অনিয়মিত জীবনযাপন ও খাদ্যাভ্যাসের কারণে আমাদের দেহের ওজন বাড়তে থাকে। পরবর্তীতে সেই ওজন নিয়ন্ত্রণে আনতে একপ্রকার হিমশিম খেতে হয়। এছাড়াও ওজন বৃদ্ধির কারণে আমাদের দেহে কঠিন রোগ বাসা বাঁধে। যা মৃত্যু পর্যন্ত ঘটিয়ে থাকে।
একটু সতর্কতাই পারে এই বাড়তি মেদ থেকে আমাদের রক্ষা করতে। খাদ্যাভ্যাসের সামান্য কিছু পরিবর্তন এই ওজন কমাতে সাহায্য করে। বেঁচে থাকার জন্য আমাদের শক্তির দরকার, এই জন্য আমরা খাবার খাই। এমন কিছু খাবার আছে যা আমাদের শক্তি, পুষ্টি সবই দেবে, আবার ওজন নিয়ন্ত্রণেও সাহায্য করবে। চলুন তবে জেনে নেয়া যাক এমন পাঁচটি খাবার সম্পর্কে যা আপনার ওজন কমাতে সহায়তা করবে-
অ্যাপেল সিডার ভিনেগার
বর্তমানে এটি একটি খুবই জনপ্রিয় পানীয়। এটি যেমন সালাদ ড্রেসিং হিসেবে খাওয়া যায়, তেমনি আবার পানির সাথে মিশিয়েও পান করা যায়। সমীক্ষায় দেখা গেছে এই পানীয় ওজন নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে। বলা হয় এটি পানে একটা পেট ভরা অনুভুতি আনে যা প্রতিদিন ২৫০ থেকে ২৭৫ পর্যন্ত ক্যালোরিযুক্ত খাবার খাওয়া থেকে বিরত রাখতে সাহায্য করে। অন্য আরেক গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিদিন ১৫ থেকে ৩০ মিলি ভিনেগার খাওয়া হলে ১২ সপ্তাহে প্রায় ১.২ থেকে ১.৭ কিলোগ্রাম ওজন কমে।
সবুজ শাকসবজি
পালং শাক, পাতাকপি, ব্রোকলি, শশা, বরবটি ইত্যাদি সবুজ শাকসবজিতে ক্যালোরি কম থাকে, সঙ্গে ফাইবারে ভরপুর থাকে যা পেট ভরা রাখে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখতে সহায়তা করে। অনেক ধরনের গবেষণা থেকে জানা যায়, কম ক্যালোরির আঁশযুক্ত খাবারগুলো ভরপেট খেলে সামগ্রিকভাবে মানুষকে অধিক ক্যালোরি খাবার খাওয়া থেকে বিরত রাখে। সবুজ শাকসবজিতে প্রচুর পুষ্টিগুণের পাশাপাশি ভিটামিন, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, মিনারেল ও ক্যালসিয়াম পাওয়া যায় যা শরীরের মেদ ঝরাতে সাহায্য করে।
ডিম
ডিমে অনেক কোলেস্টেরল থাকে বলে অনেকেই এই খাবারটি খেতে ভয় পান। জানেন কি, এটি এমন একটি খাবার যা পরিমাণ মতো খেলে ওজন কমাতে সাহায্য করে। ডিমে আছে প্রচুর পরিমাণ প্রোটিন ও ফ্যাট যা শক্তি দেয় এবং পেট ভরা রাখে। একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে ৩০ জন নারীর যারা বাড়তি ওজন নিয়ে ভুগছিলেন, তারা দাবি করেছেন প্রতিদিন সকালে যদি একটি করে ডিম খান তাহলে তাদের পরবর্তী ৩৬ ঘণ্টা ক্ষুধাবোধ কমায় এবং পরিতৃপ্ত রাখে। আরেকটি গবেষণায় বলা হয়েছে যদি সকালে নাস্তায় ডিম খাওয়া হয় তাহলে সেটি ওজন কমাতে সহায়তা করে।
মাছ
মাছ হচ্ছে এমন একটি ভালো প্রোটিন যা খেলে অনেক লম্বা সময় পর্যন্ত ক্ষুধাবোধ হয় না। এছাড়াও এটিতে প্রোটিনসহ আরও অনেক পুষ্টিগুণ বিদ্যমান। এতে আছে পর্যাপ্ত পরিমাণ আয়োডিন যা থাইরয়েড হরমোনকে ঠিক রাখে এবং শরীরের মেটাবোলিজমকে ঠিক করে। এতে আরও আছে ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড যা শরীরের অতিরিক্ত মেদ ঝরাতে সাহায্য করে।
ডাল ও শস্য জাতীয় খাবার
ডাল ও কিছু শস্য জাতীয় খাবার কিন্তু ওজন কমাতে সহায়ক। এর মধ্যে আছে মুগ, মুসুর ডাল, ছোলা বুট, শিমের বিচি, মটরশুঁটি ইত্যাদি। প্রোটিন সমৃদ্ধ এই শস্যগুলো যেমন পুষ্টিগুণে পরিপূর্ণ তেমনি আছে ফাইবার যা খাবারে আনে তৃপ্তি।