আ.লীগ ১৬৬, বিএনপি ১৩৭টি আসন পেতে পারে-আবুল বারকাত
স্টাফ রিপোর্টারঃ
আসন্ন নির্বাচনে কোন দলের অবস্থা কেমন হতে পারে, তা জাতীয় কৌতূহলের বিষয়। বিগত কয়েকটি নির্বাচনের তথ্য ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করা হয়েছে। দোদুল্যমান ভোটারদের মন বুঝতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষের সঙ্গেও খোলামেলা আলাপ-আলোচনা করা হয়েছে। যুক্তিভিত্তিক বিশ্লেষণ পদ্ধতির মাধ্যমে আগামী নির্বাচনে দলভিত্তিক সম্ভাব্য ফলাফলে উপনীত হয়েছি।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হলে বিএনপির এককভাবে সরকার গঠনের সম্ভাবনা নেই। এই অর্থনীতিবিদ মনে করেন, আসন্ন সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সর্বোচ্চ ১শ ৬৬টি আসন পেতে পারে। বিএনপি পেতে পারে সর্বোচ্চ ১শ ৩৭টি আসন। ভোটারের মন বুঝে ও আগের চারটি অপেক্ষাকৃত ভালো নির্বাচনের ফলাফল বিশ্লেষণের মাধ্যমে করা গবেষণায় এসব তথ্য উঠে এসেছে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর ইস্কাটনে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সভাপতি অধ্যাপক আবুল বারকাত নিজের এক গবেষণার তথ্য তুলে ধরে বলেন। তবে এই গবেষণার এর সঙ্গে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।
গবেষণায় আগের যে চারটি ‘অপেক্ষাকৃত ভালো’ নির্বাচনের ফলাফলকে বিশ্লেষণ করা হয়েছে, সেগুলো হচ্ছে ১৯৯১, ১৯৯৬-এর জুন, ২০০১ ও ২০০৮ সালের নির্বাচন।
আবুল বারকাত বলেন, ‘আসন্ন নির্বাচনে কোন দলের অবস্থা কেমন হতে পারে, তা জাতীয় কৌতূহলের বিষয়। বিগত কয়েকটি নির্বাচনের তথ্য ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করা হয়েছে। দোদুল্যমান ভোটারদের মন বুঝতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষের সঙ্গেও খোলামেলা আলাপ-আলোচনা করা হয়েছে। যুক্তিভিত্তিক বিশ্লেষণ পদ্ধতির মাধ্যমে আগামী নির্বাচনে দলভিত্তিক সম্ভাব্য ফলাফলে উপনীত হয়েছি।
গবেষণার ফলাফলে দেখা যায়, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মোট ভোটার ১১ কোটি ৯০ লাখ। এর মধ্যে ৭০ শতাংশ ভোটার দলের অনুগত ভোটার। এর মধ্যে ৩০ শতাংশ আওয়ামী লীগের, ৩০ শতাংশ বিএনপির আর ১০ শতাংশ অন্যান্য দলের। আর এর বাইরের ৩০ শতাংশ ভোটার দলীয় অনুগত নন। এই দোদুল্যমান ৩০ শতাংশ ভোটার কাকে ভোট দেবেন, তা পূর্বনির্ধারিত নয়।
গবেষণার ফলাফলে বলা হয়, দেশের ৩০০টি সংসদীয় আসনের মধ্যে ১শ ৫৫টি আসনের ফলাফল মোটামুটি নির্ধারিত। এগুলো দলগুলোর জন্য ‘সম্ভাব্য বিজয় নিশ্চিত’ আসন। এর মধ্যে ৭০টি আসন পাবে আওয়ামী লীগ ও ৭০টি আসন পাবে বিএনপি। বাকি ১৫টি আসন পাবে অন্যান্য দল। তবে এই আসন দিয়ে সরকার গঠন নিরূপণ হবে না। অন্য ১শ ৪৫টি সংসদীয় আসনের ফলাফলের ওপর নির্ভর করতে হবে।
দোদুল্যমান ভোটারদের ভোট দেওয়ার সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে ৫টি উপাদান প্রভাব রাখবে বলে গবেষণার ফলাফলে বলা হয়। এগুলো হচ্ছে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, আইনশৃঙ্খলা ও মানবাধিকার পরিস্থিতি, ২০১৪ ও ২০১৮ জাতীয় নির্বাচন, পদ্মা সেতু ও মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞা।
এর মধ্যে প্রথম তিনটি উপাদানের সুবিধা পাবে বিএনপি। আর পদ্মা সেতুর সুবিধা পুরোটাই পাবে আওয়ামী লীগ। মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞার বিষয়টিতে জাতীয় সংহতির ইস্যু বানাতে পারলে এর সুবিধা আওয়ামী লীগ পেতে পারে।
গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, ৩শ আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ ১শ ৪৮ থেকে ১শ ৬৬টি, বিএনপি ১শ ১৯ থেকে ১শ ৩৭টি এবং অন্যান্য দল ১৫টির মতো আসন পেতে পারে। সম্ভাব্য ফলাফলের ভিত্তিতে আওয়ামী লীগের পক্ষে সরকার গঠনের সম্ভাবনা বেশি। বিএনপির পক্ষে এককভাবে সরকার গঠনের সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। বিএনপির জোটবদ্ধ সরকার গঠনের সম্ভাবনা থাকলেও তা অনেক বেশি শর্তসাপেক্ষ।