যতই দিন যাচ্ছে ততই ভয়াবহ রূপ ধারণ করছে কোভিড-১৯। যার প্রভাব পড়েছে স্বাস্থ্যখাতের পাশাপাশি বৈশ্বিক অর্থনীতিতেও।
সম্প্রতি পৃথিবীর ২৭টি দেশ ও অঞ্চলে ৩৫ হাজারের বেশি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের ওপর এক জরিপের ফলাফল প্রকাশ করে জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক।
ফেব্রুয়ারিতে পরিচালিত এই জরিপের ফলাফল অনুযায়ী, উল্লেখিত ব্যবসায়ীদের মধ্যে প্রায় এক চতুর্থাংশ (২৪ শতাংশ) উদ্যোক্তার ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেছে।
ফেসবুকের চিফ অপারেটিং অফিসার শেরিল স্যান্ডবার্গ জরিপের ফলাফল প্রকাশ করে বলেন, জরিপে অংশ নেওয়া উদ্যোক্তাদের মাঝে ২৯ শতাংশের ব্যবসা গত বছর করোনার প্রাদুর্ভাবের সময়েই বন্ধ হয়ে যায়। ১৬ শতাংশের ব্যবসা বন্ধ হয় গেল অক্টোবরের মধ্যে। আর শেষ ফেব্রুয়ারি নাগাদ আরও ২৪ শতাংশের ব্যবসা বন্ধ হয়ে যায়। এই ২৪ শতাংশের মধ্যে এমন ব্যবসায়ী বা উদ্যোক্তারা আছেন যাদের ব্যবসা আগেও বন্ধ হয়েছিল কিন্তু নতুন করে আবার শুরু করেছিলেন। এছাড়াও চালু থাকা ব্যবসাগুলোতে গড়ে অন্তত ৩০ শতাংশ কর্মী ছাঁটাই করতে হয়েছে।
তবে এই জরিপের উল্লেখযোগ্য দিক হচ্ছে, ফলাফল অনুযায়ী, পুরুষ উদ্যোক্তাদের তুলনায় ঝুঁকি বেশি নারী উদ্যোক্তাদের। বৈশ্বিকভাবে গড়ে নারী উদ্যোক্তাদের ঝুঁকি পুরুষ উদ্যোক্তাদের তুলনায় ছয় সূচক বেশি। এই সূচকের পার্থক্য ইউরোপ এবং লাতিন আমেরিকার দেশগুলোতে সবথেকে বেশি। এই অঞ্চলের নারী উদ্যোক্তারা পুরুষ উদ্যোক্তাদের তুলনায় অনেক বেশি ঝুঁকিতে আছেন।
পর্তুগাল এবং জার্মানির মতো দেশে নারীদের ঝুঁকি পুরুষ উদ্যোক্তাদের তুলনায় গড়ে ২৮-২৯ সূচক বেশি এবং ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার মতো দেশে সূচক যথাক্রমে ১৪ এবং ১০।
এছাড়াও জরিপে অংশ নেওয়া যেসব ব্যবসায়ীদের কার্যক্রম এখনও সচল রয়েছে তাদের অর্ধেকই জানিয়েছেন যে, করোনার এমন অবস্থা চলতে থাকলে সর্বোচ্চ ছয় মাস তারা ব্যবসা চালাতে পারবেন।
তবে এমন সব ঝুঁকির মধ্যেও আছে সম্ভাবনার খবর। ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তারা অনলাইনে সফলতার মুখ দেখছেন।
শেরিল বলেন, অনেক ব্যবসা-উদ্যোগই অনলাইনে সফলতার মুখ দেখেছে। জরিপে অংশ নেওয়াদের মাঝে অর্ধেকের বেশিরভাগ উদ্যোক্তা বলছেন যে, অনলাইনে এসে তাদের বিক্রি অফলাইনের থেকে অনেকখানি বেড়েছে। এজন্য তারা গ্রাহকদের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য বিভিন্ন ডিজিটাল কমিনিউকেশন টুলস ব্যবহার করেছেন।
ফেসবুক বলছে, পৃথিবীর প্রায় ২০০ মিলিয়ন ব্যবসা-উদ্যোগ ফেসবুক এবং ফেসবুক মালিকানাধীন বিভিন্ন অ্যাপ ও প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করছেন। একইসঙ্গে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের পাশে থাকতে চায় প্ল্যাটফর্মটি।
চলতি বছরে এবং সামনের দিনগুলোতে এই ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগগুলো আরও চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবে বলে অনুমান করছে ফেসবুক।