DoinikAstha Epaper Version
ঢাকারবিবার ১৩ই জুলাই ২০২৫
ঢাকারবিবার ১৩ই জুলাই ২০২৫

আজকের সর্বশেষ সবখবর

কিশোরগঞ্জে ছাত্রলীগ নেতা হাবিবুল্লাহ হাবিবের মৃত্যুতে হত্যা মামলা দায়ের

Doinik Astha
জুন ২০, ২০২২ ৮:০৩ অপরাহ্ণ
Link Copied!

নিজস্ব প্রতিবেদক, কিশোরগঞ্জ :কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার ০৮নং মারিয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের আহবায়ক মারিয়া গ্রামের মৃত ইদ্রিস আলীর ছেলে হাবিবুল্লাহ হাবিব এর করিমগঞ্জ বালিখলা হাওরে নৌকা থেকে পানিতে পড়ে গিয়ে মৃত্যুবরণ করার ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।

২০ জুন (সোমবার) সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট ০৬ নং আদালত,কিশোরগঞ্জে মৃতের মাতা হোসনে আরা বাদী হইয়া উক্ত হত্যা মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় একই গ্রামের মৃত আঃ জব্বারের ছেলে আজিজুল ইসলাম সুমন(৩০), হারুন অর রশিদ এর ছেলে সেলিম (৩১), খুদরত আলীর ছেলে সোহেল রানা (২৩) সহ আজিজুল ইসলাম সুমনের পরিচিত পঞ্চগড় জেলার আরও তিন অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। মামলার বিবরণে জানা যায়,আসামীগণ মৃত হাবিবুল্লাহ হাবিব এর বন্ধু এবং একই গ্রামের বাসিন্দা।

তারা বাদীর ছেলে মৃত হাবিবুল্লাহ হাবিব কে মিঠামইন ভ্রমনের জন্য প্রস্তাব দিলে হাবিবুল্লাহ হাবিব আবহাওয়া খারাপের কথা বলে ঘুরতে যেতে না চাইলে তার বন্ধুরা তাকে বিভিন্নভাবে ফুসলাইয়া মিঠামইন ঘুরতে নিয়ে যায়। কিন্তু বাদীর ছেলে হাবিবুল্লাহ ঐ রাতে বাড়িতে না ফেরায় বাদীর অপর ছেলে মৃতের সহোদর বড় ভাই ইসমাইল হাবিবের বন্ধুদের বাড়িতে গিয়ে তাদেরকে বাড়িতে না পেয়ে তাদের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তাদের মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়।

পরে ইং ১৬/০৬/২২ তারিখ সকাল অনুমান ৫:৩০টার সময় বাদীর ভাই মাসুদ মোবাইলে জানায় যে করিমগঞ্জ থানাধীন বালিখলা হাওরের আলিমচর নামক স্থানে হাবিবুল্লাহ মৃত দেহ পাওয়া গেছে। উক্ত সংবাদ পাওয়ার সাথে সাথে বাদীর দুই ছেলে ইব্রাহিম খলিল ও ইসমাইল সহ কতক সাক্ষী এবং ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় হাবিবুল্লাহর মৃত দেহ উদ্ধার করা হয়। তাছাড়া উক্ত মামলার বিবরণে আরও বলা হয় যে, মৃত হাবিবুল্লাহ ঘটনার কিছুক্ষণ পূর্বে সাক্ষী শাকিলকে মোবাইলে জানায় যে হাবিবুল্লাহর বন্ধুরা তাকে কি যেন খাওয়াইছে তার বুকের ভিতর পুড়ে যাচ্ছে।

আরো পড়ুন :  ঠাকুরগাঁও সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি যুবক নিহত

বাদী হাবিবুল্লাহর মাতা মামলায় আরও বলেন হাবিবুল্লাহর বন্ধুরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে তাহাদের হত্যাকান্ডকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য হাবিবুল্লাহর শরীরে বগলের বাম হাতের বগল পর্যন্ত তরল দাহ্য পদার্থ ঢালিয়া শারীরিক নির্যাতন করিয়া ধাক্কা দিয়া নৌকা হতে পানিতে ফেলে দেয়। তার বন্ধুদের আঘাতের ফলে হাবিবুল্লাহ ভাল সাঁতার জানা স্বত্বেও হয়তোবা অজ্ঞান হয়ে যাওয়ায় হযতোবা মৃত্যুবরণ করেছে।

লাশ তোলার পর হাবিবের শরীরে উল্লেখিত জখমসহ তার গলা,বুক ও মুখসহ বিভিন্ন স্থানে জখম পরিলক্ষিত হয়। মৃত হাবিবুল্লাহর পেটে কোন পানি ছিল না যার ফলে উপস্থিত সাক্ষীসহ সকলেই ধারণা করেছে যে, হাবিবুল্লাহর বন্ধুরাই তাকে হত্যা করে পানিতে ফেলে দিয়েছে। পরবর্তীতে উক্ত নৌকাটির মাঝি করিমগঞ্জ থানাধীন সুতারপাড়া গ্রামের বাবুল মিয়ার ছেলে হরাজ মিয়া জন সম্মুখে জানায় যে, সে নৌকার পিছনে ছিল। তখন অন্ধকার কিছুই দেখা যায় না, হঠাৎ করে পানিতে শব্দ হইলে সে চিৎকার করিলে হাবিবের বন্ধুরা বলে যে একজন (হাবিবুল্লাহ) পড়িয়া গিয়াছে।

তখন নৌকার মাঝি নৌকা ঘুরাইয়া উক্ত ব্যক্তিকে (হাবিবুল্লাহ) উঠানোর চেষ্টা করলে জনৈক এক বন্ধু ইঞ্জিনের হেন্ডেল হাতে নিয়া বলে নৌকা পাড়ে ভিরা, না হয় তোকে শেষ করিয়া দিব। তখন সে নৌকাটি পাড়ে ভিরাইলে হাবিবের বন্ধুরা নৌকায় থাকা ০৩ টি মোটর সাইকেল নিয়া নামিয়া দ্রুত চলিয়া যায়। বাদীর ধারণা উল্লেখিত ঘটনাসমূহ প্রমাণ করে যে, মৃত হাবিবুল্লাহ হাবিব এর বন্ধুরাই পূর্ব পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করেছে।

উক্ত মামলা দায়েরের পর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আশিকুর রহমান করিমগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ কে ০৩ কার্য দিবসের মধ্যে মামলাটি এফআইআর হিসেবে লিপিবদ্ধ করার আদেশ প্রদান করেন। উক্ত আদালতের বেঞ্চ সহকারী মোঃ কাজল মিয়া মামলার সত্যতার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।
[prayer_time]