়েছে। ভারতের মিডিয়ায় বা রাষ্ট্রীয় মহলে যারা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বাংলাদেশকে অন্যরকমভাবে উপস্থাপন করছে, তাদের আচরণ বন্ধ হওয়া দরকার।

দুই দেশের সম্পর্কের ভারসাম্য বজায় রাখতে হলে উস্কানিমূলক পদক্ষেপ, মিডিয়া নিয়ন্ত্রণ, এবং “জঙ্গি” ছুতোয় আগ্রাসনের ভাষা—এসব থেকে বিরত থাকতেই হবে।

সতর্কতা এবং কূটনৈতিক জবাবদিহির সময় এখন। বাংলাদেশকে নিজের গণমাধ্যম, ভৌগোলিক মর্যাদা এবং আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তি রক্ষায় আরও সরব হতে হবে।

জঙ্গি দমনের নামে কি বাংলাদেশকেও টার্গেট করছে ভারত?

আপডেট সময় : ০৫:৪৬:৩৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ মে ২০২৫

সাম্প্রতিক সময়ে ছয়টি বাংলাদেশি টিভি চ্যানেল ভারতে বন্ধ, বাড়ছে মিডিয়া নিয়ন্ত্রণ ও রাজনৈতিক বার্তা

ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কে অনেক উত্তেজনার কথা আমরা জানি, তবে একটি বিষয় খেয়াল করার মতো—ভারত কখনোই সরাসরি পাকিস্তান রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধের ঘোষণা দেয়নি। বরং প্রতিবারই তাদের বক্তব্য থাকে, তারা যুদ্ধ করছে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে। এই “জঙ্গি নির্মূল” কৌশলটাই ভারত আন্তর্জাতিকভাবে বৈধতা দিয়ে উপস্থাপন করে থাকে।

এই কৌশলের ধারাবাহিকতায় এখন অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন—ভারত কি বাংলাদেশেও সেই একই ছক প্রয়োগ করতে চাইছে?

এই প্রশ্ন একেবারেই অমূলক নয়। ভারতের পক্ষ থেকে সম্প্রতি বাংলাদেশের ছয়টি জনপ্রিয় টেলিভিশন চ্যানেলের ইউটিউব সম্প্রচার তাদের দেশে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ইউটিউব জানিয়েছে, এটি করা হয়েছে ভারত সরকারের অনুরোধে, “জাতীয় নিরাপত্তা ও জনশৃঙ্খলা” রক্ষার অজুহাতে।

ব্লক হওয়া চ্যানেলগুলোর তালিকা:

1. যমুনা টিভি – ২৫.৭ মিলিয়ন সাবস্ক্রাইবার

2. সময় টিভি – ২৫ মিলিয়নেরও বেশি

3. একাত্তর টিভি – ১৪ মিলিয়ন+

4. ডিবিসি নিউজ – ৭.৩২ মিলিয়ন+

5. বাংলাভিশন নিউজ – ৭.৯ মিলিয়ন+

6. মোহনা টিভি

এগুলো কেবল ইউটিউব চ্যানেল নয়, বাংলাদেশের জনপ্রিয় গণমাধ্যমের কণ্ঠস্বর। এই চ্যানেলগুলোর সম্প্রচার বন্ধ করাকে শুধুমাত্র প্রযুক্তিগত কোনো সিদ্ধান্ত বলে মনে করার সুযোগ নেই। বরং এটি একটি কৌশলগত ও রাজনৈতিক বার্তা, যা ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কে উত্তেজনার ইঙ্গিত বহন করে।

ভারতের কিছু সংবাদমাধ্যম দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশকে ‘জঙ্গি কার্যকলাপ’, ‘অনুপ্রবেশ’, কিংবা ‘র‍্যাডিক্যাল’ প্রবণতার দেশ হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করছে। এই ধরনের ন্যারেটিভ কোনো কাকতাল নয়, বরং ভবিষ্যতের বড় ধরনের পদক্ষেপের ‘মনস্তাত্ত্বিক প্রস্তুতি’ হিসেবেও কাজ করতে পারে।

বাংলাদেশ একটি ধর্মনিরপেক্ষ, সংবিধানসম্মত রাষ্ট্র এবং জঙ্গিবাদ দমনেই বরাবর কঠোর অবস্থান নিয়েছে। ভারতের মিডিয়ায় বা রাষ্ট্রীয় মহলে যারা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বাংলাদেশকে অন্যরকমভাবে উপস্থাপন করছে, তাদের আচরণ বন্ধ হওয়া দরকার।

দুই দেশের সম্পর্কের ভারসাম্য বজায় রাখতে হলে উস্কানিমূলক পদক্ষেপ, মিডিয়া নিয়ন্ত্রণ, এবং “জঙ্গি” ছুতোয় আগ্রাসনের ভাষা—এসব থেকে বিরত থাকতেই হবে।

সতর্কতা এবং কূটনৈতিক জবাবদিহির সময় এখন। বাংলাদেশকে নিজের গণমাধ্যম, ভৌগোলিক মর্যাদা এবং আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তি রক্ষায় আরও সরব হতে হবে।