মানুষের জীবনের সবচেয়ে অপ্রিয় সত্য হল একদিন তাকে মরতে হবে। ধ্রুব এই সত্যটি নিয়ে কারো কোনো বিতর্ক নেই। ভালো হোক, খারাপ হোক তাকে মরতে হবেই। কোনো ব্যক্তির মৃত্যু নিয়ে কোনো সন্দেহ তৈরি হলে বা কারো অস্বাভাবিক মৃত্যু হলে মূলত মুত্যুর সঠিক কারণ জানার জন্য ময়নাতদন্ত বা পোস্টমর্টেম এর প্রয়োজন হয়।
কিশোরগঞ্জের শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আধুনিক মর্গে লাশের ময়নাতদন্ত করতে মর্গের সামনে খোলা আকাশের নিচে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে লাশের সঙ্গে আসা স্বজনদের। শোকাহত পরিবারের আর্তনাদ,চিৎকার চেঁচামেচিতে হাসপাতাল প্রাঙ্গণ ভারি হয়ে পড়লেও সমস্যা সমাধানে কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নেই বললেই চলে। স্বজনহারা মানুষগুলোকে প্রতিনিয়ত এই ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। সরেজমিনে হাসপাতালের মর্গে গিয়ে দেখা যায় এ ব্যাপারে ডাক্তারদের উদাসীনতা গা-ছাড়া মনোভাব।
বুধবার (১৫ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টায় কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলায় বালু ভর্তি ট্রলির চাপায় সুজয় (১০) সুইপার নামে একজনের মৃত্যু হলে ময়নাতদন্তের জন্য বিকাল ৪টায় শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আধুনিক মর্গে আনা হয়। পরে মরদেহ গ্রহণ না করে হাসপাতালের মর্গের সামনে খোলা আকাশের নিচে ফেলে রাখতে দেখা যায়। এজন্য চিকিৎসকের উদাসীনতাকে দায়ী করেছেন স্বজনেরা। স্বজনরা জানান, বুধবার বিকাল ৪টার দিকে পুলিশ সুজয় এর মৃতদেহ হাসপাতালের মর্গে নিয়ে আসে কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সুজয়ের মরদেহ গ্রহন না করে মর্গের সামনে খোলা আকাশের নিচে ফেলে রাখে। এদিকে কুয়াশার রাতে লাশের গন্ধে শিয়াল দলবেঁধে মরদেহ নিতে আসে। শুধু তাই নয়, হাসপাতালের ওয়ার্ডগুলো ঘুরলেও না-কি এমন অনেক লাশ পাওয়া যাবে ময়নাতদন্তের জন্য ফেলে রাখা হয়েছে।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য মতে, প্রতিবছর কিশোরগঞ্জ জেলাসহ পাশর্^বর্তী নান্দাইল ও জিআরপি থানার প্রায় ৩২০ থেকে ৩৮০টি লাশের ময়নাতদন্ত হয়ে থাকে। সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজে স্থাপিত আধুনিক মর্গে ৯টি লাশ সংরক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে। প্রতিদিন ৩টি লাশ ময়নাতদন্ত করার কথা।
এ বিষয়ে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. হেলাল উদ্দিন এর সাথে কথা বললে তিনি বলেন, ময়নাতদন্তের ব্যাপারে আমাকে বলে কোনো লাভ নাই ময়নাতদন্তের বিষয়টা একান্তই কলেজ কর্তৃপক্ষের।