কোভিড-১৯-এর ভ্যাকসিনকে বৈশ্বিক সম্পদ বিবেচনা করে বিশ্বের সব দেশ যাতে এই টিকা সময় মতো এবং একইসঙ্গে পায় তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের পচাত্তরতম অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে তিনি এ আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কারিগরি জ্ঞান ও মেধাসত্ত্ব পেলে এই ভ্যাকসিন বিপুল পরিমাণে উৎপাদনের সক্ষমতা বাংলাদেশের রয়েছে। রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আরও কার্যকরী ভূমিকা গ্রহণেরও অনুরোধ জানান প্রধানমন্ত্রী।
বাংলাদেশকে ২১০০ সালের মধ্যে সমৃদ্ধ ব-দ্বীপে পরিণত করতে কাজ করছি: প্রধানমন্ত্রী
জাতিসংঘে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ১৭তম ভাষণ। এরআগে ১৬ বার সশরীরে উপস্থিত হয়ে বিশ্বশান্তি ও সৌহার্দের ডাক দিয়েছেন তিনি। এবারই ব্যতিক্রম। করোনা মহামারির কারণে কোনো রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান আসেননি নিউইয়র্কে। আগে ধারণ করা ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে দেওয়া বক্তৃায় করোনা পরিস্থিতিকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, কোভিড-১৯ প্রমাণ করেছে আমাদের সকলের ভাগ্য একই সূত্রে গাঁথা। আমরা কেউই সুরক্ষিত নই, যতক্ষণ পর্যন্ত আমরা সকলের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পারছি।’
করোনা মহামারি ঠেকাতে তাঁর সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জীবন ও জীবিকা দুই ক্ষেত্রে সমানভাবে গুরুত্ব দিয়ে কার্যক্রম শুরু করেছিলাম। দেশের ব্যবসা বাণিজ্য, উৎপাদন যাতে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখিন না হয় তার জন্য প্রণোদনার ব্যবস্থা করেছিলাম। এই ভ্যাকসিনকে বৈশ্বিক যেন সম্পদ হিসেবে বিবেচনা করা প্রয়োজন। সকল দেশ যাতে ভ্যাকসিন সময় মতো এবং একই সময়ে পায় তা নিশ্চিত করতে হবে। কারিগরি জ্ঞান, মেধাস্বত্ব প্রদান করা হলে এই ভ্যাকসিন বিপুল পরিমাণ উৎপাদন করার সক্ষমতা বাংলাদেশের রয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের নাগরিক। মিয়ানমারকেই তাদের ফিরিয়ে নিতে হবে। তিন বছরের বেশি সময় অতিবাহিত হলেও মিয়ানমার একজন রোহিঙ্গাকেও ফিরি নেয়নি। এই সমস্যা মিয়ানমারের সৃষ্টি। এর সামাধান তাদেরই করতে হবে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আরো কার্যকর ভূমিকা নেয়ার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।’
প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে জলবায়ু সমস্যা তুলে ধরার পাশাপাশি নারীর ক্ষমতায়ন, শিশুর সুরক্ষা, বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা ও সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। জাতিসংঘে বাংলাদেশের সদস্য লাভের পর ১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধুর দেওয়া ভাষণের পদাঙ্ক অনুসরণ করে সব সময় বাংলায় ভাষণ দিয়ে আসছেন শেখ হাসিনা।