ঢাকা ০৯:১৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম:
Logo চাঁদা না দেওয়ায় বাড়ি নির্মাণে বাধা, ভূমি দখলচেষ্টা ও হত্যার হুমকির Logo ইকরা গার্মেন্টসের উদ্যোগে শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ Logo আবার মাইনাস তৎপরতায় ডিপ স্টেট: মাসুদ কামাল Logo বেগম খালেদা জিয়া, তারেক রহমান ও বিএনপি নিয়ে নতুন ষড়যন্ত্র Logo পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি বাস্তবায়নের দাবিতে খাগড়াছড়িতে সংবাদ সম্মেলন Logo পানছড়িতে অবৈধ কাঠ আটক করেছে বিজিবি Logo পানছড়িতে সেনাবাহিনীর মতবিনিময়, উপহার ও চিকিৎসা সেবা প্রদান Logo কিশোরগঞ্জে রওজা মনি হত্যার বিচার দাবিতে গ্রামবাসীর মানববন্ধন Logo ধানের শীষ প্রতীকের পক্ষে রেজাউল করিম খান চুন্নুর সমর্থকদের গণমিছিল Logo পানছড়িতে শিক্ষার্থীর হাতে ওয়াদুদ ভূঁইয়া ফাউন্ডেশনের অনুদান তুলে দিলো স্বেচ্ছা সেবক দল

আমরা ধর্ষক নই,দর্শক!

News Editor
  • আপডেট সময় : ১২:০৫:১২ অপরাহ্ন, সোমবার, ৫ অক্টোবর ২০২০
  • / ১১৮৬ বার পড়া হয়েছে
অশান্তির চরমে পৌঁছে এখন আমরা কেবল অস্থিরচিত্তে অনৈতিক উপায়ে মুক্তির পথ খুঁজছি। কিশোরগঞ্জে পাঁচ বছরের শিশু থেকে মুন্সিগঞ্জের সত্তর বছরের বৃদ্ধা, বেগমগঞ্জের গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে ধর্ষণ,  স্বামীকে বেঁধে রেখে ধর্ষণ, চলন্ত বাসে ধর্ষণ, ট্রেনে ধর্ষণ। স্কুল,কলেজ, মাদরাসার শিক্ষক দ্বারা ধর্ষণ।
তারা কোথায় করেনি ধর্ষণ? এসব দেখলে মনে হয় ধর্ষক তার যৌবনে পুরোটা শক্তি দেশের মানচিত্রে প্রয়োগ করছে। শিশু,বউ,বোন, নিজের মেয়েকে ধর্ষণ করেও ক্ষান্ত হয়নি তার, দাদী-নানীতে পৌঁছে গেছে। ওদের লালসার শিকার থেকে দেশের এক বিঘত জায়গাও আজ সুরক্ষিত নয়।
আমরা সংবাদকর্মীরা হয়তো একদিন বড় শিরোনামে লিখবো ‘কবর থেকে লাশ তুলে ধর্ষণ’! এই দিন হয়তো আর বেশি দূর নয়। শুধু ধর্ষণ নয়, আরো কত ভাবেই না নির্যাতিত হচ্ছে নারী ও শিশু। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে অনেকে আত্মহত্যার মতো জঘন্য কাজে নিজেকে জড়িয়ে ফেলছে। কারণ একটাই, আমাদের কারো মনেই যেন শান্তি নেই। খুব কষ্ট আজ পেয়ে বসেছে আমাদের।
এ যেন হেলাল হাফিজের কবিতা :
কষ্ট নেবে কষ্ট
হরেক রকম কষ্ট আছে
কষ্ট নেবে কষ্ট!
লাল কষ্ট নীল কষ্ট কাঁচ হলুদ রঙের কষ্ট…
মাল্টি-কালার কষ্ট আছে
কষ্ট নেবে কষ্ট…
অনৈতিকতা ও অশ্লীলতার সর্বশেষ শিকার মুন্সিগঞ্জের ৭০ বছরের বৃদ্ধ মহিলা ও নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের (৩৫) বছরের নারী। সারাদেশের মানুষ এখন স্বতঃস্ফূর্তভাবে এমন অন্যায়ের প্রতিবাদে সোচ্চার। এ প্রেক্ষাপটে ধর্ষণ প্রতিরোধে ইসলামী অনুশাসন সম্পর্কে আলোকপাত করলাম।
ইসলাম সবসময় নারীর অধিকার ও মর্যাদার নিশ্চয়তা দেয়। নারীর অধিকার ও মর্যাদা প্রসঙ্গে পবিত্র কুরআনের একটি সূরার নাম ‘নিসা’ বা নারী। আবার সূরা বাকারা, আল ইমরান, মায়েদা, আহযাব, নূর ইত্যাদিতে নারীর অধিকার ও মর্যাদা সংক্রান্ত বিস্তারিত বর্ণনা পাওয়া যায়। প্রসঙ্গত, বলতে হয় ‘ধর্ষণ’ বা ব্যভিচারের শাস্তি নিশ্চিত করে সমাজে শান্তি, নিরাপত্তা ও নারী অধিকার সুরক্ষিত করা ইসলামের শান্তিময় সমাজ বিনির্মাণের অন্যতম অঙ্গীকার।
ইসলামে ধর্ষণ বলতে বিবাহবহির্ভূত যে কোনো যৌনচার, সঙ্গম বা অপরাধকে “যিনা” বা ব্যভিচার হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। যিনা সুস্পষ্ট হারাম ও নিন্দনীয় অপরাধ। মহান আল্লাহ্ বলেন, “আর ব্যভিচারের কাছেও যেয়ো না। নিশ্চয় এটা অশ্লীল কাজ এবং মন্দ পথ” (বাণী ইসরাইল : ৩২)। ইমাম কুরতুবী বলেন, ‘যিনা করো না’ এর চেয়ে ‘যিনার কাছেও যেয়ো না’ অনেক বেশি কঠোর বাক্য। অর্থৎ যিনার পর্যায়ভুক্ত সবকিছুই হারাম।
ইসলামের দৃষ্টিতে ব্যভিচারী যদি বিবাহিত হয়, তাহলে তাকে প্রকাশ্যে পাথর মেরে মৃত্যুদ- দেয়া এবং যদি অবিবাহিত হয়, তাহলে তাকে প্রকাশ্যে একশত বেত্রাঘাত করাই হলো একমাত্র শাস্তি। নারী-পুরুষ উভয়ের ক্ষেত্রে একই বিধান প্রযোজ্য। মহান আল্লাহ্ বলেন, “ব্যভিচারিণী নারী ব্যভিচারী পুরুষ; তাদের প্রত্যেককে একশ’ করে বেত্রাঘাত কর। আল্লাহর বিধান কার্যকর করণে তাদের প্রতি যেন তোমাদের মনে দয়ার উদ্রেক না হয়, যদি তোমরা আল্লাহর প্রতি ও পরকালের প্রতি বিশ্বাসী হয়ে থাক।
ঢাকার স্পেশাল বিভাগীয় জজ, আলহাজ্ব রেজাউল করিম খান চুন্নুর কাছে ধর্ষণ প্রতিরোধ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “ধর্ষিতাকে তডীৎ ডি এন এ টেষ্ট করে অভিযুক্তের ডি এন এ টেষ্ট করে প্রাথমিক প্রমান সংরক্ষন করতে হবে। তৎপর পুলিশ বা তদন্তকারীদেরকে ৭ দিনের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা সহ তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের পর পরবর্তী ৩০ দিনের  মধ্যে বিচার নিষ্পত্তি করার বিধান জরুরী ভত্তিতে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল কতৃক বিচার নিষ্পত্তির করতে হবে। অপরাধ প্রমান হলে শাস্হি “মৃত্যুদন্ড”। রায় প্রচারের পরবর্তী ৭ দিনের মধ্যে মাত্র একবার আপীল করা যাবে যা ৩ জন বিচারপতির সমন্বয়ে গঠিত বেন্চ শুনানী করে সংখ্যাগরিষ্টের রায় পরবর্তী ৭ দিবসের মধ্যে কার্যকর করতে পারলেই এদেশে ধর্ষন বন্ধ করা সম্ভব হবে।”
লেখক:
রায়হান জামান

আমরা ধর্ষক নই,দর্শক!

আপডেট সময় : ১২:০৫:১২ অপরাহ্ন, সোমবার, ৫ অক্টোবর ২০২০
অশান্তির চরমে পৌঁছে এখন আমরা কেবল অস্থিরচিত্তে অনৈতিক উপায়ে মুক্তির পথ খুঁজছি। কিশোরগঞ্জে পাঁচ বছরের শিশু থেকে মুন্সিগঞ্জের সত্তর বছরের বৃদ্ধা, বেগমগঞ্জের গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে ধর্ষণ,  স্বামীকে বেঁধে রেখে ধর্ষণ, চলন্ত বাসে ধর্ষণ, ট্রেনে ধর্ষণ। স্কুল,কলেজ, মাদরাসার শিক্ষক দ্বারা ধর্ষণ।
তারা কোথায় করেনি ধর্ষণ? এসব দেখলে মনে হয় ধর্ষক তার যৌবনে পুরোটা শক্তি দেশের মানচিত্রে প্রয়োগ করছে। শিশু,বউ,বোন, নিজের মেয়েকে ধর্ষণ করেও ক্ষান্ত হয়নি তার, দাদী-নানীতে পৌঁছে গেছে। ওদের লালসার শিকার থেকে দেশের এক বিঘত জায়গাও আজ সুরক্ষিত নয়।
আমরা সংবাদকর্মীরা হয়তো একদিন বড় শিরোনামে লিখবো ‘কবর থেকে লাশ তুলে ধর্ষণ’! এই দিন হয়তো আর বেশি দূর নয়। শুধু ধর্ষণ নয়, আরো কত ভাবেই না নির্যাতিত হচ্ছে নারী ও শিশু। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে অনেকে আত্মহত্যার মতো জঘন্য কাজে নিজেকে জড়িয়ে ফেলছে। কারণ একটাই, আমাদের কারো মনেই যেন শান্তি নেই। খুব কষ্ট আজ পেয়ে বসেছে আমাদের।
এ যেন হেলাল হাফিজের কবিতা :
কষ্ট নেবে কষ্ট
হরেক রকম কষ্ট আছে
কষ্ট নেবে কষ্ট!
লাল কষ্ট নীল কষ্ট কাঁচ হলুদ রঙের কষ্ট…
মাল্টি-কালার কষ্ট আছে
কষ্ট নেবে কষ্ট…
অনৈতিকতা ও অশ্লীলতার সর্বশেষ শিকার মুন্সিগঞ্জের ৭০ বছরের বৃদ্ধ মহিলা ও নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের (৩৫) বছরের নারী। সারাদেশের মানুষ এখন স্বতঃস্ফূর্তভাবে এমন অন্যায়ের প্রতিবাদে সোচ্চার। এ প্রেক্ষাপটে ধর্ষণ প্রতিরোধে ইসলামী অনুশাসন সম্পর্কে আলোকপাত করলাম।
ইসলাম সবসময় নারীর অধিকার ও মর্যাদার নিশ্চয়তা দেয়। নারীর অধিকার ও মর্যাদা প্রসঙ্গে পবিত্র কুরআনের একটি সূরার নাম ‘নিসা’ বা নারী। আবার সূরা বাকারা, আল ইমরান, মায়েদা, আহযাব, নূর ইত্যাদিতে নারীর অধিকার ও মর্যাদা সংক্রান্ত বিস্তারিত বর্ণনা পাওয়া যায়। প্রসঙ্গত, বলতে হয় ‘ধর্ষণ’ বা ব্যভিচারের শাস্তি নিশ্চিত করে সমাজে শান্তি, নিরাপত্তা ও নারী অধিকার সুরক্ষিত করা ইসলামের শান্তিময় সমাজ বিনির্মাণের অন্যতম অঙ্গীকার।
ইসলামে ধর্ষণ বলতে বিবাহবহির্ভূত যে কোনো যৌনচার, সঙ্গম বা অপরাধকে “যিনা” বা ব্যভিচার হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। যিনা সুস্পষ্ট হারাম ও নিন্দনীয় অপরাধ। মহান আল্লাহ্ বলেন, “আর ব্যভিচারের কাছেও যেয়ো না। নিশ্চয় এটা অশ্লীল কাজ এবং মন্দ পথ” (বাণী ইসরাইল : ৩২)। ইমাম কুরতুবী বলেন, ‘যিনা করো না’ এর চেয়ে ‘যিনার কাছেও যেয়ো না’ অনেক বেশি কঠোর বাক্য। অর্থৎ যিনার পর্যায়ভুক্ত সবকিছুই হারাম।
ইসলামের দৃষ্টিতে ব্যভিচারী যদি বিবাহিত হয়, তাহলে তাকে প্রকাশ্যে পাথর মেরে মৃত্যুদ- দেয়া এবং যদি অবিবাহিত হয়, তাহলে তাকে প্রকাশ্যে একশত বেত্রাঘাত করাই হলো একমাত্র শাস্তি। নারী-পুরুষ উভয়ের ক্ষেত্রে একই বিধান প্রযোজ্য। মহান আল্লাহ্ বলেন, “ব্যভিচারিণী নারী ব্যভিচারী পুরুষ; তাদের প্রত্যেককে একশ’ করে বেত্রাঘাত কর। আল্লাহর বিধান কার্যকর করণে তাদের প্রতি যেন তোমাদের মনে দয়ার উদ্রেক না হয়, যদি তোমরা আল্লাহর প্রতি ও পরকালের প্রতি বিশ্বাসী হয়ে থাক।
ঢাকার স্পেশাল বিভাগীয় জজ, আলহাজ্ব রেজাউল করিম খান চুন্নুর কাছে ধর্ষণ প্রতিরোধ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “ধর্ষিতাকে তডীৎ ডি এন এ টেষ্ট করে অভিযুক্তের ডি এন এ টেষ্ট করে প্রাথমিক প্রমান সংরক্ষন করতে হবে। তৎপর পুলিশ বা তদন্তকারীদেরকে ৭ দিনের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা সহ তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের পর পরবর্তী ৩০ দিনের  মধ্যে বিচার নিষ্পত্তি করার বিধান জরুরী ভত্তিতে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল কতৃক বিচার নিষ্পত্তির করতে হবে। অপরাধ প্রমান হলে শাস্হি “মৃত্যুদন্ড”। রায় প্রচারের পরবর্তী ৭ দিনের মধ্যে মাত্র একবার আপীল করা যাবে যা ৩ জন বিচারপতির সমন্বয়ে গঠিত বেন্চ শুনানী করে সংখ্যাগরিষ্টের রায় পরবর্তী ৭ দিবসের মধ্যে কার্যকর করতে পারলেই এদেশে ধর্ষন বন্ধ করা সম্ভব হবে।”
লেখক:
রায়হান জামান