ইরান সরকার সবচেয়ে দুর্বল এখন, আঘাত হানার শ্রেষ্ঠ সময়:রেজা শাহের ছেলে
আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
ইরানে ১৯৭৯ সালে ইসলামি বিপ্লবের সময় ক্ষমতাচ্যুত হয় তৎকালীন শাসক পাহলভি পরিবার। সে সময় মিশরের প্রেসিডেন্ট আনোয়ার সাদাত ইরানের ক্ষমতাচুত শাসক মোহাম্মদ রেজা শাহ’কে মিশরে রাজনৈতিক আশ্রয় দিয়েছিলেন এবং মোহাম্মদ রেজা শাহ মিশরে নির্বাসনে মারা যান।
অপর দিকে মোহাম্মদ রেজা শাহ এর ছেলে
রেজা পাহলভি ১৯৭৯ সালে ইসলামিক বিপ্লবের পর দেশ ছেড়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় নেন।
সেই বিপ্লবের পর পেরিয়ে গেছে ৪৫ বছরের বেশি সময়। সম্প্রতি ইরানে ইসরায়েলি হামলার প্রেক্ষাপটে পাহলভি পরিবারের সাবেক যুবরাজ রেজা পাহলভি দাবি করেছেন, ইরানের বর্তমান সরকার খুবই দুর্বল। এখনই আঘাত হানার উপযুক্ত সময়। সূত্র-বিবিসি।
ইরানে পতিত পাহলভি রাজবংশের সর্বশেষ শাসক রেজা শাহ পাহলভির ছেলে রেজা পাহলভি দেশটিতে বর্তমান রেজিমের বিরুদ্ধে একটি বিদ্রোহের আভাস দিয়েছেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রেজা এই পরিকল্পনার আভাস দেওয়ার চেষ্টা করেন।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধের পর ইরানিরা বর্তমান ইসলামিক প্রজাতন্ত্রের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করবেন। এ ক্ষেত্রে পশ্চিমারা নিষেধাজ্ঞা ছাড়াও অন্যান্য উপায়ে সহায়তা করবে। তবে তিনি নির্দিষ্ট করে কিছু বলেননি।
রেজা পাহলভি বলেছেন, ইসলামিক প্রজাতন্ত্রের বর্তমান রেজিমকে ক্ষমতাচ্যুত করলে মধ্যপ্রাচ্য ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনের অনেক সমস্যার সমাধান হবে।
এর মাধ্যমে তিনি ‘ইরানিদের’ বোঝাতে চেয়েছেন যে, এমন একটি ফলাফল তাঁদের স্বার্থেও অনুকূল। এটি কেবল কথার কথা নয়, এটি বোঝাতে তিনি দাবি করেন, ইরানের ক্ষমতাসীনদের ভেতরের কিছু ব্যক্তি তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন।
পাহলভি পরিবারের এই সদস্য বিবিসির লরা কুয়েন্সবার্গকে বলেন, ইরানের সাধারণ মানুষ, যাঁরা সরকারের বিরোধী, তাঁরা ইসরায়েলের হামলায় ‘নতুন করে উজ্জীবিত’ হয়েছেন।
এসব হামলায় ইরানের জ্যেষ্ঠ সামরিক নেতারা নিহত হয়েছেন। তিনি বলেন, ‘চূড়ান্ত সমাধান হলো শাসন পরিবর্তন এবং এখন আমাদের একটি সুযোগ আছে, কারণ এই শাসন তার দুর্বলতম অবস্থায় আছে।
এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চাইলে রেজা পাহলভি যুক্তি দেন, ইসলামিক প্রজাতন্ত্রের নিজস্ব কর্মকাণ্ডই তাঁদের এই অবস্থানে এনেছে। তিনি বিশ্বাস করেন না যে, ইসরায়েলের উদ্দেশ্য বেসামরিক নাগরিক হত্যা করা।
তিনি বিশ্বশক্তিগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, ‘নিষ্ক্রিয় না থেকে স্পষ্টভাবে বোঝাতে যে, শুধু নিষেধাজ্ঞা আরোপের বাইরেও তারা ইরানের জনগণকে গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার লড়াইয়ে সমর্থন দিতে পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত।’
পাহলভি নির্বাসিত জীবন যাপন করছেন এবং তাঁর উদ্দেশ্যকে সমর্থন করার জন্য বিদেশি পক্ষগুলোকে প্রভাবিত করার সক্রিয় চেষ্টা করছেন। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তিনি ইসরায়েলও সফর করেছেন।
পাহলভি এও বলেছেন যে, সাধারণ ইরানিরা ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধে যেতে চায় না। যদি কোনো বিদ্রোহ ঘটে, তবে পাহলভি নিজেকে এমন এক নেতা হিসেবে তুলে ধরতে চান, যিনি ইরানের ক্রান্তিকালীন সময়ে নেতৃত্ব দিতে পারেন।