ঢাকা ১২:০৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ২০ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কিশোরগঞ্জ-১ আসনে ত্যাগের প্রশংসায় ভিপি সোহেলের জয়গান

Doinik Astha
Doinik Astha
  • আপডেট সময় : ০৯:০০:৩১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ নভেম্বর ২০২৫
  • / ১০৯০ বার পড়া হয়েছে

খালেদ সাইফুল্লাহ ভিপি সোহেল

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে রাজনৈতিক অঙ্গন সরব হয়ে উঠেছে। ইতোমধ্যে বিএনপি ২৩৭টি আসনে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে।

গতকাল (৩ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে দলীয় প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

কিশোরগঞ্জ জেলার ছয়টি আসনের মধ্যে চারটিতে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হলেও কিশোরগঞ্জ-১ (কিশোরগঞ্জ সদর–হোসেনপুর) ও কিশোরগঞ্জ-৫ (নিকলী–বাজিতপুর) আসন ফাঁকা রাখা হয়েছে। এই দুটি আসন ফাঁকা রাখার পর থেকেই স্থানীয় রাজনীতিতে শুরু হয়েছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। এসব আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছে এক পরিচিত নাম ভিপি খালেদ সাইফুল্লাহ সোহেল।

ছাত্র রাজনীতি থেকে উঠে আসা এই নেতা আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে একাধিকবার নির্যাতন ও জেলজীবন ভোগ করেছেন। সেই রাজনৈতিক ইতিহাসই এখন নির্বাচনের প্রাক্কালে নতুন করে আলোচনায় এসেছে।

গুরুদয়াল সরকারি কলেজে অধ্যয়নকালে সোহেল সক্রিয়ভাবে যুক্ত হন ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে। পরে কলেজ ছাত্র সংসদ নির্বাচনে ভিপি (ভাইস প্রেসিডেন্ট) হিসেবে দায়িত্ব পান। তরুণ বয়সেই তিনি সাহসী সিদ্ধান্ত, সাংগঠনিক দক্ষতা ও ছাত্রদের স্বার্থ রক্ষার জন্য কঠোর অবস্থানের মাধ্যমে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন।

গুরুদয়াল সরকারি কলেজের সাবেক ভিপি মো. বাহার মিয়া তাঁর স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বলেন, ভিপি সোহেল শুধু নেতা ছিলেন না, তিনি কলেজের সকল ছাত্রদের অভিভাবকের মতো ছিলেন। বিশেষ করে কঠিন সময়ে আমরা যাকে পাশে পেয়েছি, তিনি সোহেল ভাই।

রাজনৈতিকবিভিন্ন আন্দোলন, সভা-সমাবেশ ও কর্মসূচিতে সামনের সারিতে থাকায় তাঁকে বারবার রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হতে হয়েছে। রাজনীতিতে সক্রিয় থাকার কারণে একাধিকবার গ্রেফতার ও কারাবরণ করেছেন খালেদ সাইফুল্লাহ সোহেল।

স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, এসব মামলাগুলো ছিল রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। সোহেল সাহেবকে দমন করার জন্যই এসব মামলা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তিনি ভেঙে পড়েননি। বরং আরও দৃঢ় হয়েছেন।

ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে সাধারণ মানুষের আলোচনা থেকে বোঝা যায়, তাঁর অতীত সংগ্রাম ও ত্যাগ ভুলে যায়নি কেউ।

স্থানীয় এক ব্যবসায়ী বলেন, আমরা দেখেছি সোহেল ভাইকে কেমন নির্যাতন সহ্য করতে হয়েছে। এত কিছুর পরও তিনি মানুষের পাশে থেকেছেন। সেই স্মৃতি এখনো আমাদের মনে গেঁথে আছে।

বিশ্লেষকদের মতে, খালেদ সাইফুল্লাহ সোহেল তাঁর অতীত সংগ্রাম ও নির্যাতনের অভিজ্ঞতা নিয়ে আজও রাজনৈতিক অঙ্গনে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে রয়েছেন। জনগণ আশা করছে, সামনে আসন্ন নির্বাচনে তাঁর ভূমিকা হবে কার্যকর ও সাহসী।

কিশোরগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফেরদৌস আহমেদ নেভিন বলেন, যিনি অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন, আমরা তাঁকেই চাই সামনে। কারণ জনগণের স্বার্থে যে দাঁড়ায়, তিনিই প্রকৃত নেতা।

নিজের রাজনৈতিক অবস্থান সম্পর্কে ভিপি খালেদ সাইফুল্লাহ সোহেল বলেন, গত ১৭ বছরে শেখ হাসিনার সঙ্গে আপোষহীনভাবে থাকা, এটাই ছিল মানুষের প্রত্যাশা। মানুষ চেয়েছিল, কেউ যেন তাঁর সঙ্গে আপোষ না করে। সেই কারণেই আমি কখনো আপোষ করিনি। আমি যে আদর্শ ধারণ করি, তা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের শেখানো আদর্শ, আদর্শকে ধারণ করেই রাজনীতি করতে হয়।

সবচেয়ে বড় কথা, আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া গত ৬ বছর ধরে জেলখানায় রয়েছেন, তবুও তিনি আপোষহীন। আমাদের নেতা তারেক রহমানও ১৭ বছর দেশান্তরে থেকেও অবিচলভাবে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন। আমরা তাকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, আমরা থাকব, লড়ব। সবাই থাকেনি, কিন্তু আমি থেকেছি।

আমার ভালো লাগে যখন অনেকে আফসোস করে বলে, আমি যদি থাকতাম, তবে সোহেল ভাইয়ের মতো হতাম। তখন মনে হয়, আমি দেশ ও জাতির জন্য কিছু করতে পেরেছি বলেই মানুষ এভাবে ভাবে। আপনি যদি ভালো কাজ করেন, মানুষের জন্য কিছু করেন, মানুষ আপনাকে মনে রাখবে এবং আপনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবে।

কিশোরগঞ্জ-১ আসনে ত্যাগের প্রশংসায় ভিপি সোহেলের জয়গান

আপডেট সময় : ০৯:০০:৩১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ নভেম্বর ২০২৫

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে রাজনৈতিক অঙ্গন সরব হয়ে উঠেছে। ইতোমধ্যে বিএনপি ২৩৭টি আসনে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে।

গতকাল (৩ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে দলীয় প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

কিশোরগঞ্জ জেলার ছয়টি আসনের মধ্যে চারটিতে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হলেও কিশোরগঞ্জ-১ (কিশোরগঞ্জ সদর–হোসেনপুর) ও কিশোরগঞ্জ-৫ (নিকলী–বাজিতপুর) আসন ফাঁকা রাখা হয়েছে। এই দুটি আসন ফাঁকা রাখার পর থেকেই স্থানীয় রাজনীতিতে শুরু হয়েছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। এসব আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছে এক পরিচিত নাম ভিপি খালেদ সাইফুল্লাহ সোহেল।

ছাত্র রাজনীতি থেকে উঠে আসা এই নেতা আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে একাধিকবার নির্যাতন ও জেলজীবন ভোগ করেছেন। সেই রাজনৈতিক ইতিহাসই এখন নির্বাচনের প্রাক্কালে নতুন করে আলোচনায় এসেছে।

গুরুদয়াল সরকারি কলেজে অধ্যয়নকালে সোহেল সক্রিয়ভাবে যুক্ত হন ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে। পরে কলেজ ছাত্র সংসদ নির্বাচনে ভিপি (ভাইস প্রেসিডেন্ট) হিসেবে দায়িত্ব পান। তরুণ বয়সেই তিনি সাহসী সিদ্ধান্ত, সাংগঠনিক দক্ষতা ও ছাত্রদের স্বার্থ রক্ষার জন্য কঠোর অবস্থানের মাধ্যমে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন।

গুরুদয়াল সরকারি কলেজের সাবেক ভিপি মো. বাহার মিয়া তাঁর স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বলেন, ভিপি সোহেল শুধু নেতা ছিলেন না, তিনি কলেজের সকল ছাত্রদের অভিভাবকের মতো ছিলেন। বিশেষ করে কঠিন সময়ে আমরা যাকে পাশে পেয়েছি, তিনি সোহেল ভাই।

রাজনৈতিকবিভিন্ন আন্দোলন, সভা-সমাবেশ ও কর্মসূচিতে সামনের সারিতে থাকায় তাঁকে বারবার রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হতে হয়েছে। রাজনীতিতে সক্রিয় থাকার কারণে একাধিকবার গ্রেফতার ও কারাবরণ করেছেন খালেদ সাইফুল্লাহ সোহেল।

স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, এসব মামলাগুলো ছিল রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। সোহেল সাহেবকে দমন করার জন্যই এসব মামলা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তিনি ভেঙে পড়েননি। বরং আরও দৃঢ় হয়েছেন।

ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে সাধারণ মানুষের আলোচনা থেকে বোঝা যায়, তাঁর অতীত সংগ্রাম ও ত্যাগ ভুলে যায়নি কেউ।

স্থানীয় এক ব্যবসায়ী বলেন, আমরা দেখেছি সোহেল ভাইকে কেমন নির্যাতন সহ্য করতে হয়েছে। এত কিছুর পরও তিনি মানুষের পাশে থেকেছেন। সেই স্মৃতি এখনো আমাদের মনে গেঁথে আছে।

বিশ্লেষকদের মতে, খালেদ সাইফুল্লাহ সোহেল তাঁর অতীত সংগ্রাম ও নির্যাতনের অভিজ্ঞতা নিয়ে আজও রাজনৈতিক অঙ্গনে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে রয়েছেন। জনগণ আশা করছে, সামনে আসন্ন নির্বাচনে তাঁর ভূমিকা হবে কার্যকর ও সাহসী।

কিশোরগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফেরদৌস আহমেদ নেভিন বলেন, যিনি অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন, আমরা তাঁকেই চাই সামনে। কারণ জনগণের স্বার্থে যে দাঁড়ায়, তিনিই প্রকৃত নেতা।

নিজের রাজনৈতিক অবস্থান সম্পর্কে ভিপি খালেদ সাইফুল্লাহ সোহেল বলেন, গত ১৭ বছরে শেখ হাসিনার সঙ্গে আপোষহীনভাবে থাকা, এটাই ছিল মানুষের প্রত্যাশা। মানুষ চেয়েছিল, কেউ যেন তাঁর সঙ্গে আপোষ না করে। সেই কারণেই আমি কখনো আপোষ করিনি। আমি যে আদর্শ ধারণ করি, তা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের শেখানো আদর্শ, আদর্শকে ধারণ করেই রাজনীতি করতে হয়।

সবচেয়ে বড় কথা, আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া গত ৬ বছর ধরে জেলখানায় রয়েছেন, তবুও তিনি আপোষহীন। আমাদের নেতা তারেক রহমানও ১৭ বছর দেশান্তরে থেকেও অবিচলভাবে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন। আমরা তাকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, আমরা থাকব, লড়ব। সবাই থাকেনি, কিন্তু আমি থেকেছি।

আমার ভালো লাগে যখন অনেকে আফসোস করে বলে, আমি যদি থাকতাম, তবে সোহেল ভাইয়ের মতো হতাম। তখন মনে হয়, আমি দেশ ও জাতির জন্য কিছু করতে পেরেছি বলেই মানুষ এভাবে ভাবে। আপনি যদি ভালো কাজ করেন, মানুষের জন্য কিছু করেন, মানুষ আপনাকে মনে রাখবে এবং আপনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবে।