অবশেষে গাইবান্ধা সদর থানার ওসিকে বদলি
মফস্বল ডেস্ক : অবশেষে গাইবান্ধা সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহফুজার রহমানকে বদলি করা হয়েছে। তাঁকে গাইবান্ধা সদর থানা থেকে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশে সংযুক্ত করা হয়েছে।
১০ জুন বৃহস্পতিবার পুলিশ সদর দপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক (এআইজি) মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এই আদেশ জারি করেন । ১২ জুন শনিবার রাতে গাইবান্ধা পুলিশ সুপার মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বদলির বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, জনস্বার্থে সদর থানার ওসিকে বদলি করা হয়েছে।
এদিকে হাসান হত্যার প্রতিবাদ মঞ্চ গাইবান্ধার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে- শুধু বদলি সমাধান নয়, তাকে বিচারের আওতায় আনতে হবে। সেইসাথে হাসান হত্যার প্রতিবাদ মঞ্চের ৪ দফা দাবির বাস্তবায়ন করতে হবে। রোববার (১৩ জুন) বেলা ১২টায় জেলা সিপিবি কার্যালয়ে হাসান হত্যার প্রতিবাদ মঞ্চের এক সভায় এ দাবি করা হয়।
মঞ্চের ভারপ্রাপ্ত সমন্বয়ক মিহির ঘোষের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় উপস্থিত ছিলেন- গোলাম মারুফ মনা, ওয়াজিউর রহমান রাফেল, মনজুর আলম মিঠু, এ্যাড. সিরাজুল ইসলাম বাবু, প্রণব চৌধুরী , কাজী আবু রাহেন শফিউল্যাহ খোকন, মৃণাল কান্তি বর্মন, ছাদেকুল ইসলাম প্রমুখ।
গত ৩১ মে গাইবান্ধা সদর থানার ওসি মাহফুজার রহমানের অপসারণসহ চার দফা দাবিতে গাইবান্ধার এসপির কার্যালয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে হাসান হত্যার প্রতিবাদ মঞ্চ। অবস্থান কর্মসূচি থেকে সাত দিনের মধ্যে সদর থানার ওসির অপসারণের আহ্বান জানানো হয়েছিল।
ওই দিন ওসির অপসারণসহ চার দফা দাবি বাস্তবায়নের জন্য পুলিশের মহাপরিদর্শকের (আইজিপি) কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে ওসিকে অপসারণ করা না হলে ১০ জুন অর্ধদিবস হরতাল পালনের আলটিমেটাম দেওয়া হয়েছিল।
আলটিমেটাম অনুযায়ী ওই দিন জেলা শহরে অর্ধদিবস হরতাল পালিত হয়েছে।বাকি দাবিগুলো হলো হাসান হত্যার সঙ্গে জড়িত আসামিদের গ্রেপ্তার, সদর থানার অভিযুক্ত পরিদর্শক (তদন্ত) মজিবুর রহমান ও সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মোশারফ হোসেনকে আইনের আওতায় এনে বিচারের মুখোমুখি করা, বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন এবং গাইবান্ধা জেলায় অবৈধ দাদন ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্য বন্ধ করা।
উল্লেখ্য যে, গাইবান্ধা জেলা শহরের খানকা শরিফ সংলগ্ন নারায়ণপুর এলাকার বহিষ্কৃত জেলা আওয়ামী লীগের উপদপ্তর সম্পাদক দাদন ব্যবসায়ী মাসুদ রানার বাসা থেকে গত ১০ এপ্রিল ব্যবসায়ী হাসান আলীর (৪৫) ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত হাসান আলী শহরের থানাপাড়া এলাকার মৃত হজরত আলীর ছেলে এবং আফজাল সুজ গাইবান্ধা শাখার সাবেক মালিক।লাশ উদ্ধারের পরপরই পুলিশ মাসুদ রানাকে গ্রেপ্তার করে।
এ নিয়ে নিহত ব্যক্তির স্ত্রী বীথি বেগম সদর থানায় মাসুদ রানাসহ তিনজনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। অপর দুজন হলেন শহরের স্টেশন রোডের জুতা ব্যবসায়ী রুমেল হক ও খলিলুর রহমান ওরফে বাবু মিয়া।এই দুই আসামি পলাতক আছেন।
এ ঘটনার পর সদর থানার ওসি মাহফুজার রহমানের অপসারণসহ চার দফা দাবি ঘোষণা করে হাসান হত্যার প্রতিবাদ মঞ্চ। এ নিয়ে আন্দোলন কর্মসূচি পালন অব্যাহত থাকে।তবে মাহফুজার রহমান তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে আসছিলেন।