দুইদিন ধরে লালমনিরহাট শহরে একটি শিয়াল জাতীয় প্রাণীর আক্রমণে ১৩ জন আহত হয়েছে। গতকাল রাতে শহরের একাধিক স্থানে প্রাণীটির আক্রমনের শিকার হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন আহতরা। প্রাণীটির হামলার ধরণ দেখে অনেকেই তাকে নেকড়ে বলে মনে করছেন। আবার বেশীরভাগ মানুষ এটিকে পাগলা শেয়াল বলে আখ্যায়িত করেছেন। তবে প্রাণীটি শহরের কয়েকটি স্থানে একসাথে থাকা কয়েকজন মানুষের মধ্যে আক্রমণ করেছে এবং মাংস খুবলে নেওয়ার চেষ্টা করেছে। শেয়াল বা কুকুর সাধারণত প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ থাকলে এমন হিংস্রভাবে আক্রমণের সাহস দেখায় না কিংবা মাংস খুবলে নেওয়ার মতো ঘটনা ঘটায় না। তাই এই প্রাণীটির হিংস্রতা ও হামলার ধরণ নেকড়ের আচরণের সাথে সদৃশ। তবে তথ্যানুযায়ী বাংলাদেশে নেকড়ের অস্তিত্ব নেই। পরিসংখ্যান অনুযায়ী বাংলাদেশে সর্বশেষ নেকড়ে পাওয়া যায় ১৯৪৯ সালে। কিন্তু ২০১৭ সালে সুন্দরবনের ভারতীয় অংশে একটি নেকড়ে পাওয়া যায়। সেসময় এটি বড় খবর ছিলো গবেষকদের কাছে। এরপর গত ২০১৯ সালে বরগুণা জেলায় একটি স্থাণীয়রা একটি শেয়াল সদৃশ প্রাণী মেরে ফেললে গবেষকগণ সেটিকে নেকড়ে বলে আখ্যায়িত করেন। সেসময় প্রাণীটি নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্যপ্রাণী গবেষক মুনতাসীর আকাশ গবেষণা করেন এবং বিদেশি গবেষকদের শরণাপন্ন হলে তারাও সেটিকে নেকড়ে বলে আখ্যায়িত করেন। দেশীয় গবেষকরা তাই মনে করেন বাংলাদেশে প্রাকৃতিক পরিবর্তনের সাথে নেকড়ে বিলুপ্ত মনে হলেও হয়তো কিছু নেকড়ে এখনো পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে টিকে থাকতে পারে। নেকড়ে শেয়াল ও কুকুর সদৃশ্ হওয়ায় বেশীরভাগ মানুষ তাকে শেয়াল বলেই মনে করেন। তবে লালমনিরহাটের প্রাণীটি কি তা অবশ্যই গবেষণার দাবি রাখে। এছাড়াও স্থানীয় প্রশাসন এ ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ নেবে বলে আশা করে শহরবাসী।
এমকে/আস্থা