অনুমতি মিললেও হয়নি ডিম আমদানি, অজুহাত শুল্কের
স্টাফ রিপোর্টারঃ
১৫টি প্রতিষ্ঠানকে ১৫ কোটি ডিম আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়। ৩৯ দিনেও ডিম আসেনি, এলসি খোলা হয়েছে সাড়ে ১২ লাখের।
৩৩ শতাংশ আমদানি শুল্ক ও অন্যান্য খরচে লোকসানের আশঙ্কা।
ডিমের দাম নিয়ন্ত্রণে আমদানির অনুমতি পেয়েও ৩৯ দিন পেরিয়ে গেলেও ১৫টি প্রতিষ্ঠানের কোনোটিই ডিম আসেনি। ডিম না আনার কারণ হিসেবে প্রতিষ্ঠানগুলোর অজুহাত অতিরিক্ত শুল্ক ও অন্যান্য ঝুঁকি। অনুমতি পাওয়া দুটি প্রতিষ্ঠান সাড়ে ১২ লাখ ডিম আমদানির জন্য ঋণপত্র খুলেছে। তিন দফায় মোট ১৫ কোটি ডিম আমদানির অনুমতি দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। আমদানির ডিম না আসায় বাজারে দামেও কোনো প্রভাব নেই।
ডিম আমদানির অনুমতি পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, ভারতে একটি ডিমের দাম ৬ রুপির বেশি। যা বাংলাদেশি টাকায় ৭ টাকার কিছু বেশি। আমদানি শুল্ক ৩৩ শতাংশ। এতে প্রতিটি ডিমে শুল্ক ২ টাকার মতো। কার্টন কেনা, পরিবহন ব্যয়সহ অন্যান্য খরচ ধরলে ঢাকায় আনতে প্রতিটি ডিমে খরচ ১০ টাকা ৫০ পয়সার মতো। ভাঙার ঝুঁকিও আছে। এতে ডিম আমদানি করলে ক্ষতির মুখে পড়তে হবে।
এক কোটি ডিম আমদানির অনুমতি পাওয়া মেসার্স মীম এন্টারপ্রাইজের মালিক মোঃ ইয়ার হোসেন বলেন, তিনি ৫ লাখ ডিম আমদানির ঋণপত্র (এলসি) খুলেছেন। তবে নানা ধরনের সার্টিফিকেট সংগ্রহ ও অন্যান্য কাগজপত্র তৈরিতে দেরি হচ্ছে। শুরুতে অনেকে উৎসাহী হয়ে ডিম আমদানির ঝুঁকি নেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কী পরিমাণ ডিম আনা যাবে, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।
রিপা এন্টারপ্রাইজের মালিক শেখ আল মামুন আহমেদ বলেন, ‘সাড়ে ৭ লাখ ডিম আমদানির জন্য ঋণপত্র খুলেছি। পূজার কারণে ডিম আসতে দেরি হচ্ছে। প্রথম চালানে ২-৩ লাখ টাকা লোকসান হলেও আমদানি করব। কারণ, মন্ত্রীকে কথা দিয়েছি।
অতিরিক্ত শুল্ক, ভ্যাট ছাড়াও বার্ড ফ্লুমুক্ত সনদ সংগ্রহে সমস্যার কথা জানান টাইগার ট্রেডিংয়ের মালিক সাইফুর রহমান।
বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুমন হাওলাদার বলেন, খামারিরা খোলাবাজারে ডিম বিক্রির পর থেকে দাম কিছু কমেছে। দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে তাঁরা খোলাবাজারে ডিম বিক্রি অব্যাহত রাখবেন।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (আমদানি ও অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য অনুবিভাগ) মো. রুহুল আমিন বলেন, ডিম আমদানির শুল্ক ও অন্যান্য শর্ত জেনেশুনেই তাঁরা আবেদন করেছেন। এখন তো অজুহাত দেওয়া ঠিক নয়। তবে কাগজপত্রের বিষয়ে কলকাতায় নিয়োজিত কাউন্সেলরকে (বাণিজ্য) বলা হয়েছে। তিনি সব ধরনের সহযোগিতা করবেন।
প্রসঙ্গত, গত ১৭ সেপ্টেম্বর ৪ কোটি ডিম আমদানির জন্য চারটি প্রতিষ্ঠানকে প্রথম অনুমোদন দেওয়া হয়। তবে এ জন্য পাঁচটি শর্তও দেওয়া হয়। এগুলো হলো এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা বা বার্ড ফ্লুমুক্ত, রপ্তানিকারক দেশের সরকারের মাধ্যমে নির্ধারিত কিংবা ক্ষমতাপ্রাপ্ত উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের প্রদত্ত বার্ড ফ্লু, ব্যাকটেরিয়ামুক্ত সনদ, নির্ধারিত শুল্ক বা কর পরিশোধ করতে হবে, নিষিদ্ধ পণ্য আমদানি করা যাবে না এবং সরকারের সব বিধিবিধান মেনে চলতে হবে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে খুচরা পর্যায়ে প্রতিটি ডিম ১৩ টাকা থেকে ১৩ টাকা ৭৫ পয়সা দামে বিক্রি হয়েছে। তবে সরকার-নির্ধারিত দাম ১২ টাকা।